ইতিহাস গড়া হলো না প্যারিসের, শিরোপা গেল মিউনিখেই!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরেও শেষের গল্পটা শুধুই বায়ার্নের উল্লাসে ঘেরা, নেইমারের কান্না কিংবা মারিয়ার দীর্ঘশ্বাসের কোন জায়গা নেই সেখানে। কারন ইতিহাস বিজয়ীদেরই মনে রাখে কেবল...
রূপকথা লেখা হলো না প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেও হলো না শিরোপার স্বাদ পাওয়া। নেইমার-ডি মারিয়াদের ধনুকভাঙা পণ ব্যর্থ হলো কোম্যানের হেড আর ম্যানুয়েল নয়্যার নামের প্রাচীরের সামনে। দাঁতে দাঁত চেপে টিকে থেকেও কেইলর নাভাস দিনশেষে ট্র্যাজিক হিরো- কারণ লিসবনের এই রাতে ভাগ্যদেবী যে সবটুকু আনন্দের উপলক্ষ্য বায়ার্ন মিউনিখের জন্য তুলে রেখেছিলেন! দুর্দান্ত ফুটবলশৈলী উপহার দিয়ে যে দলটা ফাইনালে উঠেছে, তাদের খালি হাতে ফিরতে হবে- এটা যেন ঘটতেই পারতো না!
কয়েকটা মুহূর্ত বাদ দিলে সেয়ানে সেয়ানে লড়েছে দুই দল। নকআউট রাউন্ডে বার্সেলোনাকে যেভাবে উড়িয়ে দিয়ে এসেছিল বায়ার্ন, তাতে লাল জার্সিধারীদের সামনে পিএসজি পাত্তা পাবে বলেও মনে হয়নি অনেকের। অথচ নব্বই মিনিট ধরে সমানতালে লড়ে গেল দলটা। ম্যানুয়েল নয়ার চীনের প্রাচীর হয়ে না দাঁড়ালে কি হতো বলা মুশকিল, হয়তো আজ রাতে মিউনিখের বদলে আলোকসজ্জায় সেজে উঠতো ফ্রান্সের রাজধানী, বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে উঠতো শহরটা।
পিএসজি মার খেয়ে গেছে অভিজ্ঞতার জায়গায়, বড় ম্যাচের চাপ পুরোপুরি নিতে পারেনি তারা। নেইমার-এমবাপ্পেরা চেষ্টার কমতি রাখেননি, নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন ডি মারিয়া-থিয়াগো সিলভারাও। গোল হজমের আগে পর্যন্ত দারুণ সপ্রভিত ছিলেন কেইলর নাভাসও। কিন্ত ওই যে, হুটহাট খেই হারিয়ে ফেলা, সেইসঙ্গে ম্যাচের নিয়ন্ত্রনও- মুহূর্তের অসাবধানতায় জোশুয়া কিমিচের সেরকমই একটা উড়ন্ত পাস খুঁজে নিলো কোম্যানের মাথাটা, জোরালো হেডে বল জড়ালো জালে, ম্যাচের বয়স তখন ৫৯ মিনিট!
গোল হজমের পরে খানিকটা যেন দিশাহারা পিএসজি, বায়ার্নের আক্রমণের ঢেউ তখন আছড়ে পড়ছে তাদের ডিবক্সে। এমন আক্রমণ এসেছিল প্রথমার্ধেও, লেভানডস্কি একাই তটস্থ করে রেখেছিলেন পিএসজির ডিফেন্ডারদের। তখন গোলমুখ খোলেনি, ঊনষাট মিনিটের পরেও আর খুললো না। নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে পিএসজিও গোল শোধে মরিয়া হয়েছে, বল নিয়ে ওপরে উঠেছে তারা, কিন্ত মাঝমাঠের দখলটা ছিল না তাদের হাতে, সেটাই বারবার ভুগিয়েছে দলটাকে।
অথচ প্রথমার্ধের খেলা শেষে বলা মুশকিল ছিল, শিরোপা কার ঘরে যাচ্ছে। অভিজ্ঞতা-অর্জনে ঋদ্ধ বায়ার্নকে সমানে টেক্কা দিয়েছে প্যারিসের দলটা, হাতছাড়া করেছে সুযোগও। তবুও শেষের গল্পটা শুধুই বায়ার্নের উল্লাসে ঘেরা, নেইমারের কান্না কিংবা মারিয়ার দীর্ঘশ্বাসের কোন জায়গা নেই সেখানে। ইতিহাস বিজয়ীদেরই মনে রাখে কেবল। আর ইতিহাসে লেখা থাকবে, ২০২০ সালের ২৪শে আগস্ট রাতে নিজেদের ইতিহাসের ষষ্ঠ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপাটা জিতেছিল বায়ার্ন...