এটা ঈদের ছুটি না। করোনাভাইরাসের আক্রমনে দেশ এখন ক্রান্তিকাল পার করছে। এই সময়ে বিশেষ সতর্কতার অংশ হিসেবে এই ছুটি দেয়া হয়েছে। কানাডিয়ান নাগরিকদের মতো অধিকার চেয়ে, সুদানীদের মতো আচরণ করবেন না।

আগামী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল; সাধারণ ছুটি, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ। খোলা থাকবে- হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন, কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্যের দোকান, সীমিত আকারে ব্যাংকিং সেবা। সেনাবাহিনী নামছে আগামীকাল থেকেই স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য। সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।

মেলাদিন ছুটি পাইছি, বউ বাচ্চাসহ বস্তা গাট্টি বোগলদাবা কইরা নিয়া চল গ্রামের বাড়ি... দোহাই লাগে এমন করবেন না কেউ! এতে হিতে বিপরীত হবে! অলরেডি যা ছড়ানোর ছড়িয়েছে, আর ছড়াবেন না প্লিজ! এটা কিন্তু ঈদের ছুটি না। করোনাভাইরাসের আক্রমনে দেশ এখন ক্রান্তিকাল পার করছে। এই সময়ে বিশেষ সতর্কতার অংশ হিসেবে এই ছুটি দেয়া হয়েছে। কানাডিয়ান নাগরিকদের মতো অধিকার চেয়ে, সুদানীদের মতো আচরণ করবেন না। 

অন্যের ক্ষতি না করে যার যেটা ভালো লাগে করুন। এই ছুটি নিজ নিজ বাসায় অতিবাহিত করুন। খুব দরকারি প্রয়োজন না হলে বাসার বাইরে যাবেন না প্লিজ। যে যার মতো সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। একান্ত মনে  ইবাদত করার এখনই সময়। অথবা যে যার প্রায়োরিটি বেসিসে বই পড়ুন, গেমস্ খেলুন, সিনেমা দেখুন, রান্না করুন, গান শুনুন।

এই সময়টা হালকাভাবে নেয়ার নয়। ইতিমধ্যেই দেশে করোনা নিয়ে ঝগড়া করতে গিয়ে সংঘর্ষে নিহত হয়েছে একজন। ভাইরাস আমাদেরকে মারার আগে, আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে মেরে ফেলছি। করোনাক্রান্ত দেশগুলো যখন নিজেদের লকডাউন করে রাখছে, আমরা যেন করোনাফেস্টিভাল পালন করছি। কেউবা করোনা রোগী দেখতে ভীড় জমাচ্ছে। এমন করে আমরা নিজেরাই নিজেদের বিপদ ডেকে আনছি।

আমরা সমুদ্র দেখতে যাচ্ছি, মনের আনন্দে দেশজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি- এমন ভাব যেন মায়ের পেট থেকেই করোনার ভ্যাক্সিন নিয়ে এসেছেন একেকজন।  যুদ্ধের ডাক দিলেও ঘর থেকে বের হবেন না কেউ, অথচ ঘরে থাকার কথা বললেই বাইরে যাবার জন্য যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেবেন এরা। জনসমাগম- অর্থাৎ যেকোনো রকমের জনসংযোগ বন্ধ করে দেবার ব্যাপারটা যেন বাঙালি মানতেই পারছে না। কোনোভাবেই এই জাতিকে বোঝানে সম্ভব না- মরলে নিজে মরো, তবে ছড়িয়ো না।  

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের এই সময়টায় একটা কথা খুব বেশি শোনা যাচ্ছে- লকডাউন। সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে মানুষকে ঘরে থাকতে বাধ্য করা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনার মোকাবেলায় এই পথে হেঁটেছে, প্রতিবেশী দেশ ভারতের কয়েকটা রাজ্যেও জারী করা হয়েছে কারফিউ বা লকডাউন। বাংলাদেশের কয়েকটা এলাকাতেও এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তবে পুরো বাংলাদেশ লকডাউন করে দেয়ার ব্যাপারে সরকারের উচ্চপর্যায় আরেকটু ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে।

প্রতি পদক্ষেপে সরকারের বিরোধীতা না করে, নিজের এবং পরিবারের জীবন বাঁচানোর জন্যে হলেও সতর্কতামূলক ছুটি পালন করুন। এখন দলাদলি, ঝগড়াঝাটির সময় নয়। এই করোনাভাইরাস জয় করতে পারলে সব করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ্। তাই আপাতত করোনামুক্ত থাকতে সতর্কতামূলক নির্দেশনা অনুসরণ করুন। আল্লাহ্‌র দোহাই লাগে আপনাদের।  

 

 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা