'সীমিত পরিসর' নামের রসিকতা ও আমাদের টিকে থাকার লড়াই
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

অন্যসব দেশও শিথিল করছে লকডাউন। খুলে দিচ্ছে সব। তবে তারা খুলেছে আক্রান্তের গ্রাফ নামার সময়ে। আমরা খুলবো উঠার সময়ে। আমাদের মানুষজন মানেনি, কথা শোনেনি। তাদের পালস বুঝে যেভাবে শোনানো দরকার ছিলো সেভাবে শোনানো হয়নি...
নিউজিল্যান্ড গতকাল তাদের হসপিটালে ভর্তি থাকা শেষ রোগীকে রিলিজ করেছে। এমন একটা দিনে আমরা আমাদের সবকিছু খোলার ঘোষণা পেয়েছি। সীমিত পরিসরের চালু হবে সবকিছু। সীমিত পরিসর ব্যাপারটা কেমন সেটার উদাহরণ আমরা এতদিন ধরে দেখেছি। শব্দ দুটো হাস্যকর শব্দের পর্যায় পার হয়ে চলে গেছে।
ফাইনালি আমাদের 'জীবন' এবং 'জীবিকা' দুটোকেই বেছে নিতে হচ্ছে একসাথে। ভাগ্যের হাতে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে বাইরে বের হতে হচ্ছে। ঘরে থাকুনের পর বাইরে আসুনের মত সিচুয়েশনে পৌঁছে গেছি।
অন্যসব দেশও শিথিল করছে লকডাউন। খুলে দিচ্ছে সব। তবে তারা খুলেছে আক্রান্তের গ্রাফ নামার সময়ে। আমরা খুলবো উঠার সময়ে। আমাদের মানুষজন মানেনি, কথা শোনেনি। তাদের পালস বুঝে যেভাবে শোনানো দরকার ছিলো সেভাবে শোনানো হয়নি। এজন্য ভয় পাওয়া সময়ে তারা সাহস পেয়েছে। ঘরে থাকা সময়ে বাইরে থেকেছে।
পৃথিবীতে আমরা সবার চেয়ে আলাদা। আমরা ব্যথা পেলেও এখন আর কাঁদি না। চুপ করে থাকি। আমাদের এখন অনেক ধৈর্য। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেলে নিজেই মেরামত করে চুপচাপ থাকি। একটা ভঙ্গুর হেলথ সিস্টেমের এক্সপোজার নিয়েও আমরা আর সিরিয়াস কথা বলি না।

সীমিত আকারে ট্রল করে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে হেসে ভুলে যেতে চাই সবকিছু। চ্যালেঞ্জটা এখন পারসোনাল। নিজেকে নিজে ভালো রাখার, নিরাপদে রাখার চেষ্টা করে যেতে হবে। শত শত কোটি মানুষের পৃথিবীতে আমার আপনার জীবন শুধুই একটা সংখ্যা। এটার দাম শুধু নিজের কাছেই, কাছের মানুষদের কাছেই। তাদের সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে হবে। টিকে থাকতে হবে।
ঘরে বসে থাকার সামর্থ্য আমাদের কম। বেসিক নিডস মেটাতে হলেও সবকিছু শুরু করতে হবে। ম্যাক্সিমাম মানুষ, ব্যবসা লোনের বোঝায় চলে যাচ্ছে। জীবন চালানো খুব কঠিন। ঘরে বসে থাকলে সবার ঘরে ভাত আসে না। মাস্ক স্যানিটাইজার নিয়ে আমাদের নেমে পড়তে হবে মাঠে। ডিফেন্সিভ খেলতে হবে, অ্যাটাক থামাতে হবে। জেতার দরকার নেই, শুধু নব্বই মিনিট টিকে থাকতে হবে।
প্রতিনিয়ত আমাদের সোশাল স্ট্রাকচার চেঞ্জ হচ্ছে। কদিন আগেও করোনা রোগীকে এই সমাজ এভয়েড করেছে। এখন প্লাজমার জন্য তাদের কাছেই আবার যেতে হচ্ছে। ট্রমার মধ্যে ফেলে দেয়া মানুষদের কাছেই হাত জোর করে সাহায্য চাইতে হচ্ছে।
প্রকৃতি আমাদের অদ্ভুত এক পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছে। এমন সব প্রশ্নে পরীক্ষা হচ্ছে যেটার উত্তর আমরা কেউ জানি না। সবাই বানিয়ে উত্তর লিখছি। যেন সবই সত্য আবার সবই মিথ্যা। এরমধ্যেই গতকাল রাতে ইউনাইটেড হাসপাতালের এক্সটেনডেড করোনা ইউনিটের আইসোলেশন সেন্টারে আগুন লেগেছে। সেখানে থাকা পাঁচজন মারা গেছে।
প্রতিটা মানুষই বাঁচতে চায়। যার এফোর্ট করার ক্ষমতা আছে সে হয়ত বাঁচার জন্য কুয়েত মৈত্রী এভয়েড করে ইউনাইটেডের আইসিইউতে বাঁচতে চেয়েছিলো। তারা হয়ত বোঝেনি মৃত্যু আজকাল এতটা সহজ, সস্তা হয়ে গেছে। একই মানুষের জন্য দুই তিন রকম অপশন নিয়ে এসেছে...