দিন যত যাচ্ছে আমার তত বেশী বিশ্বাস হচ্ছে চীন আসলে এই করোনা দিয়ে ব্যবসা করতে চাচ্ছে। প্যান্ডেমিকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে চীনই, আর এক্ষেত্রে তাদের মূল হাতিয়ার হচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা!

শুভ কামাল

ইবোলা ভাইরাসের ওষুধ রেমডিভিসিরকে আমেরিকার ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন আজকে করোনার জন্য ব্যবহারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে। এই সংস্থাকে কিন্তু সারা পৃথিবী অন্ধের মত ফলো করে। দুনিয়া উল্টিয়ে গেলেও এরা কোনভাবেই নিজেরা সন্তুষ্ট না হলে কোনকিছুর সার্টিফিকেট দেয় না। তাই করোনার ট্রিটমেন্টের ক্ষেত্রে এটাকে মাইলফলকই বলা যায়। ট্রাম্পও অসুস্থ হয়েছিল যখন, তখন এই ট্রিটমেন্ট নিয়েছিল।

যাই হোক, এই উপলক্ষ্যে আবার মনে করিয়ে দেই, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO চীনের পাপেট টেড্রসের তত্ত্বাবধানে কতটুকু পঁচে গেছে! 

এই ওষুধটা আমেরিকান কোম্পানীর কাছ থেকে নিয়ে করোনার জন্য প্রথম চায়নাই ট্রায়াল দিচ্ছিলো। পরে এক সময় তারা ট্রায়াল বন্ধ করে দেয় কারণ তারা যথেষ্ট পরিমান রোগী পাচ্ছিলো না। কিন্তু আমার ধারণা তারা তখনই টের পেয়েছিল এই ওষুধটা কার্যকর। 

এপ্রিল মাসে কী হয়েছিল মনে করিয়ে দেই। বেশ কয়েকটা ওষুধের ট্রায়াল চলছিলো কোনটায় কাজ হয় কিনা দেখার জন্য। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সবগুলোর ফলাফলের খবর রাখছিলো। তখন ভুল(!) করে হু রেমডিভিসের গবেষণার ফলাফল তাদের ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিল, সেটাতে বলা ছিল রেমডিভিসিরে কাজ হয় না। এক দিন পরেই তারা সেটা ওয়েবসাইট থেকে নামিয়ে নিয়েছিল। একেতো চায়নার গবেষকরা গবেষণাটা শেষ করারই সুযোগ পায়নি তাদের রোগী ছিল না বলে, দ্বিতীয়ত সেটা পিয়ার রিভিউডও না। তারা পরের দিন ওয়েবসাইট থেকে সেই গবেষনা নামিয়ে বলেছিল সেটা নাকি ভুলে হয়ে গেছে!

ওয়েবসাইটে গবেষণা একবার দিয়ে পরে আবার তা নামিয়ে হু বলেছিল তাদের ভুল হয়েছে

খেয়াল করুন, অন্য কোন ওষুধের ক্ষেত্রে কিন্তু তাদের এমন ভুল হয়নি। অন্য কোনটার ফলাফল তখন আপলোড করেনি। আপনারা হয়তো ভাবছেন একবার হয়তো ভুল হতেই পারে। তাই না? তাহলে বলি ৫ দিন আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কী করেছে।

৫ দিন আগে আবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বললো তারা গবেষণা করে দেখেছে রেমিডভিসিরে কাজ হয় না! তাড়াহুড়া করে এক গবেষণার ফলাফল তাদের ওয়েবসাইটে দিয়ে দিল। ওয়েট, সেইটা আবার আসল গবেষণার ফলাফলও না, প্রিপ্রিন্ট, মানে ধরেন প্রিন্ট করার আগের ভার্সন। সেইটাও আবার পিয়ার রিভিউড না। মানে একটা গবেষণা এক্সেপ্টেড হতে হলে সেটা পিয়ার রিভিউড হতে হয়, তারপর কোন জার্নালে সেটা প্রকাশিত হতে হয়, এর কিছুই হু করেনি। তারা এত তাড়াহুড়া করে আবারও সব ধাপ সম্পন্ন না করে কেন ঘোষণা দিয়ে দিল রেমিডভিসিরে কাজ হয় না? এক ওষুধ নিয়ে দুইবার একই কাজ করলো, কোইনসিডেন্স মনে হচ্ছে?

পরে দেখা গেলো তারা যে গবেষণা করেছে সেটাতে ওষুধ ট্রায়ালের মূলনীতিই মানেনি, ওষুধের ট্রায়াল ব্লাইন্ডেড ট্রায়াল হতে হয়, মানে একদল রোগীকে আসল ওষুধ দিবে, অন্য দলকে দিবে প্লাসিবো, মানে ভিতরে কোন ওষুধ থাকবে না কিন্তু রোগী ভাববে সে আসলে ওষুধ পাচ্ছে। তখন দেখবে দুই দলের ফলাফল একই আসে কিনা। একই আসলে ধরে নিবে সেটায় কাজ হয় না। কিন্তু হু যে গবেষণার কথা বলেছে, সেটাতে এই বেসিক নিয়ম মেনে ট্রায়াল করেনি। তারা ব্যস্ত ছিল কোনরকমে কাজ হয় না বলে দেয়ায়!

যাই হোক, আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ হেলথ এর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে এই ওষুধে অসুস্থ থাকার সময় তিন ভাগের এক ভাগ কমে যায়। এভারেজে ১৫ দিন থেকে কমে ১০ দিনে নেমে আসে। ও হ্যাঁ, তাদেরটা পিয়ার রিভিউড, প্রকাশিত জার্নাল। এজন্য আজকে এফডিএ এই ওষুধকে পারমিশন দিয়ে দিয়েছে।

রেমডিসিভিরকে এফডিএ পারমিশন দিয়েছে

যাই হোক, পশ্চিমের ভ্যাকসিন আর চায়না-রাশিয়ার ভ্যাকসিনের পার্থক্য বলি। চায়না আর রাশিয়া যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে ফেলেছে বলে দুই দিন পরে পরে লাফায়, সেই জাতের ভ্যাকসিন আমেরিকা আর ইউরোপ অনেক আগেই আবিষ্কার করে বসে আছে। পার্থক্যটা হচ্ছে এরা নিশ্চিত না হয়ে অনুমোদন দিবে না। মনে আছে মাঝে অক্সফোর্ডের ট্রায়াল বন্ধ করে দিয়েছিল? এরা শুধু খবর পেয়েছিল ট্রায়ালে অংশ নেয়া একজন অসুস্থ হয়েছে, সাথে সাথে পুরা প্রজেক্ট বন্ধ রেখেছে। যখন নিশ্চিত হয়েছে ওই লোকের অসুস্থতার সাথে তাদের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের সম্পর্ক নাই, তখন আবার ট্র‍্যায়াল চালু করেছে। আর চায়না-রাশিয়ায় যদি সুপ্রীম লিডার বলে এই সবাই লাইন ধরে ভ্যাকসিন নে, ট্রায়াল মায়াল লাগবে না, সবাই ইয়েস স্যার বলে লাইনে দাঁড়িয়ে যাবে ভ্যাকসিনের জন্য, এইটাই পার্থক্য!

আগেও লিখেছি গ্লোবাল প্যানডেমিক চাইলে থামানো যায়। WHO এর জন্মের পর থেকে কোন গ্লোবাল প্যানডেমিক হয়নি কারণ WHO তখন শক্ত হাতে সেটা দমনে ব্যবস্থা নিতো। সার্স, মার্স, ইবোলা, সোয়াইন ফ্লু, বার্ড ফ্লু কিন্তু কোনটাই গ্লোবাল পর্যায়ে যায় নাই। এটার আন্তর্জাতিক প্রটোকল আছে। আমি বলি না চায়না এই ভাইরাস সৃষ্টি করে বাজারে ছেড়েছে। কিন্তু আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই চায়না আর তাদের পাপেট টেড্রচের কারণে সময়মত সেটা থামানো যায় নাই।

দিন যত যাচ্ছে আমার তত বেশী বিশ্বাস হচ্ছে চায়না আসলে এই করোনা দিয়ে ব্যবসা করতে চাচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের মূল হাতিয়ার WHO। এই প্যানডেমিকে সবচেয়ে বেশী লাভবান হয়েছে চায়না। আর এই প্যানডেমিকের মাধ্যমেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মৃত্যু হয়েছে।

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা