প্রধানমন্ত্রীর বেতনে সংসার চলে না, তাই ইস্তফা দিতে চাইছেন বরিস জনসন!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
বরিস জনসনের যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে, তাহলে তিনি বাংলাদেশে এসে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গাড়িচালক হিসেবে যোগ দিতে পারেন। কারন আমাদের দেশে মালেক ড্রাইভারের মতো লোকজনের পকেটেও কয়েকশো কোটি টাকা থাকে!
এই পৃথিবীতে অনেক কিছুই কমে। আদনান সামির ওজন কমে, রশিদ খানের বয়স কমে, অনীল আম্বানির টাকাও কমে। আবার ওদিকে মাঝেমধ্যেই পেঁয়াজের ঝাঝ বাড়ে, বেগুনের দর বাড়ে, চালের দেমাক বাড়ে। কমা-বাড়ার খেলা চলতেই থাকে। এই পৃথিবীতে একটি জিনিস ছাড়া কোনোকিছু আসলে ধ্রুবও না। সবকিছুই বাড়ে-কমে। যে জিনিসটা কোনোদিনই কমে না, সেটির নাম- চাহিদা।
আপনি খেয়াল করে দেখবেন, আপনার যতই টাকা থাকুক বা না থাকুক, চাহিদা সেগুলোকে তোয়াক্কা করে না একটুও। সে তার মতই আকাশপানে ছুটতে থাকে। আকাশপানে ছুটতে থাকা এই চাহিদাকে সামলাতে লাগে প্রচুর টাকা। কাড়ি কাড়ি টাকা। এই টাকার জন্যেই আমাদের যাপিত কাজকর্ম, গাধার মত ছুটে চলা। আপনি বলতেই পারেন, টাকার সমস্যা আমাদের মত গরীবদের। বড়লোকদের চাহিদাও আছে, টাকাও আছে, তাদের কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু, এ কথাটাও ভুল। বড়লোকদেরও আছে টাকার সমস্যা। সেটাই বলছি এখন। শুনতে চাইলে নড়েচড়ে বসতে পারেন।
বরিস জনসন'কে আপনি নিশ্চয়ই চেনেন। চেনারই কথা। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী'কে না চেনার কারণও নেই। সেই ভদ্রলোকও সম্প্রতি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়া বেতনে তার নাকি পোষাচ্ছে না। আগ্রহ পেয়ে একটু জানার চেষ্টা করলাম, তার বেতন কত। যতটুকু জানা গেলো, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বছরে তিনি পান এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার চারশো দুই পাউন্ড! বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় এক কোটি পয়ষট্টি হাজার টাকার মতন! তবে এই টাকায় নাকি তার কুলোচ্ছে না, এ কথা তিনি নাকি তার পরিচিতজনদের জানিয়েওছেন। প্রধানমন্ত্রীর চাকরীও তিনি ছাড়তে রাজি, এটাও বলেছেন! কারন তিনি নাকি আগে যে পেশায় ছিলেন, সেখানে তিনি নাকি এর চেয়ে ঢের বেশি টাকা পেতেন।
এবার একটি প্রশ্ন আসতে পারে, আগে তাহলে তিনি কোন পেশায় ছিলেন? আগে যেটাই ওনার পেশা হোক না কেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব শুরু করার আগে পত্রিকায় লিখেই মাসে তেইশ হাজার পাউন্ড ইনকাম করতেন তিনি! এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা করেও তিনি আয় করতেন অনেক টাকা। সে হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এসে লোকটি যে বেশ গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন, তা বোঝা যাচ্ছে৷ ঐ যে বললাম, চাহিদার ক্রমশ সর্বগ্রাসী ক্ষুধা, সে ক্ষুধার যোগান দিতে পারছেন না স্বয়ং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীও!
ভাবলাম, লোকটার জন্যে কিছু করা যায় কী না। মাথায় এলো, টাকাপয়সার সমস্যা দূর করার জন্যে একটি কাজ উনি চাইলেই করতে পারেন। চলে আসতে পারেন বাংলাদেশে। এখানে এসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ড্রাইভার আব্দুল মালেকের সাথে যোগাযোগ করে জেনে নিতে পারেন, কীভাবে অর্থের সমস্যা দূর করা যেতে পারে। আশা করা যায়, ভালো পরামর্শই তিনি পাবেন। তাছাড়া এদেশীয় মন্ত্রী, আমলাদের সাথে একবেলা বৈঠক করলেই তিনি জেনে যাবেন টাকা ইনকামের সুলুক-সন্ধান। একটি রাষ্ট্রীয় সফর তার অবশ্যই দেয়া উচিত বাংলাদেশে। আখেরে তারই লাভ হবে।
বরিস জনসনের এই ঘটনা আমাদের মত ছাপোষা মধ্যবিত্ত মানুষের জন্যে বেশ ভালো একটা ডিফেন্সও। ঘরে যখনই কেউ কথা শোনাবে,
কী ইনকাম করো? কোনো চাহিদাই তো পূরন হচ্ছে না...
তখন মৃদু হেসে বললেই হবে-
বরিস জনসনই যেখানে পারছে না, সেখানে আমি কোন ছাড়?
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন