সোমবার চাকরির চেষ্টা শেষে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিল মেয়েটি, উঠেছিল কুমিল্লার বাসে। কিন্তু ওই বাসের চালকসহ অন্যরা অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার পর...
ষোল বছর বয়সী মেয়েটি গার্মেন্টসে চাকুরী করত। করোনার কারনে মাস পাঁচেক আগে চাকুরী চলে যায়। মেয়েটি গ্রামে ফিরে আসে। গত শুক্রবার আবারও চাকুরীর সন্ধানে ঢাকায় আসে, উঠেছিল চাচাতো বোনের বাসায়। সোমবার চাকুরীর চেষ্টা শেষে আবারও ফিরে যাচ্ছিল বাড়ি মেয়েটি, উঠেছিল ঢাকা টু কুমিল্লা তিশা প্লাস পরিবহনে।
আবদুল্লাহপুর থেকে লোকাল বাসে করে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে পৌঁছায়। রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার সময় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে তিশা প্লাস পরিবহনের একটি বাসে উঠে কুমিল্লা শহরের শাসনগাছার উদ্দেশে রওনা করে। রাস্তায় ওই তরুণী বাসের চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে শাসনগাছা বাস স্টেশনে তাকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে তারা তাকে নামিয়ে দেবে বলে আশ্বস্ত করে এবং এ বিষয়ে টেনশন করতে নিষেধ করে।
কিন্তু ওই বাসের চালকসহ অন্যরা অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার পর কৌশলে বাসটি জেলা সদরের অদূরে সদর দক্ষিণ থানাধীন পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডের আল-শাকিল হোটেলের সামনে নিয়ে যায়। সেখানে মঙ্গলবার ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে বাসের দরজা-জানালা বন্ধ করে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে হেলপার বাবু শেখ, চালক আরিফ হোসেন সোহেল ও সুপারভাইজার আলম।
অপরাধীদের আটক করা হয়েছে, কিন্তু বিচার কি হবে? পরিবহন সেক্টরের গণ্ডুরা সহজেই ওদের বের করে নিয়ে আসবে। সুদীর্ঘ বিচারের আওতায় বহু বছর পর বড় শাস্তি ওরা পেলেও পরিবহন মাফিয়ার লোকেরা আন্দোলন করে রাস্তায় গাড়ি অবরোধ করে অপরাধীদের সাঁজা মওকুফ করিয়ে নিবে।
আর একের পর এক ঘটেই চলবে এমন ধর্ষনের ঘটনা। একটা ধর্ষন হবে, আমরা চব্বিশ ঘণ্টা চিৎকার চেঁচামিচি করবো। তারপর ভুলে যাবো। অপেক্ষা করবো নতুন আরও ধর্ষনের ঘটনা জানবার। নতুন ভিক্টিমের কষ্টের অপেক্ষা।
একজন মেয়ের একা রাস্তায় বেরুতে আতংক, একা রাতে বাড়ি ফেরায় আতংক, একা কর্মস্থলে অবস্থানে আতংক, সাইবার বুলিং-এ আতংক, একা পরিবহনে যাতায়াতে আতংক। দুর্বিষহ আতংকের এক ভয়াবহ পরিবেশ চারপাশে তৈরি হয়েছে। প্রতিটি পরিবার আতংকিত, ভীত। পরবর্তী ভিকটিম কে? আপন পরিবার নয় তো?
মেয়ে সন্তানরা এই মাটিতে আর নিরাপদ নয়...
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন