তার শিক্ষক ভাবতেন তিনি গোল্লায় যাচ্ছেন। অথচ কে জানতো সেই গোল্লায় যাওয়া ছেলেটাই একদিন পৃথিবী বদলে দেবে।

হার্ভার্ডে পড়ার সময় তার বয়স ছিলো মাত্র ২০। যেসব কোর্স নিয়েছিলেন তার একটাতেও হাজিরা দেননি। এর পরিবর্তে তার যে ক্লাস ভালো লাগত সেখানে বসে যেতেন। ফটোগ্রাফিক মেমোরি দুর্দান্ত হওয়ায় একবার দেখলেই মনে রাখতে পারতেন সব। তাই চূড়ান্ত পরীক্ষায় তাকে ঠেকায় কে? ফলে ঠিকমত ক্লাস না করেও উতরে যেতেন তিনি।    

হার্ভার্ডে পড়ার সময়েই ‘প্যানকেক সর্টিং’ নামের দীর্ঘদিনের এক গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে ফেললেন। তার অধ্যাপক যখন ঐ সমাধানটি একাডেমিক পেপারে প্রকাশের কথা বলেন, তখন সেই কথায় সায় না দিয়ে তার ব্যাক্তিগত আগ্রহের দিকে ঝুঁকে পড়েন। পরবর্তীতে যেটা মাইক্রোসফট নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত লাভ করে। 

হার্ভার্ডের সাবেক অধ্যাপক ক্রিস্টোস পাপাডিমিত্র তাকে ডেকে যখন বলেছিলেন- তার সমাধান করা ঐ গানিতিক সমস্যাটা গণিতের সাময়িকীতে প্রকাশের জন্য গ্রহণ করা হয়েছে। তখন এতে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখা যায়নি। সে নিউ মেক্সিকোর আলবুকার্কে মাইক্রোপ্রসেসরের মতো যন্ত্রের জন্য কোড লিখতে ছোট্ট একটা কোম্পানি চালাতে আগ্রহী। এ রকম মেধাবী একজন ছেলে গোল্লায় যাচ্ছে বলে ভেবেছিলেন তার শিক্ষক। কে জানতো সেই গোল্লায় যাওয়া ছেলেটাই একদিন পৃথিবী বদলে দেবে।

১৯৯০ সাল পর্যন্ত যখন তার ব্যবসা একদম তুঙ্গে তখনো তিনি কোম্পানির সব লোক নিয়ে উড়োজাহাজের ইকোনমি ক্লাসে উঠেছেন। কোম্পানির রীতি ছিল সব কর্মীকে ইকোনমি ক্লাসে যেতে হবে। নিজেও তা মেনে চলতেন। বিশ্বের সেরা ধনী হয়েও সাদামাটা জীবনযাপনে কখনো কোনো অস্বস্তি দেখা যায়নি তার মধ্যে। এমনকি খাবারের পর নিজের প্লেট নিজেই ধুয়ে ফেলেন তিনি। অন্যরা সাহায্য করতে চাইলেও নিজের কাজ নিজে করতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।  

পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম সেরা প্রভাবশালী এই ব্যক্তিত্ব, উদ্যোক্তা এবং প্রযুক্তিবিদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৫ সালের ২৮ অক্টোবর আমেরিকার সিয়াটেলে। পুরো নাম উইলিয়াম হেনরি বিল গেটস। বিল গেটস নামেই দুনিয়াজুড়ে সুপরিচিত তিনি।

ছেলেবেলা থেকেই প্রযুক্তিভিত্তিক যেকোনো কিছুর প্রতি গেটস সাহেবের অসীম আগ্রহ ছিলো। এ আগ্রহ থেকেই শৈশবেই কম্পিউটিং সিস্টেমের প্রেমে পড়ে যান তিনি। খুব আগ্রহ নিয়ে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখতেন। লেকসাইড নামের ভালো একটি স্কুলে ভর্তি হওয়ায় এ সুযোগটা তৈরি করতে পেরেছিলেন। তার সমসাময়িক ছাত্রছাত্রীরা যখন পরীক্ষায় বেশি পেছনে দৌঁড়াতো, তখন তিনি কম্পিউটারের ভাষা বোঝার জন্য ধ্যানমগ্ন থাকতেন।   

এরই সূত্র ধরে, ১৯৭০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে বন্ধু পল অ্যালেনের সাথে রাস্তার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য একটা আধুনিক সফটওয়্যার আবিস্কার করে ফেললেন। সেটা আবার ২০ হাজার ডলারে বিক্রীও করে দিলেন। মাত্র ১৫ বছর বয়স। কমিক বই পড়ার বয়সে উদ্ভাবণ নিয়ে ব্যস্ত এক কিশোর। ভাবা যায়? 

সেই বন্ধু অ্যালেনের সাথে মিলেই এমআইটিএস এর এল্টার কম্পিউটার সিস্টেমের জন্য সফটওয়্যার তৈরি করা শুরু করলেন। ১৯৭৫ সালে হার্ভাডের ছোট্ট একটা রুমে বিল গেটস ও পল অ্যালেনের যৌথ অংশিদারিত্বে জন্ম নিলো মাইক্রো কম্পিউটার ও সফটওয়্যারের প্রতিষ্ঠান ‘মাইক্রোসফট’। যে প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই পরবর্তীতে বদলে গেলো আধুনিক কম্পিউটারের ইতিহাস।

অথচ গেটসের বাবা চাইতেন ছেলে আইনজীবি হোক। আর ছেলের জগতজুড়ে তখন নতুন উদ্ভাবনের হাতছানি। সেই ছেলে যদি নিজের পথে না হেঁটে বাবার পথে হাঁটতেন তবে কী হতো? থ্রি ইডিওটসে যেমন বলা হয়েছিলো- লতা মুঙ্গেশকরকে তারা বাবা যদি ক্রিকেটার বানাতেন আর শচীন টেন্ডুলকার যদি গান গাইতেন তবে কেমন হতো? আফসোস! আমাদের অভিভাবকেরা যদি ব্যপারটা বোঝার চেষ্টা করতেন।   

কিশোর গেটস শুধুমাত্র মেধার জোরেই সুযোগ পেয়েছিলেন হার্ভাডের মতো পৃথিবী বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু তথাকথিত শিক্ষাব্যবস্থায় মন ছিলো না এই ডানপিটে ছেলের। তিনি মনে করতেন এর চাইতে বেশি কিছু করবার সুযোগ রয়েছে তার। তাই সময় নষ্ট করে নাম্বারের পেছনে না ছুটে, মাঝপথেই ছেড়ে দিলেন লেখাপড়া। ফলে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করা হলো না তার। যাকে এখনকার কুল ভাষায় ‘ড্রপ আউট’ বলা হয়। আমাদের মাঝে লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে নিজেকে ড্রপ আউট পরিচয় করিয়ে দেবার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায় ইদানিং। এতে আমরা খুব গর্ববোধ করি। উদাহরণ টেনে বলি, বিল গেটসও তো ড্রপ আউট। আরে আই, কোথাকার ড্রপ আউট সে? ভুরুঙ্গামারী উচ্চবিদ্যালয়ের? না। হার্ভাড এর। আগে সে পর্যন্ত পৌঁছানো তো দরকার। তাই না?

তবে শুরুতেই গেটসের মাইক্রোসফট যে সব জয় করে নিয়েছে তা কিন্তু নয়। এক চেস্টাতেই সব সাফল্য ধরা দেয়নি তার কাছে। লেগেছে সময় ও অধ্যাবসায়। সেসময়ে এল্টার কম্পিউটারের ব্যবহারকারীদের মধ্যে থেকে মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ সার্ভিসের বিনিময়ে অর্থ প্রদান করতো। বেশিরভাগ মানুষের ধারণাই ছিলো সফটওয়্যার হচ্ছে ফ্রীতে ব্যবহার করার জিনিস।  

কম্পিউটারের সাথে ফ্রীতে পাওয়া মাইক্রোসফটের অপারেটিং সিস্টেম থেকে পাইরেটেডেট কপি তৈরি হতো সেসময়। গেটস চিন্তা করলেন এভাবে চুরি হতে থাকলে মাইক্রোসফট কিংবা কোনো সফটওয়্যারেরই ভবিষ্যৎ থাকবে না।  তিনি ১৯৭৬ সালে কম্পিউটার কৌতুহলীদের উদ্দ্যেশ্যে একটা খোলা বার্তা দিলেন। সে বার্তায় তিনি বললেন, ‘বিনামূল্যে কিংবা পাইরেটেড কপির ব্যবহার ভালো সফটওয়্যার তৈরিতে নিরুৎসাহিত করে। এতে ডেভেলপাররা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তাদের সময় অপচয় হয়। ফলে নতুন সফটওয়্যার নির্মাণে তাদের আগ্রহ থাকে না।’ এই বার্তায় খুব একটা লাভ হলো না। তবে গেটস তার নীতিতে অটল রইলেন। 

যাদেরকে সফটওয়্যার সাপোর্ট দিতেন বিল গেটস সেই এমআইটিএস প্রধান এড রবার্টসের সাথে সুসম্পর্ক ছিলো না গেটসের। ব্যবসায়িক দ্বন্দটা প্রকাশ্যে চলে এলো যখন এমআইটিএস বিক্রী করে দেয়া হলো অন্য কোম্পানির কাছে। আইনি লড়াই করে বিল গেটস তার মাইক্রোসফটের স্বত্ব রক্ষা করলেন।

১৯৭৯ সালে মাত্র ২৫ জন কর্মচারী নিয়ে নতুন উদ্যোমে যাত্রা শুরু করলো মাইক্রোসফট। ৮০ দশকের শুরুতে যখন প্রযুক্তিতে উন্নয়নের নোতুন ছোঁয়া লাগলো তখনই যেন মোক্ষম সময় ছিলো মাইক্রোসফট বিকশিত হবার। কেননা সবাই তখন হার্ডওয়্যার বা ডিভাইসের আপডেট নিয়েই চিন্তা করতো। বিল গেটস চিন্তা করতেন কিভাবে সে আধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যাবহারকারীদের কাছে সহজবোধ্য করার জন্য সফটওয়্যার বানানো যায়।

১৯৮০ সালে আইবিএম তাদের কম্পিউটার পরিচালনার অন্য অপারেটিং সিস্টেম খুঁজছিলো। চেষ্টা সফল হয় গেটসের। মাইক্রোসফট সুযোগ পায় আইবিএমের জন্য অপারেটিং সিস্টেম সাপ্লাই করার। ৫০ হাজার ডলারও আয় হয় এই কাজ থেকে। আইবিএম এই অপারেটিং সিস্টেমের স্বত্ব কিনতে চাইলে বিল গেটস রাজি হলেন না। উল্টো আইবিএমের কাছে বিক্রী করার প্রতি কপির লাইসেন্স ফী দাবী করলেন। ফলে মাইক্রোসফট তাদের সফটওয়্যারের লাইসেন্স পায়। যার নাম দেয়া হয় এমএস-ডস।

এই ব্যবাসায়িক পরিবর্তনের ফলে মাইক্রোসফট বিপুল পরিমানে মুনাফা অর্জন করে। শুধুমাত্র সফটওয়্যারের লাইসেন্স পাবার পরেই মাইক্রোসফটের আয় আড়াই মিলিয়ন থেকে এক লাফে ১৬ মিলিয়নে পৌঁছে যায়। এটা ১৯৮১ সালের কথা। মাত্র দুই বছরে কর্মীসংখ্যা ২৫ থেকে ১২৮ এ উন্নীত হয়। শুধুমাত্র একটা সঠিক সিদ্ধান্ত, একটা উপযুক্ত পদক্ষেপ বদলে দেয় ইতিহাস।

১৯৮১ সালে মাইক্রোসফট কোলাবরেশনে যায় আরেক বিখ্যাত প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান  অ্যাপেলের সাথে। অ্যাপেল তাদের আমরন্ত্রণ জানায় ম্যাকিনটোশের জন্য সফটওয়্যার সাপোর্ট দেবার জন্য। এবং এই উদ্যোগের মাধ্যমেই মাইক্রোসফট চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেমের আইডিয়া ইমপ্লিমেন্ট করে। এটাই একটা দারুণ সুযোগ ছিলো এমএস-ডস দিয়ে মাইক্রোসফটের আধিপত্য বিস্তার করার।

সেই সুযোগটাই নিয়েছিলেন বিল গেটস। তিনি এমএস-ডস ভিত্তিক একটা অপারেটিং সিস্টেমের ঘোষনা দেন, যেখানে ডসভিত্তিক সফটওয়্যারগুলো চলবে বলে আশ্বাস দেন। অথচ এমন কোনো অপারেটিং সিস্টেম তখনো প্রক্রিয়াধীন ছিলো না। সম্পূর্ণ একটা ব্লাফের ওপর ভিত্তি করে বাজারের ৩০ শতাংশ কম্পিউটার এমএস-ডসের অধীনে চলে যায়। ঘোষনার দুই বছর পর ১৯৮৫ সালে মাইক্রোসফট নিয়ে আসে প্রথম চিত্রভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ। এদিকে উইন্ডোজের উদ্দীপনায় ম্যাকিনটোশের ভিসি কপ্স নিয়ে ডেভেলপারদের আগ্রহ কমে যায়। যেহেতু কেউ অপারেটিং সিস্টেম পরিবর্তন করছিলো না। তাই তুলনামূলকভাবে ডেভেলপারদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় উইন্ডোজ। কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেমে উইন্ডোজ হয়ে ওঠে অপ্রতিরোধ্য। আর এভাবেই বাজিমাত করে দেন বিল গেটস।

তারপরের বছর মাইক্রোসফট প্রথম শেয়ার মার্কেটে প্রবেশ করে। ৪৫% শেয়ার ধরে রেখে ১৯৮৬ সালে মাইক্রোসফট প্রতিটি শেয়ার বিক্রী করে ২১ ডলারে। আর তাতেই মাত্র ৩১ বছর বয়সে বিলিয়নিয়র বনে যান বিল গেটস। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ২০ হাজার ডলার দিয়ে শুরু, ৩১ বছর বয়সে বিলিয়নিয়র। হ্যাটস অফ দ্য গ্রেট বিল গেটস।   

প্রতিটা সফল পুরুষের পেছনে একজন মায়াবতী থাকে। ১৯৯৪ সালে বিল গেটস তার মায়াবতীর দেখা পান। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মাইক্রোসফটের তৎকালীন জেনারেল ম্যানেজার মেলিন্ডা অ্যান এর সাথে। স্ত্রীর প্রভাবেই বিল গেটস আস্তে আস্তে দাতব্য কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে থাকেন। এদিকে ১৯৯৯ সালে মাইক্রোসফটের শেয়ারের মূল্য ৮ গুন বেড়ে যায়। ফলে বিল গেটস হয়ে যান ১০১ ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক। 

২০০০ সালে ২৮ বিলিয়ন ডলারের ফান্ডিং দিয়ে স্ত্রী মেলিন্ডাকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। এই ফাউন্ডেশন তৈরি করবার পর, বিল গেটসের কাজের প্রতি সিরিয়াসনেস বেড়ে যায়। তিনি তার বন্ধু স্টিভ বেলমারকে মাইক্রোসফটের সিইও নিয়োগ করেন। বিল গেটস তার পুরো ক্যারিয়ারে স্ট্র্যাটেজি বজায় রেখে, নিজের ভুল শুধরে নিয়েছেন সময়মত। এটা তার বিজনেস গ্রাফ দেখলেই অনুধাবন করা যায়।

গেটস দম্পতি

 

বর্তমানে মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের এন্ডোমেন্ট ৪৬ মিলিয়ন ডলারের ওপরে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রাইভেট ফাউন্ডেশন এটা। দ্য ক্রোনিকেল অব ফিলানথ্রফি পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে তাদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক উদার মানবহিতৈষীর খেতাব দেওয়া হয়। গেটস দম্পতির ব্যক্তিগত সব উপার্জন এই ফাউন্ডেশনেই ব্যয় করা হয়ে থাকে। তাদের মতে, শুধুমাত্র সন্তানদের কথা চিন্তা করে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ রেখে যাওয়ার কোনো মানে হয় না। গেটস দম্পতি তাদের অর্থ বৈশ্বিক স্বাস্থ সমস্যা এবং দারিদ্রতা দূর করতে ব্যবহার করতে চান। 

তবে এখানেই শেষ নয়, এখন থেকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও উন্নয়ন, শিক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চান বিল গেটস। তাই মাইক্রোসফটের পরিচালনা পর্ষদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি। মাইক্রোসফটের পাশাপাশি ওয়ারেন বাফেটের বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের পরিচালনা পর্ষদ থেকেও সরে দাঁড়াচ্ছেন।  

একটা মানুষ তার সারা জীবনের সঞ্চয় বিলিয়ে দিচ্ছেন। নিজের ক্যারিয়ারটাও ছেড়ে দিয়েছেন আর্ত-মানবতার সেবায়। অথচ আমরা তাকে শুধু চিনি বিশ্বের সেরা ধনী হিসেবে। আমাদের দেশের ধনীরা আসলে এভাবেই চিনতে শিখিয়েছেন আমাদের। শুধুমাত্র শিশুদের টিকাদানের জন্যই তারা দান করেছেন এক হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। কমপক্ষে ৮০ লাখ শিশুর জীবন বাঁচিয়েছে তাদের অনুদান। সম্প্রতি, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গেটস দম্পতি দান করেছেন ১০০ মিলিয়িন ডলার। বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ ৮০০ কোটি টাকারও বেশী।  

বিশ্ব স্বাস্থ্য খাতের জন্য গেটস ফাউন্ডেশন যে পরিমাণ অর্থ দান করেছে তার হিসেব এই এক আর্টিকেলে করা সম্ভব না। সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপারটা হচ্ছে, এই যে বিল গেটস তার সমস্ত সম্পদ এভাবে বিলিয়ে দিচ্ছেন এটা নিয়ে তার সন্তানেরা মোটেও চিন্তিত নন। উল্টো মা বাবার দাতব্য কাজে গর্ববোধ করেন তারা। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে এই জীবন্ত কিংবদন্তি কীর্তি দেখে আসলেই অভিভূত হই। মনের ভেতর থেকেই শ্রদ্ধাটা চলে আসে। বিল গেটসের মতো মানুষেরা জন্মান বলেই পৃথিবীর সৌন্দর্য বর্ধিত হয়। আর এই অকৃতজ্ঞ আমরা কীর্তিমানদের কৃতকর্ম সম্পর্কে অবগত না হয়েই সেটা উপভোগ করতে থাকি। 


ট্যাগঃ

শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা