এই কার্টুনটাই যদি বাংলাদেশি কোন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে নিয়ে আঁকা হতো...
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
এরকম একটা কার্টুন বাংলাদেশে কেউ আঁকলে সে হয় গুম হয়ে যেত, নইলে তার জায়গা হতো জেলে। ফ্রান্সে কিন্ত এরকম কিছুই হয়নি। সেখানে কি সরকার সমর্থক বা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নাই? ছাত্র সংগঠন নাই? নাকি তাদের অনুভূতি নাই?
ছবিটার ক্যাপশনে লেখা, “তিনি অলৌকিক ঘটনা ঘটাতে চলেছেন!” কারন? কারন ৩৯ বছর বয়সী ম্যাক্রোঁর চেয়ে তার স্ত্রী ২৪ বছরের বড়! তাই তিনি গর্ভবতী হয়ে উঠলে এটি একটি অলৌকিক কাজ হবে।
এবার একবার চোখ বন্ধ করে চিন্তা করেন। ফ্রান্সের জায়গায় বাংলাদেশ আর মাক্রোঁর জায়গায় বাংলাদেশের কোনো নেতার স্ত্রীকে নিয়ে করা কুৎসিত ক্যাপশনের ছবি।
এবার নিজেকে চট্টগ্রামের সাংবাদিক গোলাম সারোয়ারের জায়গায় চিন্তা করেন! কলমের স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতার স্বাদ পেয়েছেন তো?
এখানেই শেষ না, আপনি জেলে পঁচে-গলে মরবেন। আপনার পক্ষে কোনো উকিল থাকবে না। আপনি হবেন দেশদ্রোহী। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অবিশ্বাসী। আপনার বংশের সকল রাজাকারের তালিকা তড়িৎ গতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে চলে যাবে!
তারপর আপনার বউ-বাচ্চার কথা চিন্তা করুন। আপনার যদি ৭ বছরের জেল হয়, কারামুক্তি শেষে ফিরে এসে এসবের অস্তিত্ব খুঁজেই পাবেন না।
অথচ সেই জায়গায় শার্লি এবদো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। তাদের আঁকা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ছবি নিয়ে দুনিয়া তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে। দফায় দফায় দেশটিতে জঙ্গি হামলা হচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। ফ্রান্সকে বয়কট করা হচ্ছে। ম্যাক্রোঁর উপর দুনিয়ার চাপ, তবুও তাদের কেউ শার্লি এবদোর দোষ দিচ্ছে না, পত্রিকাটি বন্ধ করা তো পরের কথা!
এদেশে যদি এই পত্রিকার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হতো, পত্রিকার জন্য বেসামরিক লোকজন হত্যা করা হতো, তখন ঐ নেতা এই সুযোগে পত্রিকাটিকে এক হাত দেখে নিতেন। অতীতের আক্রোশ ইচ্ছে মতো মেটাতেন!
পত্রিকার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর বাড়িঘরে আগুন দেয়া হতো। ছাত্র সংগঠনগুলোর কর্মীরা রাস্তায় যাকে পেতো, তাকেই পিটিয়ে মারতো!
ফ্রান্সে কী এমন কিছু হয়েছে? সেখানে সরকার বাহিনীর লোক নাই? সমর্থক নাই? ছাত্র নাই? না-কি তাদের অনুভূতি নাই? জাতি হিসেবে আমাদের সভ্যতার আরো উদাহরণ দিতে হবে?
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন