র‍্যাব ম্যাজিস্ট্রটের বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ অভিযানে ২০০৯ সালের নষ্ট হয়ে যাওয়া খেজুরও পাওয়া গিয়েছিল বিপুল পরিমাণে। স্টিকার লাগিয়ে মেয়াদের তারিখ পরিবর্তন করে তা বিক্রি হত।

মাহবুব কবির মিলন: আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কোন খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্য উপকরণের সেলফ লাইফ বা মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ প্রকাশে স্টিকার বা আলাদা কাগজ ব্যবহার করা যাবে না। আমদানির ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। মেয়াদ, উতপাদন লিখা হতে হবে সুস্পষ্ট অমোচনীয় কালি দ্বারা ছাপার অক্ষরে। কয়েক মাস সময় দিয়ে (যেহেতু অনেক আমদানির এলসি খোলা হয়ে গেছে) এই নিয়ম কার্যকর করা হত।

গত বছর রোজায় র‍্যাব ম্যাজিস্ট্রটের বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজ অভিযানে ২০০৯ সালের নষ্ট হয়ে যাওয়া খেজুরও পাওয়া গিয়েছিল বিপুল পরিমাণে। স্টিকার লাগিয়ে মেয়াদের তারিখ পরিবর্তন করে তা বিক্রি হত।

এ বছর আমরা ফেব্রুয়ারি মাসেই সব কোল্ড স্টোরেজে রক্ষিত খেজুর এবং মাংসের ইনভেন্ট্রি লিস্ট (পরিমাণ, তারিখ, আমদানিকারকের নাম ঠিকানা) দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেয়া দিয়েছিলাম। অনেক কোল্ড স্টোরেজ মালিকের কাছ থেকে পুরো তালিকা পাওয়া গিয়েছে। করোনার কারণে অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তা আর পরীক্ষা করা যায়নি।

নিচের চিত্রে দেখুন। ১ম চিত্রে স্টিকার লাগানো তারিখ। মেয়াদ লিখা ১১/২০২১ সাল। ২য় চিত্রে স্টিকার তুলে দেখা যাচ্ছে ভিতরে ব্ল্যাংক বা ফাঁকা। প্যাকেট খুলে দেখা গেল পোকা এবং পচে গিয়েছে কিছু খেজুর। হয়ত অনেক পুরাতন খেজুর। এই হচ্ছে স্টিকারের কারিশমা! স্টিকার তুলে আবার লাগানো হবে নতুন তারিখ। মাল চলবে বছরের পর বছর।

এই হচ্ছে স্টিকারের কারিশমা!

আর একটি জিনিস খেয়াল করুন, এই প্যাকেটের কোন ট্র্যেসিবিলিটি নেই। অন্যসব আমদানি করা খাদ্য পণ্যের ক্ষেত্রেও তাই। কবে কখন আমদানি করা হয়েছে, কোন চালানের মাল, তা সহজে বের করার সহজ উপায় নেই। প্যাকেটের গায়ে লিখা আদানিকারকের ঠিকানার হয়ত সত্যতা নেই।

তাই আমরা আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, প্রত্যেক খাদ্য পণ্যের কার্টুন,প্যাকেট বা বক্সের লেবেলে এলসি নাম্বার বাধ্যতামূলকভাবে (একটি আইডেন্টিক্যাল নাম্বার) উল্লেখ করতে হবে। তাহলে আর কুমিরের কাছে একই ছানা বারবার দেখাতে পারবে না। বাজারে প্রচলিত আমদানি করা প্রত্যেক খাদ্য পণ্যের গায়ে উল্লেখিত এলসি নাম্বার দিয়ে অতি সহজেই সব তথ্য বের করা সম্ভব হবে।

অফিস খুললেই রিলিজ নিয়ে চলে যাব নতুন কর্মক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ। শেষ করে যেতে পারলাম না অনেক কাজ। আশা করি আমার উত্তরসূরিরা শেষ করতে পারবে তা।

মাহবুব কবির মিলন কর্মরত ছিলেন নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হিসেবে। সম্প্রতি তাকে সেখান থেকে বদলি করা হয়েছে। যে কাজগুলো তিনি করছিলেন, মানুষের জন্যে খাবারকে নিরাপদ করার যে মিশন তিনি হাতে নিয়েছিলেন, সেগুলো তাই বাধাগ্রস্ত হলো ভীষণভাবে। এই লেখাটি তার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে সংগৃহীত।

কথা বলুন নিঃসংকোচে

প্রিয় পাঠক, করোনার এই দিনগুলিতে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হতেই পারেন আপনি। সেটা হতে পারে অর্থনৈতিক, মানসিক- বা অন্য কিছু। আপনার সমস্যার কথা জানান আমাদের, আমরা চেষ্টা করব সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অবহিত করার, যাতে বেরিয়ে আসে সমাধানের পথ।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা