ডাক্তাররা সব চোর, পালিয়ে বেড়ায়। কিন্তু আমার বাসায় থেকে কিন্তু আবার হাসপাতালে ডিউটি করা যাবে না। কালকেই বাসা ছাড়বেন।

বাঙালি কি জিনিস তা আগে মোটামুটি জানলেও এইবারের ক্রাইসিসে আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম। এর মধ্যে কয়েকটা জিনিস লিখলাম। সামনে আরো দেখলে অ্যাড করে দিবো নে।

১. করোনার জন্য বাঙালি চায় সর্বাধিক সুবিধাসম্পন্ন হাসপাতাল। এই হাসপাতালে তার চিকিৎসা হবে। কিন্তু হাসপাতালটা তার বাড়ির ১০ কিলোমিটারের মধ্যে হওয়া যাবে না। (উদাহরণ- রিজেন্ট হাসপাতাল)

২. বিদেশ থেকে যে-ই আসুক, কিংবা যাকে সন্দেহ হবে তাকেই কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। কিন্তু সেটা তার এলাকায় করা যাবে না। (উদাহরণ- দিয়াবাড়ি)

৩. করোনা ভাইরাস আক্রান্ত পেশেন্ট মরার সময় ডাক্তার তার হাত ধরে দাঁড়ায় থাকবে। কিন্তু সে পেশেন্ট মারা যাওয়ার পর নিজের এলাকায় দাফন করা যাবে না। (উদাহরণ- খিলগাঁও তালতলা)

উত্তরায় কোয়ারেন্টিন সেন্টার স্থাপনের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে এলাকার মানুষ

৪. ডাক্তাররা সব চোর, পালিয়ে বেড়ায়। কিন্তু আমার বাসায় থেকে কিন্তু আবার হাসপাতালে ডিউটি করা যাবে না। কালকেই বাসা ছাড়বেন। (শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ সালাহউদ্দিন, চাঁদপুর এবং মিরপুরের অসংখ্য ডাক্তার)

৫. এত পিপিই পিপিই করেন কেন? বরিস জনসনকে দেখছেন? পলিথিন পেঁচায় হাসপাতালে হাসপাতালে ঘোরে। আপনাদের চেয়ে এরা কম জানে? সব রোগী না দেখার উছিলা আপনাদের!

-কিন্তু বরিস সাহেব তো এই কাজ করে এখন আইসিইউতে।

-দেখছেন, দেখছেন, কি ডেডিকেশন? দেশের জন্য জীবন দিয়ে দিতেছে। আপনারা কি করছেন? একজনও তো মরলেন না এখনো!

বরিস জনসন

৬. করোনা পেশেন্টও না, কাছাকাছি সিম্পটম নিয়ে মারা গেছে। লাশ নেয়ার খাটিয়া পর্যন্ত দিলেন না আপনারা, সংক্রমণের ভয়ে! যেখানে পলিথিন লাগায় ডিউটি করে যেতে বলেন! ভাল কথা, পলিথিন লাগানো ব্রিটিশ নার্সরা কিন্তু সবগুলিই করোনা পজিটিভ!

৭. যে ব্যক্তি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আমার রাতের ঘুম ফোন দিয়ে নষ্ট করছে, সেই ব্যক্তিই এখন ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি ভোকাল- দরকারের সময় নাকি জীবনেও সে কোন ডাক্তার সময়মত পায় নাই! হাই লেভেলের সারকাজম ভাবছিলাম প্রথমে, পরে বেকুব হয়ে গেলাম।

৮. ইথাইল অ্যালকোহলের ভাপ নিতে বেশ আগ্রহী কয়েকজন। এইসবে বেশ আস্থা সবার। নিক, পরেরটা পরে দেখা যাবে। নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়াইতে আর ইচ্ছা করে না। তবে ভাপ নেওয়ার আগে টাকা-পয়সা-সম্পত্তির হিসাব ছেলেমেয়েদের বুঝায় দিয়ে যাইয়েন। পরে আর সুযোগ না-ও আসতে পারে।

Abhijit Naskar এর একটা কোট দিয়ে শেষ করি- “We learn more in a crisis than in comfort”, অর্থাৎ স্বাভাবিক পরিস্থিতির চেয়ে দুর্যোগের মুহূর্তে আমরা অনেক বেশি কিছু শিখতে পারি। And trust me, I have learnt enough!


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা