করোনা শনাক্তের কিটের স্টক কম থাকার পরিণতিই কি বাংলাদেশে করোনায় দ্বিতীয় মৃত্যুর কারণ?

যেমন আশঙ্কা তেমনটাই ঘটছে? করোনা শনাক্তের কিটের স্টক কম থাকার পরিণতিই কি বাংলাদেশে করোনায় দ্বিতীয় মৃত্যুর কারণ? প্রথমে জানা উচিত দ্বিতীয় রোগী হিসেবে যিনি মারা গেছেন বাংলাদেশে, তিনি কোনো বিদেশ ফেরত মানুষ দ্বারা সংক্রমিত হননি।

প্রথম আলো পত্রিকায় হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঘটনা বিবরণ দেয়া হয়েছে। রোগীকে ১৭ মার্চ ইবনে সিনা থেকে ডেল্টা হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ সেখানে তার শ্বাস প্রশ্বাসে সমস্যা পাওয়া যায়। একজন বক্ষব্যাধি চিকিৎসক রোগীকে দেখেন, তিনিই ধারণা রোগী বোধহয় করোনায় আক্রান্ত। হাসপাতাল থেকে এই রোগী সম্পর্কে আইইডিসিআরে যোগাযোগ করা হয়৷ খুবই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো, আইইডিসিআর রোগীর নমুনা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। কেন?

নাম্বার ১- আইইডিসিআর মনে করে, রোগী যেহেতু বিদেশ ফেরত নন বা রোগী প্রবাস ফেরত কারো সংস্পর্শে আসেন নি, তাই তার পরীক্ষা নেয়া হয় নি। নাম্বার ২- কিটের স্বল্পতা!

এই কিটের স্বল্পতা নিয়ে বার বার সবাই কথা বলে যাচ্ছে। কথা বলে যাচ্ছে, ডাক্তারদের সুরক্ষা নিয়ে। এই একজন রোগীর কারণে ডেল্টা হাসপাতালের বেশ কজন স্বাস্থ্যকর্মী এখন কোয়ারেন্টাইনে। ইতালির যে গল্পটা বলেছিলাম, এখানেও ঠিক তাই। ইতালিয়ান প্রথম রোগীকে তারা পরীক্ষা করায় নি এই ভেবে যে সে তো চীন থেকে আসে নি! তারপর সেই রোগী থেকে একটা হাসপাতাল, একটা হাসপাতাল থেকে একটা অঞ্চল, এভাবে সারা দেশে...

অথচ মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা কিটের স্বল্পতা নিয়ে চিন্তিত নন। গতকাল বিবিসিতে তার বক্তব্য শুনলাম, তার কথা এমন ছিল যে, কিট যখন তখন চলে আসতে পারে। এটাকে স্বল্পতা বলতে নারাজ ছিলেন তিনি৷ অথচ, কিটের কারণে প্রথমে পরীক্ষা কর‍তে না চাওয়া এবং ভুল সিক্সথ সেন্সের কারণে রোগীকে জাজ করতে না পারায় এই রোগীর সাথে সাথে ডেল্টার ডাক্তারদেরকেও বিপদে পড়তে হয়েছে। রিডিকিউলাস!

যদি এই কেইস সত্যি হয়, তার মানে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেছে, এটা কত বড় অশনি সংকেত, বুঝতে পারছেন? আর কত! আইইডিসিআর তো এমন হাজারো মানুষকে কিটের অভাবে পরীক্ষা নিতে রিফিউজ করে। কেউ বলবেন, তাদের মধ্যে কারোই করোনা নেই এটার নিশ্চয়তা কী? তাদের কেউ এখন প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন করছে না, তা-ই-বা কিভাবে জানবেন আপনি?


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা