আফরিন আনিস রহমানের মেকআপযুক্ত চেহারা আর নো-মেকআপ চেহারা নিয়ে এখন ট্রল করে, খোঁচা মারা ক্যাপশন দিয়ে উনার সাইবার স্পেস ঝুঁকিপূর্ণ করে দিচ্ছে যারা, তাদের বিরুদ্ধে কি কোন ব্যবস্থা নেবেন না?
এই যে জনৈকা আফরিন আনিস রহমানকে Cyber Security & Crime Division, CTTC, DMP, তাঁরই লাইভে করোনা আর স্যাভলন নিয়ে তাঁর কিছু অসংলগ্ন কথা বলার কারণে কাউন্সেলিং করে তাঁকে দিয়ে পাবলিকলি ভুল স্বীকার আর ক্ষমা চাওয়ার ভিডিও দেয়ালেন, ধরে নিচ্ছি সাইবার স্পেস নিরাপদ রাখার স্বার্থে আপনারা হয়ত ঠিক কাজই করলেন।
কিন্তু উনার মেকআপযুক্ত চেহারা আর নো-মেকআপ চেহারা নিয়ে এখন ট্রল করে, খোঁচা মারা ক্যাপশন দিয়ে উনার সাইবার স্পেস ঝুঁকিপূর্ণ করে দিচ্ছে যারা, তাদের বিরুদ্ধে কি কোন ব্যবস্থা নিবেন না? শুধু তো উনি না, এই মেকআপ বা যেকোন ইস্যুতেই নারীদের হয়রানী করার যে রেওয়াজ ইন্টারনেট শুরুর দিন থেকেই চলে আসছে সেই ব্যাপারে কি কোন ব্যবস্থা নিবেন না? উনি উনার ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন কিন্তু যারা এখন তাঁকে নিয়ে ট্রল/ফান করে মজা লুটে উনার নিজের সামাজিক নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ করে দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কি কোনই ব্যবস্থা নেয়া হবে না?
উনি করোনা নিয়ে ভুল তথ্য দিয়েছেন বলে কাউন্সেলিং করতে হল তো তাঁকে এভাবে? তাহলে করোনা শুরুর দিন থেকেই কোন এক জনৈক হুজুর যে দিনের পর দিন ওয়াজ করে গেলেন "করোনার সাথে উনার কথা হয়", "সত্যিকার মুসলমানদের করোনা হবে না"- কই তাকে তো কোন কাউন্সেলিং এর সম্মুখীন হতে হল না? কেন? উনার মুরীদ অনেক বেশি আর এই মহিলা একা তাই? যেকোন লাইভে, বিশেষ করে মেয়েদের, এবং ছবি, ভিডিওর নীচে যে পরিমাণ কুৎসিত কমেন্ট করা হয়, যেভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়, কই তাদের তো কাউন্সেলিং এর সম্মুখীন হতে দেখলাম না কখনো?
সাইবার স্পেস নিরাপদ রাখা অবশ্যই দরকার। তবে তা মেয়েদের জন্যেই বেশি। মেয়েদেরকেই প্রতিনিয়ত আজেবাজে কথা শুনতে হয় এই সাইবার স্পেসেই। কখনো পোশাকের জন্য, কখনো মেক আপ এর জন্য, কখনো লাইভে আসার জন্য, কখনো বা কোনকিছু না এর জন্যেও। আমাদের সমাজে মেয়েরা স্বাভাবিকভাবেই নিগৃহীত। কোন ভুল আমি করে হয়ত পার পেয়ে যাবো কারণ আমি ছেলে, কিন্তু কোন মেয়ে ভুল করে, সেটা শুধরে নিলেও তার রেহাই নাই। আমরা কিছু পুরুষরা এবং কিছু নারীও আজীবন তাঁদের খোঁচা মেরেই যাব। তাই মেয়েদের ব্যাপারে বিচারের বেলাতেও সংবেদনশীল হতে হয় যেকোন সাধারণ ঘটনার চাইতেও।
এখন আফরিন আনিস রহমান এর বিরুদ্ধে যে করিতকর্মা একশন নেয়া হল, উনি ক্ষমাও চাইলেন এবং এরপরেও যে উনাকে নিয়ে ট্রল করা হচ্ছে, ফান করা হচ্ছে, এ থেকে কি শিক্ষা পাই আমরা? ভুল, দোষ যাই বলেন স্বীকার করে, কাউন্সেলিং/বিচার যাই বলেন তার মুখোমুখি হয়েও রেহাই নাই। কারণ উনি তো ভুল স্বীকার করে নিলেন কিন্তু এরা ভুল স্বীকার করবে? মজা নেয়া ছাড়বে?
আফরিন আনিস রহমান এবং অন্যান্য সকল নারীদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থেই আপনাদের একটা নোটিশ দেয়া উচিত যে যারা এই ধরণের ফান/ট্রল করবে তাদেরও মনিটরিং করে বিচারের আওতায় এনে ভিডিও দেওয়ানো হবে। আফরিন আনিস রহমান এর হাত থেকে সাইবার স্পেস কে তো নিরাপদ করলেন, এবার আফরিন আনিস রহমানদের জন্যেও সাইবার স্পেস নিরাপদ করেন।