'ডেইজি আপা' হেরেছেন, জিতেছে মোহাম্মদপুরের পাকিস্তানীরা!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
ডেইজী আপা লড়াই করেছেন মোহাম্মদপুরে। আটকে পড়া পাকিস্তানীদের খনি এলাকা। মাদকের আখড়া। যে সেন্টু জিতেছে, সে সেন্টু কতোখানি নোংরা মানুষ তা আমরা জানি। জানেন মোহাম্মদপুরের ৩১ নং ওয়ার্ডের মানুষেরা। কিন্তু গণতন্ত্রের ব্যর্থতা হলো পপুলার ভোটে কখনো কখনো শয়তানও জিতে যায়।
ডেইজী আপা হেরেছেন। মোহাম্মদপুরের আটকে পড়া পাকিস্তানীরা জিতেছে। নির্বাচনে গান বানিয়েছেন সব প্রার্থীই। তার অনেকগুলোই উদ্ভট হয়েছে। আপনারা তাদের কাউকে নিয়ে ট্রল করেননি। ট্রল করেছেন কেবল ডেইজী আপাকে নিয়ে? কেন? জানেন কেন?
কারণ ডেইজী আপা ছিলেন সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষদের বিরুদ্ধে নারী প্রার্থী। তিনি আগেরবার নারী সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী ছিলেন। এবারে সাধারণ আসনের প্রার্থী ছিলেন। এটা পুরুষতন্ত্রে ব্যাপকভাবে লেগেছে। ট্রল করেছেন নারীরাও। ওই নারীদের ভিতর সুপ্ত পুরুষতন্ত্রের পূজায় আঘাত লেগেছে। ডেইজী আপা এবারও সংরক্ষিত আসনের প্রার্থী হলে আপনাদের লাগতো না এতোটা। আমি নিশ্চিত।
ডেইজী আপা গত পাঁচ বছর কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র ছিলেন। সে সময় তিনি প্রচুর কাজ করেছেন। কিন্তু একটা হাস্যকর কাজ করেছিলেন। তিনি গাড়ি করে কামান স্টাইলে মশা মারার ফগিং মেশিন থেকে ওষুধ ছিটিয়েছিলেন। আচ্ছা, বলুন তো, ডেইজী আপা একাই শুধু হাস্যকর কাজ করেছেন? না। আরো অনেকেই করেছেন, ক্ষমতাসীনদের অনেকেই তা করেন।
কতজন কাউন্সিলরের নাম আপনারা এক নাগাড়ে বলতে পারবেন? কিন্তু ডেইজী আপার নাম ঢাকা উত্তর-দক্ষিণের গণ্ডি পেরিয়ে সারাদেশে জানে সবাই। ডেইজী আপার ফগার মেশিন নিয়ে হাস্যকর কাজটা দেখেছেন, তার ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযানটা দেখেছেন আপনারা?
ডেইজী আপা লড়াই করেছেন মোহাম্মদপুরে। আটকে পড়া পাকিস্তানীদের খনি এলাকা। মাদকের আখড়া। যে সেন্টু জিতেছে, সে সেন্টু কতোখানি নোংরা মানুষ তা আমরা জানি। জানেন মোহাম্মদপুরের ৩১ নং ওয়ার্ডের মানুষেরা। কিন্তু গণতন্ত্রের ব্যর্থতা হলো পপুলার ভোটে কখনো কখনো শয়তানও জিতে যায়। এদেশে পপুলার ভোটে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সাদেক হোসেন খোকার কাছে শেখ হাসিনাও হেরেছেন। রাজাকারের কাছে মুক্তিযোদ্ধারাও হেরেছেন অনেকবার। আজ ডেইজী আপা হেরেও আপনাদের ট্রল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না।
এমনকি সকালে সেন্টুর মতো বাজে লোকের সাঙ্গপাঙ্গরা যখন তাকে মেরেছে সেন্টুর উপস্থিতিতে, এমনকি নারী ডেইজী আপার পরণের কামিজও ছিড়ে দিয়েছে, তখনও আপনারা তাকে নিয়ে ট্রল করেছেন। একজন নারীর পরণের কাপড় ছিড়ে ফেলা তো অনেক পরের বিষয়, তার পরণের কাপড়ে হাত দিলেও সে হাত কেটে দেওয়া উচিত, তা সে যেই হোক না কেন। আপনারা তখনও সেন্টুকে নিন্দা করার বদলে ক্রমাগত ট্রল করে গেছেন ডেইজী আপাকে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে ডেইজী আপাকে চিনি না, তার সাথে পরিচয়ও নেই। কিন্তু ভালো লেগেছে যখন সাধারণ ওয়ার্ডে পুরুষদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য তার দল তাকে মনোনীত করেছে। ভালো লেগেছে তার লড়াই। আর প্রতিদিন ঘেন্না করেছি আপনাদের ট্রলকে। ডেইজী সারওয়ার, আপনি অনেক সালাম দিয়েছেন। এবার আপনি আমার সালাম নিন। লড়ে যান। এবার হয়নি, আগামীবার নিশ্চয়ই হবে।