বিশেষ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যারা জড়িত, তাদের জন্য তো ফরজ! মন্ত্রী-সচিবরা যদি সরকারি হাসপাতালে ভরসা না পান, জনগণ কীভাবে পাবে?

মন্ত্রী মিনিস্টার ও সচিব যারা করোনায় আক্রান্ত হবেন তাদের যদি কখনো হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় তবে সেইক্ষেত্রে তারা যেন কোন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বরং সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েই চিকিৎসা নেন সেটা নিশ্চিৎ হওয়া উচিৎ বলে মনে করি।

বিশেষ করে যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ের সাথে জড়িত ছিলেন বা আছেন তাদের জন্য তো এটা অত্যাবশ্যকীয় ফরজ হওয়া উচিৎ। কারন তারা নিজেরা মন্ত্রনালয়ের দায়িত্বে থেকে সরকারি হাসপাতালগুলোতে দেশের সাধারন মানুষের জন্য যেসব ব্যাবস্থাপনা তৈরি করেছেন তাতে তাদের নিজেদেরই সর্বাগ্রে আস্থা আনা জরুরি। তাতে করে সাধারন জনগণেরও সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি আস্থা বাড়বে বা নতুন করে আস্থা তৈরি হবে।

মিঃ হাইজিন: জীবাণুমুক্ত হাতের প্রতিশ্রুতি

দেশের সাধারন মানুষের ট্যাক্সের হাজার হাজার কোটি টাকায় হাসপাতালগুলোতে যেসব ব্যাবস্থাপনা তারা তৈরি করেছেন তাতে যদি তারা নিজেরাই আস্থা আনতে না পেরে উল্টো দেশের কর্পোরেট বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ছুটেন তাহলে দেশের সাধারন জনগণ দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি আস্থা আনবেন কিভাবে?

জনগণ যদি এমন প্রশ্নও তুলে যে,
'আমাদের ট্যাক্সের হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে যেসব হাসপাতাল বানানো হলো বা হাসপাতালের যেসব যন্ত্রপাতি কেনা হলো বা হাসপাতালের যেসব সুযোগসুবিধা তৈরি করা হলো সেগুলো কি মানসম্মত বা বিশ্বাসযোগ্য না তাই আপনারা ভরসা পাচ্ছেন না!?'

তাহলে জনগনের এই প্রশ্নের সমাধান হবে কিভাবে?

একজন চিকিৎসক হিসেবে মনে করি,
সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যাবস্থাপনা নিয়ে এদেশের সাধারন মানুষের যে অভিযোগ এবং মূলতঃ সেসব কারনেই চিকিৎসকদের সাথে সাধারন রোগি ও জনগণের প্রায়শই যে দূরত্ব তৈরি হয় তা কিছুটা হলেও কমবে যদি আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার ও ভিআইপিরা দেশের সরকারি হাসপাতাগুলোতে সাধারন রোগির মতো চিকিৎসাসেবা নেন।

সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম আক্রান্ত হয়েছে করোনায়

পুনশ্চ: যেহেতু এখন সারাবিশ্বেই এই করোনা মহামারি চলছে এবং যেহেতু এই মহামারি মোকাবেলা করতে বিশ্বের অনেক অনেক নামীদামী এবং উন্নত দেশ নাকানীচুবানী খাচ্ছে সেহেতু হয়তো তারা এখন দেশের বাইরে উন্নত কোন দেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারছেন না! সুযোগ থাকলে তারা যে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে সেইসব দেশে পাড়ি জমাতেন তা নিশ্চিৎ করেই বলা যায়, আমাদের অতীত ইতিহাস অন্তঃত তাই ই বলে।

লেখক- আতিকুজ্জামান ফিলিপ, চিকিৎসক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক পরিষদ বিএসএমএমইউ। সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ। 

বিশেষ দ্রষ্টব্য- ফিচার্ডে বসানো ছবিটি সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এর ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ এর নতুন আইসিইউ ভবন পরিদর্শন কালের ছবি। 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা