পুরো পরিস্থিতিটা যে কি ভয়ানক ট্রাজিক, আমরা পত্রিকায় সংবাদ পড়ে বুঝতে পারিনি এতদিন! চীনা সরকার উহানের পরিবহন ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ করে দেবার ফলে সাধারন চীনা নাগরিকদের মধ্যে প্রচন্ড আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।

বর্তমানে হজ ক্যাম্পে অবস্থান করা চীনের উহান ফেরত এক ছোট বোনের সাথে কিছুক্ষন আগে কথা হলো দীর্ঘক্ষন। কী ভয়ানক স্ট্রেস, অ্যাডভেঞ্চার আর ট্র্যাজেডির ভেতর দিয়ে যে তাদের ৩৪২ জনের দলটা দেশে এসে পৌঁছেছে, এখনো কিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, সেসব কথা অবাক বিস্ময়ে শুনছিলাম।

বাংলাদেশে ল্যান্ড করার পর গত তিন দিনের বিশ্রামের পর আজ মোটামুটি তারা ধকলমুক্ত। হজ ক্যাম্পের তিন তলা জুড়ে তাদেরকে রাখা হয়েছে। তারা ৫ বেলা সুষম খাবার পাচ্ছে (২ বেলা নাস্তাসহ), আপাদমস্তক প্লাস্টিকের পোষাকে মুড়ে; দরজার কাছে উঁকি দিয়ে দিনে দুই বেলা ডাক্তার এসে খোঁজ নিয়ে যাচ্ছেন, যথাযথ লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে, এমনকি পরিবারের লোকজন এসে দেখা করতে না পারলেও ফোন করে বলে দিলে বিভিন্ন জিনিসপত্র এনে পৌঁছে দিতে পারছেন। আজকে থেকে ক্যাম্পে ওয়াইফাই সংযোগ দেয়া হয়েছে, তারা ভিডিও কলে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন। ১২টি এলসিডি টিভিও দেয়া হয়েছে তাদের চিত্ত বিনোদনের জন্য।

সেনাবাহিনীর একজন উধ্বর্তন কর্মকর্তা প্রথম দিন এসেই ব্যক্তিগতভাবে সকলের খোঁজখবর নিয়ে গেছেন, এবং দেশে ফিরেও এভাবে তাদেরকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে ১৪ দিন কোয়ারেনটাইন করে রাখার কারণে বার বার ক্ষমা চাইলেন সবার কাছে। চায়নায় দীর্ঘদিন বলতে গেলে কোয়ারেনটাইন অবস্থায় থাকার পরেও তাদেরকে দেশের ভেতর আবার কেন ১৪ দিনের কোয়ারেনটাইন অবস্থার ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে, এ নিয়ে তাদের খুব ক্ষোভ ছিলো, কিন্তু ওইঅফিসারের আন্তরিকতায় সেটা খানিকটা প্রশমিত হয়েছে।

তবে টয়লেট নিয়ে সমস্য হচ্ছে, কারণ খুবই নোংরা, নিয়মিত পরিস্কারও করা হয় না। এমনকি ক্যাম্পের বিভিন্ন জাগায় এখনো প্রচুর ধুলাবালি রয়েছে। এসব নিয়ে অভিযোগ করেও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। একটা মশারি, একটা কম্বল আর বেড দেয়া হয়েছে প্রত্যেককে, কিন্তু সেগুলো অপ্রতুল। তাই সবাই যার যার মত করে বাসা থেকে বাড়তি কম্বল, বিছানার চাদর, এসব নিয়ে আসছেন। প্রায় ৫০ জন নারী, বাকীরা পুরুষ ও শিশু। নারী ও শিশুরা কামরাগুলোতে আছেন, কিন্তু পুরুষরা কষ্ট করছেন শীতের ভেতর। আমরা অনেকেই ইতিমধ্যে সে ছবি ফেসবুকে দেখেছি।

চীন থেকে যাত্রী নিয়ে ফেরত আসা বাংলাদেশ বিমান  

সবচাইতে অ্যালারমিং ব্যাপার হলো, রুমের ভেতর হাইজেনিক পরিবেশের কোন বালাই নেই। খোদা না করুক, কেউ যদি ইনফেক্টেড হয়, তবে রুমের বাকীদের শরীরেও তা নিমিষেই ছড়িয়ে পড়বে স্রেফ একটা হাঁচি বা কাশি দিলেই। এমনই ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি! তবে এক্ষেত্রে আশাার কথা হলো, চীনে ও দেশে দুই জাগাতেই তারা কয়েকবার করে মেডিকেল স্ক্রিনিং প্রসেসের ভেতর দিয়ে গেছে, সুতরাং আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এই ৩৪২ জনের কেউই ইনফেকটেড নন, ইনশাল্লাহ্। 

ছোটো বোনটি হজ ক্যাম্পে ঢুকেই এই অরাজক ইন্টেরিয়র দেখে মুষড়ে পড়েছিলো। আমি বললাম, উহানেই তো ভালো ছিলে এর চাইতে, তাই না? উত্তরে বললো, ''এক সেন্সে ভালোই ছিলাম ভাইয়া, কারণ ইনফেক্টেড হলে ওখানে বেটার ট্রিটমেন্ট পেতাম। কিন্তু অন্য দিকে থেকে ভাবলে দেশে ফেরাটাই বেটার অপশন ছিলো। কেননা, আমরা অলরেডি প্রায় মাস খানেক ধরে হোস্টেলে লকড-ডাউন ছিলাম। কয়েকদিনের খাবার দাবার স্টকে ছিলো, কিন্তু খাওয়ার পানি ফুরিয়ে আসছিলো দ্রুত। কতদিন এইভাবে থাকতে হতো কে জানে? মূলত, এই অনিশ্চয়তার জন্যই দেশে চলে আসার সিন্ধান্ত নিয়েছিলাম।''

ওখানে আর কতজন বাংলাদেশি আছে? তারা এলো না কেন? এই প্রশ্নের জবাবে বললো, ''আরো ৪০/৫০ জনের মতো আছে। তারা দেশে আসার চাইতে ওখানে থেকে যাওয়াটাই বেটার মনে করেছে। এখন আমাদের অনেকেরই গিল্ট ফিল হচ্ছে, মনে হচ্ছে তাদেরকে সাথে করে নিয়ে আসলে ভালো করতাম, যেখানেই থাকি না কেন, সবাই মিলে একসাথেই থাকতাম। খোদা না করুক, ফিরে গিয়ে যদি দেখি তাদের কিছু একটা হয়ে গেছে, নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবো না।

তাছাড়া, দেশের অনেকেই আমাদের দেশে ফেরাটা ভালো চোখে দেখছেন না, তাদেরকে বলবো, আমরা চায়নায় দীর্ঘদিন বলতে গেলে কোয়ারেনটাইন অবস্থায়ই ছিলাম, ইউনোভার্সিটিতে আমাদের চেকাপ করা হয়েছে একাধিকবার, উহান এয়ারপোর্টেও করেছে, এরপর আবার দেশে ১৪ দিন কোয়ারেনটাইন পিরিয়ড শেষ করেই দেশের ভেতরে ঢুকছি। সুতরাং আমার মনে হয় না চিন্তার কোন কারণ আছে। তাছাড়া পুরো উহান শহর লকড-ডাউন। একটা লকড ডাউন সিটিতে আমরা কিভাবে সারভাইভ করবো, এবং কতদিন করতে পারবো, সেটা কেউ চিন্তা করেছেন কিনা আমি জানি না!''

বুঝলাম, পুরো পরিস্থিতিটা যে কি ভয়ানক ট্র্যাজিক, আমরা পত্রিকায় সংবাদ পড়ে বুঝতে পারিনি এত দিন! ওর সাথে কথা না হলে আজও পারতাম না। বোনের ভাষ্যমতে, চীনা সরকার উহানের পরিবহন ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ করে দেবার ফলে সাধারন চীনা নাগরিকদের মধ্যে প্রচন্ড আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছে, ভাইরাস বুঝি বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে, শরীরের ভেতরে যাবার সাথে সাথেই ইনফেক্টেড হবে। নইলে তো গাড়ী-ঘোড়া সব বন্ধ করে দেয়া হতো না।

কিন্তু এই ভাইরাস নিয়ে যতোটা আতংক ছড়াচ্ছে, এটা অতটা আতংকিত হবার মত ঘটনাও নয়। আগামী মাসের মাঝামাঝি চীনে যখন গরম পড়া শুরু করবে, তখন এর প্রকোপ কমে যাবে। এছাড়া, ভাইরাস মানুষের শরীরে সংক্রামন হতে হতে এক সময় সে দুর্বল হয়ে পড়ে আমাদের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কাছে হেরে যায় (আমিও পত্রিকায় তাই পড়লাম)। 

উহান এয়ারপোর্টে টানা ২৪ ঘন্টারও বেশী সময় ধরে তারা চেক ইন করেছে, লাগেজের ওজন মেপেছে, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা। এত সময় লাগার কারণ হলো, এয়ারপোর্টের ৩০টা কাউন্টারের ভেতর ২৯টাই বন্ধ ছিলো। খোলা ছিলো মাত্র একটা। সেদিন ৮টা দেশের ১০টা এয়ারক্রাফট এসেছিলো, ভারতের ২টা সহ। প্রায় দেড় হাজার লোকের জন্য মাত্র ১টা কাউন্টার, তার উপর প্রত্যেকের বডি টেম্পারেচার মাপা হচ্ছিলো সময় নিয়ে, এটাতেও বাড়তি সময় লেগেছে। বাইরে এম্বুলেন্স রেডি ছিলো, দুইজনের টেম্পারেচারে গড়মিল পাওয়ামাত্র তাদেরকে ওটাতে করে নিয়ে যাওয়া হলো।

তখন ওদের সাথে ৬-৮ ঘন্টা টিকে থাকার মত খাবার-দাবার ছিলো। সুতরাং, ৮ ঘন্টা পরই ক্ষুধার জ্বালায় সবাই কাহিল হয়ে পড়লো, এদিকে এয়ারপোর্টের সব দোকান পাট বন্ধ। গাড়িও বন্ধ, দূর থেকে যে চট করে খাবার কিনে আনবে তারও উপায় নেই। না খেয়ে, না ঘুমিয়ে উহান এয়ারপোর্টের ভেতর ২৪ ঘন্টা বিভিষীকাময় সময় কাটাতে হয়েছে ওদেরকে। এরপর বাংলাদেশ বিমানে উঠে ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত সবাই গোগ্রাসে খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছে যার যার সীটে বসে। সাথে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর লোকজনও বলেছে, ''আমরাও অনেক উৎকন্ঠা নিয়ে আপনাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম গত ১২ ঘন্টা ধরে। কিন্তু ওদের স্ক্রিনিং শেষ না হওয়া পযন্ত আমাদেরকেও এয়ারপোর্টে ঢুকতে দেয়া হয়নি।''

তারা ওদের মুখে থাকা সব মাস্ক ফেলে দিতে বললো। তারপর নতুন করে আবার মাস্ক দেয়া হলো। একটু পর পর হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত পরিস্কার করালো। ছোট বোন ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে মাস্টার্স করছে উহানে (নেক্সট সেমিস্টার অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে)। ওর সাথে এখন ল্যাপটপসহ বই-পত্র সবই আছে, চায়নার মত ফেসবুকও ব্লকড না দেশে, ওয়াইফাইও আছে এখন, এবং আগামী ১৪ তাারিখ পর্যন্ত এই ক্যাম্পেই মেডিক্যাল ডিটেনশনে থাকতে হবে, খাওয়া ঘুম বাদে আর কিছু করার নেই আপাতত। সুতরাং, ওদের হাতে এখন অফুরন্ত সময়।

তাই আমি ওকে বোঝালাম, চীনে অবস্থানকাল থেকে শুরু করে হজ ক্যাম্পে পৌঁছানো পর্যন্ত তার সংকটময় অভিজ্ঞতাটুকু ডায়েরির মত করে ফেসবুকে লিখে ফেলার এই তো মোক্ষম সময়। লেখালেখি করে তোমার সময় যেমন কাটবে, তেমনি আমরাও একজন প্রকৃত উহান ফেরত প্রবাসীর কাছ থেকেই ঘটনাগুলো জানতে পারবো, যেটা এখন পর্যন্ত দেশে ফেরত আসা কোনো বাংলাদেশির কাছ থেকে শোনার সুযোগ আমাদের কারো হয়নি। সে জানালো, পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে সে আগামী ১০ দিন ডায়েরি লিখার চেষ্টা করবে।   

ছোট্ট দুইটা ইমোশনাল ব্যাপার শেয়ার করি, যেগুলো শুনে মনটা বেশ খারাপ হয়েছে। ভিডিও কলে ওর মা বলছিলো, “আমরা ধরে নিয়েছি তুই এখনো দেশে ফিরিস নি, ১৫ তারিখ সকালে ফিরবি, তাতে কষ্টটা একটু কম হচ্ছে আমাদের।” ওদের সাথে পরিবার আছে গোটা কয়েক। সেখানে ৬ মাস বয়সী শিশুও আছে। একজন নাবালিকা ফোনে তার দাদীকে আজ বলছিলো, “দাদু, আমরা তো এখনো বাংলাদেশে ফিরিনি। ফিরলেই তোমার সাথে দেখা হবে।” চীনে তারা ছোটাছুটি করে বড় হয়েছে, সেখানে এখন তারা হাজি ক্যাম্পে আটকে আছে অনভ্যস্ত ছোট পরিসরে। বিষয়টা বাচ্চাদের জন্য সংগত কারণেই বেশ কঠিন। তাই, বাবা-মা হয়তো তাদের বুঝ দিয়েছে যে তারা এখনো বাংলাদেশে পৌঁছায়নি। 

ওখানে সবাই এখন সম্পূর্ণ সুস্থ্য ও স্বাভাবিক আছেন। বিশেষ করে বার বার সরকারকে ধন্যবাদ দিচ্ছিলো, সরকার যেভাবে তড়িৎ গতিতে, সুষ্ঠুভাবে এতগুলো মানুষকে, সম্পূর্ণ সরকারী খরচে (এমনকি যাদের পাসপোর্ট ছিলো না, তাদেরকেও বাংলাদেশ হাই কমিশন দ্রুততার সাথে ট্রাভেল ডকুমেন্টস বানিয়ে দিয়েছে), হাইজেন মেইনটেইন করে এনেছে, সেটা রীতিমত আশাতীত ছিলো।

বাংলাদেশে নামার পর তাদেরকে কোন ধরনের চেক ইন প্রসেসের ভেতর দিয়ে যেতে হয়নি তাদেরকে, বিলাসবহুল চেয়ার কোচে করে এয়ারপোট থেকে সোজা ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়েছে, এমনকি তাদের লাগেজও সেনাবাহিনীর লোকজন নিরাপদে ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়েছে। তার উপর এই ১৪ দিন থাকা খাওয়া ও রক্ষনাবেক্ষনের খরচ তো আছেই। বেশ বড়সড় একটা বাজেট খরচ করা হচ্ছে এ খাতে, আর এ জন্য সরকার ও আমাদের সেনাবাহিনী অবশ্যই ভূয়সী প্রশংসার দাবিদার।

উহানে থাকাকালীন লাগেজ গোছানোর জন্য মাত্র ১৫ ঘন্টা সময় দেয়া হয়েছিলো বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে। আর সেটাও অনেক ভেবে চিন্তে করতে হয়েছিলো, কারণ তারা জানে না কতোদিনের জন্য দেশে আসছে। কতোটুকু রেখে আসতে হবে আর কতোটুকু সাথে নিতে হবে, এই হিসেবটা করা সহজ ছিলো না। আসার আগে ছোট বোন তার ফ্রিজে রাখা ডিম, দুধ, পাউরুটি, লাইভস্টক ইত্যাদি খাবার দাবার পাকিস্তানী সহপাঠীদের দিয়ে এসেছে। নইলে ফ্রিজে পচে নষ্ট হতো এগুলো।

বোন মজাকরে বলছিলো, ''ভাইয়া সবই তো দেয়া হলো আমাদের, বসন্তের প্রথম দিনও তো বন্দী দশায় থাকতে হবে এখানে, তো আমাদের সবার জন্য বাসন্তী রংয়ের শাড়ী আর ছেলেদের জন্য পাঞ্জাবীর ব্যবস্থা করবে না সরকার?' 

যা হোক, আমি আর বিস্তারিত কিছু লিখছি না, ঘটনার আদ্যোপান্ত জানার জন্য ওর ডায়েরির অপেক্ষায় রইলাম। ফোনে সে মোটামুটি ডায়রির মত করেই তারিখ ধরে ধরে সব বলে গেছে। পুরোটা লিখলে অনায়েসে ৫/৭ পর্বের ড্রামা সিরিজের একটা স্ক্রিপ্ট হয়ে যাবে। বিশেষ করে, তার বক্তব্য পুরো সিনারিওটা সম্পর্কে আমাদের পারসেপশন বদলে দিবে। এদেশের মানুষ এই ঘটনা জানা ডিজার্ভ করে।

দীর্ঘক্ষনের আলাপচারিতায় শুধুমাত্র একটা জাগায় আমি শাডেনফ্রয়েড পেয়েছি। ছোটো বোন জানালো, ওদের ডর্মে বেশ কিছু পাকিস্তানি শিক্ষার্থী রয়েছে, গত মাস থেকেই তারা তাদের সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছিলো তাদেরকে যেন সরকারীভাবে চীন থেকে উদ্ধার করে নিজ দেশে ফেরত নেয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন আগে তাদেরকে পাকিস্তান সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে, দে আর অন দেয়ার ওউন! মানে পাকিস্তান সরকার তাদের জন্য কিছুই করতে পারবে না! চীনে ওরা যেভাবে আছে সেভাবেই থাকতে হবে।

ভেবে দেখলাম, মুক্তিযুদ্ধে দেশ স্বাধীন না হলে আজ আমাদের ভাই বোনেরা চীনে আটকা পড়ে থাকতো সেই হতভাগা পাকিস্তানীদের সাথেই, যাদের কোন দায়িত্ব নিতে তাদের সরকার সরাসরি অস্বীকৃতি জানিয়েছে! যেখানে পৃথিবীর সব দেশের সরকার নিজ নিজ নাগরিকদের নিয়ে যাচ্ছে সরকারি উদ্যোগে, সেখানে পাকিস্তান সরকার এই কাজটা করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিলো। চিন্তা করে দেখুন, বিষয়টা কতটা লজ্জার, কতটা অপমানকর! বর্হিবিশ্বের হাজারো মানুষের সামনে নিজের দেশের নাগরিককে স্রেফ ''বেওয়ারিশ'' বানিয়ে দিতে পাকিস্তান সরকারের এতোটুকুও সংকোচ হয়নি! 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা