ব্রাহ্মণবাড়িয়া এমনিতেই বিশ্বখ্যাত এক জায়গা। সেই এলাকায় একেকদিন একেক রকমের পিলে চমকে ওঠা ঘটনা ঘটে, ফেসবুকে শুরু হয় ট্রল। তবে সেই জেলারই এক তরুণ সম্প্রতি নাম লিখিয়েছেন গিনেজবুকে...

আজকে যে এলাকার একজন মানুষের গল্প বলবো, সেই এলাকা আমাদের খুব পরিচিত। 'ব্রাহ্মণবাড়িয়া'র একজন মানুষের গল্প বলবো। এলাকার নাম শুনেই অনেকে নড়েচড়ে বসেছেন নিশ্চিত। হয়তো কেউ কেউ প্রমাদও গুনছেন। আর নড়েচড়ে বসবেন নাও বা কেন? এই এলাকার কিসসা-কাহিনিরও অভাব তো নেই। মাংসে হাড় বেশি কেন, এ নিয়েও দুই গ্রাম মুখোমুখি লড়াই করার ঘটনা ঘটেছে এখানে, এক বাড়ির মুরগি আরেক বাড়িতে ঢুকলো কেন, তা নিয়েও শতাধিক মানুষ সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার মতন বিস্ময়কর বিষয়ও মঞ্চস্থ হয়েছে এখানে। শুধুমাত্র ২০২০ সালেই যদি হিসেব করি, শতাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এখানে। শত শত সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে, বাদ যায়নি পুলিশও। এরকম হাঙ্গামাপ্রিয় এলাকার একজন মানুষ সম্প্রতি গড়েছেন এক অসাধারণ রেকর্ড। কথা বলা যাক তা নিয়েই।

বিশ্বরেকর্ড গড়া সেই চেইনের সামনে তার স্রষ্টা পার্থ!  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের বিএসএস শেষ বর্ষের ছাত্র পার্থ কুমার দেব। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বড় ভাইয়ের ব্যবসাতেও সাহায্য করেন অবসর সময়ে। কিছুদিন ধরেই তিনি ভিন্নধর্মী কিছু করার কথা ভাবছিলেন। এমন একটা কিছু, যাতে করে নিজের দেশটির নামকে বিশ্বে আরেকবার জানানো যাবে। এজন্যে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে বড় চেইন বানানোর কাজ শুরু করেন।

প্রথমে গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ঘেঁটে দেখেন, ২০১৮ সালে ভারতের হার্শা নান ও নাভা নান যৌথভাবে সেফটি পিন দিয়ে দীর্ঘতম চেইন তৈরির রেকর্ড করেছিলেন। তাদের চেইনের রেকর্ড ভাঙার জন্য তিনি উদ্যোগী হন। গিনেজ ওয়ার্ল্ডসের কাছে আবেদন করেন। তারা সবুজ সংকেত দিলে কাজ শুরু করেন পার্থ। গত বছরের জুলাই মাস থেকে এই কাজ শুরু করেন তিনি। 

১৩ হাজার ৩৭০ টাকায় দুই সেন্টিমিটার আকারের এক লাখ ৮৭ হাজার ৮২৩টি সোনালি রঙের সেফটি পিন কিনেন পার্থ। এরপর সেগুলোকে একত্রিত করে দুই হাজার ৪০১ দশমিক ৮৩ মিটার বা সাত হাজার ৮৮০ ফুট শূন্য দশমিক ২ ইঞ্চি'র চেইন বানান তিনি। পুরো কাজ করতে সময় ব্যয় হয় ৪৫ দিন।

কাজের স্বীকৃতিও মিলেছে। গিনেজ ওয়ার্ল্ডস থেকে সার্টিফিকেটও চলে এসেছে। যেখানে সবকিছুর সাথে জ্বলজ্বল করছে 'ব্রাহ্মণবাড়িয়া' নামটি। তাই সাবধান। এখন থেকে এই এলাকা নিয়ে বিদ্রুপাত্মক বা নেতিবাচক কিছু বলার আগে একবার হলেও ভাববেন, গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডসেও কিন্তু নাম লিখিয়েছে এই এলাকা।

সার্টিফিকেটে জ্বলজ্বল করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নামও!  

সো, মাইন্ড দ্য গ্যাপ!

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা