গায়কী, কম্পোজিশন, এবং জাকজমকপুর্ন আয়োজন অল্প সময়ে গানটিকে শ্রোতাপ্রিয় করে তোলে। কিন্তু গানটির বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে...

আজ সারাদিন 'সর্বত মঙ্গল রাধে' নামক যে গানটি  ফেসবুক হোমপেইজে ভেসে বেড়াচ্ছে, মাত্রই জানতে পারলাম গানটি চুরি করা হয়েছে। 

অর্থাৎ  মেহের আফরোজ শাওন এবং চঞ্চল চৌধুরীর দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া গানটি কোন লোকজ সঙ্গীত নয়, বরং শেরপুরের ব্যান্ড 'সরলপুর' এর নিজস্ব গান। 

সরলপুর ব্যান্ডের তারিকুল ইসলাম তপন এবং আতিকুর রহমান যৌথভাবে গানটি রচনা করেন এবং গানটি কম্পোজিশন  করা হয় লীলা কীর্তন অনুসারে। 

'আমাদের গান' ইউটিউব চ্যানেলে সর্বত মঙ্গল রাধে গানটির কথা ও সূর ক্রেডিটে লিখে দেয়া ছিল সংগৃহীত!  

সরলপুর ব্যান্ডের সদস্যরা

গতকাল ইউটিউব চ্যানেলে গানটি প্রকাশের পর পরই গায়কী, কম্পোজিশন, এবং জাকজমকপুর্ন আয়োজন অল্প সময়ে গানটিকে শ্রোতাপ্রিয় করে তোলে। প্রকাশের সাথে সাথে গানটি ব্যাপক সাড়া পায় এবং ঘণ্টা খানেকের মাঝে ফেসবুক ইউটিউবে ব্যাপকহারে গানটি ছড়িয়ে পড়ে। 

গানটির মূল শক্তি ছিল কথা, সূর, কম্পোজিশন। ইউটিউব চ্যানেলে বলা হয় এর সবই সংগৃহীত। অথচ গানটি সংগৃহীত ছিল না,  রীতিমত ব্যান্ডের মেম্বার তারিকুল ইসলাম  তপনের নামে গানটির কপিরাইট স্বত্ব করা আছে। 

শেরপুর ট্রিবিউনের তথ্য মতে জানা যায়, এর আগেও এই গানটি চুরির চেষ্টা হয়েছে। সুমি মির্জা নামের একজন গানটি চুরি করে গাইলে সরলপুর ব্যান্ড সেই বিষয়ে মামলা করে যা এখনো চলমান। 

দুঃখজনক হলেও সত্য, অনলাইনে বহুল জনপ্রিয়  গানটি তুলে নেয়ার আগে  IPDC  কিংবা 'আমাদের গান' এর মতো এতো বিশাল আয়োজনের অধিকর্তাগণ ন্যূনতম গ্রাউন্ড রিসার্চ করেননি। গানটি তুলে নেয়ার আগে মূল শিল্পীদের কাছ থেকে অনুমতি পর্যন্ত নেননি বরং মিথ্যাচার করেছেন। গানটি তাদের ভালো লেগেছে, ব্যাস সংগ্রহীত বলে নিজেদের মতো চালিয়ে দিল। ওয়াট অ্যা শেইম!   

শিল্পীর অনুমতি ব্যতীত কোন গান প্রচার মারাত্মক অপরাধ। এতে শিল্পী এবং শিল্পবোধকে অপমান করা হয়। 

ইউটিউব থেকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে নেয়া হয়েছে গানটি

আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মেহের আফরোজ শাওন কিংবা  চঞ্চল চৌধুরী দুজনার কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে গান চুরির সাথে যুক্ত নন। আমি সরাসরি দায় করবো 'আমাদের গান' অনুষ্ঠানটির নির্মাতা, প্রযোজক ও সঙ্গীতপরিচালককে। শিল্পীর সৃষ্টিকে তারা হয়তো ভেবেছিল গনিমতের মাল। হয়তো ভেবেছিল আলোকিত মাধ্যমে গানটি গেয়ে ফেললেই গানটির  দখলদারিত্ব ওরা পেয়ে যাবে। ওরা ভুল ছিল। 

তবে এইটাও সত্য গানটি পরিবেশনের আগে গায়ক গায়িকার অতি অবশ্যই জানা উচিৎ ছিল গানটির মূল রচয়িতা এবং সুরকার  কারা। কারণ পর্দার সম্মুখে দুজনই উপস্থিত থাকবে। দর্শক এবং শ্রোতা ওদেরকেই দেখবে আগে, পিছনের কুশীলবদের নয়।  কিছুটা দায় তাই দুজনার উপরও বর্তায়। 

ইতিমধ্যে সরলপুর তাদের ফেসবুক পেইজ থেকে সর্বত মঙ্গল রাধে গানটি চুরির অভিযোগে লাইভে প্রতিবাদ জানিয়েছে। সরলপুরের প্রতিবাদে সমর্থন রইল।  

সর্বত মঙ্গল রাধে নামের অতি সুন্দর গানটির জন্ম দিয়েছে শেরপুরের ব্যান্ড সরলপুর। গানটি সংগৃহীত নয়। লাউড এন্ড ক্লিয়ার। সৃষ্টি ফিরে আসুক স্রষ্টায়।

*

রাফিউজ্জামান সিফাতের আরও লেখা পড়তে চাইলে ঘুরে আসুন তার ব্লগ থেকে...

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা