এই দরকারি অ্যাপটি সম্পর্কে হয়তো কেউ জানবে না। কে জানে, এটি ব্যবহার করেই হয়তো রক্ষা পেতে পারতো অগণিত নারী। আর এই মেধাবী ছেলেগুলো পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিদেশে পাড়ি জামতে বাধ্য হবে।
তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে চলেছে বিশ্ব। চারপাশে এতো সমস্যা ভিড়ে সমাধান কই? ভয়ঙ্কর সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছেন প্রযুক্তিবিদেরা। মর্ডান প্রবলেম, নিডস মর্ডান সল্যুশন। আমরাই বা পিছিয়ে থাকবো কেন? বর্তমানে দেশের সংকটপূর্ণ ধর্ষণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় এমনই এক উদ্যোগ নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) ৪৬তম ব্যাচের তিন শিক্ষার্থী শাহীন বাশার, মেহেদী হাসান রুম্মান এবং শাহরিয়ার ইসলাম হিমেল। ধর্ষণরোধে তারা ALLY নামের একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন।
অ্যাপটি কিভাবে কাজ করবে?
এই অ্যাপে যে ফিচার থাকবে, সেটা ব্যবহার করে একজন ব্যবহারকারী যদি কোনো অপরিচিত জায়গা দিয়ে যায় অথবা কোনো বিপদের পড়ার আশংকা করলে অ্যাপটির ‘ড্যানজার মুড’ অন করে রাখতে হবে। পরবর্তীতে কোন প্রকার ‘শেকিং’ কিংবা হেল্প সাউন্ড শুনলে অ্যাপটি থেকে অটোমেটিক্যালি তার বিশ্বস্ত নাম্বারে কারেন্ট লোকেশনসহ কল এবং ম্যাসেজ চলে যাবে। এছাড়া ব্যবহারকারীর মোবাইল থেকে অটোমেটিক্যালি লোকেশন শেয়ার হবে, যা তার বিশ্বস্ত ব্যাক্তি অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি দেখে ভিক্টিমের অবস্থান জানতে পারবে। এছাড়া গোপনে রেকর্ড করা, ছবি তোলার অপশন রয়েছে এটিতে। এই অ্যাপসের মাধ্যমে ব্যবহারকারী কাছের পুলিশ অথবা র্যাবের সঙ্গে কানেক্ট হতে পারবে। এছাড়া পুলিশ ও র্যাবের মোবাইল নাম্বার ও লোকেশন জানতে পারবে। এই অ্যাপসটি নারীদের ধর্ষণ রোধে কাজ করবে। এছাড়াও হ্যারেজম্যান্ট, ছিনতাই প্রতিরোধসহ যে কোন বিপজ্জনক মুহূর্তে সুরক্ষা দিতে কাজ করবে। এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ এ কল দেয়া ও অ্যাম্বুলেন্স এবং ব্লাড ডোনার খুঁজতে পারবে এই অ্যাপসটি।
গত ২৬ জানুয়ারি, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত সফটওয়্যার প্রদর্শনী প্রতিযোগিতায় এ অ্যাপটি প্রদর্শন করা হয়। ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আইআইটি অ্যাড্রয়েট’ দলের তৈরি এ অ্যাপটি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ থেকে অ্যাপটি গুগলের প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে।
আমাদের হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন, সাথে ইন্টারনেট কানেকশনও চলে এসেছে। তাই উচিত হবে সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে এই অ্যাপটিতে বিনিয়োগ করা। টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলোও চাইলে এগিয়ে আসতে পারে। যেহেতু নারীদের জন্য তারা বিভিন্ন অফার কিংবা প্যাকেজ তৈরি করেই থাকে, সাথে এই অ্যাপটি সংযোগ করে দিলে নারীদের নিরাপত্তায় সাহায্য হয়। তবে এ আশায় গুড়ে বালি। উৎসাহ কিংবা বিনিয়োগ তো দূর, এই দরকারি অ্যাপটি সম্পর্কে কেউ জানবে না। কে জানে, এটি ব্যবহার করেই রক্ষা পেতে পারতো অগণিত নারী। আর এই মেধাবী ছেলেগুলো পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বিদেশে পাড়ি জামতে বাধ্য হবে। হয়তো...