ঢাকার মানুষগুলো কবে তাদের ভাঙাচোরা মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হবে?
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
কেন এতগুলো মানুষ অবসাদগ্রস্ত? কেন তারা বিষাদগ্রস্ত? কেন তাদের একাকিত্বের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল শহরে বাস করেও?
রাজধানী ঢাকা দেশের বৃহত্তম নগরী, যার দুয়ার খুলে রাখা আছে সকলের জন্য। এই নগরীতে দৈনন্দিন জীবন যাপনের উদ্দেশ্যে জড়ো হয় কত হাজার-হাজার মানুষ। ঢাকা নিজের দুয়ারে কখনো তালা দেয়নি আজ পর্যন্ত। তাই স্বাধীনতা পরবর্তী ঢাকায় স্থায়ী এবং অস্থায়ী আবাসন গড়ে তুলতে থাকে ৬৪ জেলা থেকে আগত হাজারো মানুষেরা। ক্রমান্বয়ে ঢাকা এই ৬৪ জেলার মানুষের সম্মিলিত প্রয়াসে গড়ে উঠে এক সংমিশ্রিত নগরী।
ঢাকার কিছু আদিম বাসিন্দা আছে যাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পুরোদস্তুর ঢাকার মানুষ হয়ে রয়ে গেছেন লাখ লাখ মানুষ। তাই এই তিলোত্তমা নগরী তার নিজের অভ্যাস-চালচলন-আচারে এবং আপ্যায়নেও ভিন্নতা এনেছে সকলের মধ্য দিয়েই। এই নগরীর মানুষগুলো অনেক বৈচিত্র্যময়। কিন্তু সকল বৈচিত্র্যই হয়তো একটা সময় তার মাধুর্যতা হারিয়ে ফেলে। কারণ ৮০ দশকে বাড়তে থাকে ঢাকামুখো মানুষের ঢল। ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয় ৮০ থেকে ৯০ দশকের ঢলটা ঢাকাকে দু'হাত প্রশস্ত করে উর্বরতাই দিয়েছিল। কারণটা ঢাকার তখনকার পরিবেশের ওপর তাকালেই বোঝা যায়। রাজনৈতিক ক্রাইম রেট বাদ দিলে সেটাই হয়তো ঢাকার স্বর্নযুগ ছিল। ২০০০ থেকে ২০২০ এই দুই দশকে ঢাকার এমন আমূল পরিবর্তন দেখে হয়তো অনেকে বলবেন কিছু উন্নত স্থাপনা ছাড়া আর যা হয়েছে তা কোনো দিক থেকেই মঙ্গলের নয়। ঢাকায় প্রচুর মানুষ বেড়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাম্রাজ্যবাদীরা ঢাকা কেন্দ্রিকতাকে আরো প্রসারিত করেছে।
কোটি মানুষের বাস যে শহরে, এই ঢাকার হাজার সমস্যার মধ্যে সব থেকে বড় যে আশংঙ্কা, তার নাম মানসিক স্বাস্থ্যগত সমস্যা। সবকিছুই আমরা হয়তো সহ্য করে নিতে পারি, তাই এই ঢাকায় যেটা এখন ব্যাধির থেকেও বেশী ভয়ঙ্কর মানসিক সমস্যা এবং আত্নকেন্দ্রিক মনোভাবাপন্ন সমাজব্যবস্থা- সেটিও আমরা সহ্য করে নিয়েছি।
ঢাকাকে এমন উদ্ভট নগরীতে পরিণত করা হয়েছে যেখানে মানুষজনও প্রচন্ড উদ্ভট হয়ে চলছে দিনের পর দিন। গত বছর, মানে ২০১৯ সালে একটি মানসিক স্বাস্থ্য জরিপে দেখা গেছে ঢাকায় বসবাসরত অধিকাংশ মানুষই অবসাদগ্রস্ততা সহ নানান রকম মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন এবং এদের মধ্যে ভয়াবহ প্রভাব লক্ষনীয়ভাবে উপস্থিত। এটা খুবই উদ্বেগের বিষয় কারণ ঢাকায় প্রায় ২ কোটি মানুষের বসবাস, এবং এদের মধ্যে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোর-কিশোরী-যুবক-যুবতীর সংখ্যা কোনোভাবেই ৯৫ লাখের নিচে নয়।
এই শুন্য থেকে পঁচিশ বছরের নাগরিকেরাই একটা শহরের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং এরাই দেশের আগামী। এখন তাদের সিংহভাগই যদি অবসাদগ্রস্থতা, একাকিত্ব, সোশাল এ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার, প্যানিক ডিসঅর্ডার, অভসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার, প্যারাম্যানিয়া, ডিসোসিয়েট আইডেন্টিটি ডিসঅর্ডার- এসকল মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করে তবে ভাবুন কতটা শোচনীয় অবস্থা আমাদের!
এই মানসিক রোগাক্রান্ত লোকেদের আপনি-আমি রাস্তাঘাটেও দেখি, কিন্তু ব্যক্তিগত কিংবা চিকিৎসাগত অভিজ্ঞতা না থাকায় কেউ বুঝতে পারি না, আবার অনেকে না বোঝার ভান করি। এই সিংহভাগের মানসিক স্বাস্থ্যের এই পরিবর্তন, যা তাদের শৈশবের ভীতিকর সামাজিক এবং পারিবারিক অবস্থান থেকে এসেছে। আর প্রত্যেকটা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার গেটওয়েটা হচ্ছে বিষন্নতা, বিষাদময় স্মৃতি এবং আবেগপ্রবণতার তারতম্য।
এটা একটা ভালো রকমের ভয় এবং উদ্বেগের ব্যাপার, যে কারণেই আমাদের প্রত্যেকের এখন প্রচন্ড সংবেদনশীল হওয়া উচিত। এই শহরের মানুষগুলো মনের দিক থেকে কেউ দুবেলা ভালো থাকে কিনা সন্দেহ আছে! আবার কারো কারো অবস্থা তো হলিউডের সাইকিক ভিলেনদের মতন।
আমরা সামাজিকভাবে মানসিক স্বাস্থ্যকে মোটেও গুরুত্ব দিইনা। মানুষের যেখানে জীবন পরিচালনার প্রধান হচ্ছে মন, সেই মনই যখন ভালো থাকে না তখন পারিপার্শ্বিক অবস্থা কী করে ভালো থাকবে? কেনো এতগুলো মানুষ অবসাদগ্রস্ত? কেনো তারা বিষাদগ্রস্ত? কেনো তাদের একাকিত্বের সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল শহরে বাস করেও?
এই প্রত্যেকটা মানসিক সমস্যাগুলোর নাম শুনে তো একটা কথাই মনে আসছে- মানুষে মানুষে দূরত্বই এর প্রধান কারণ। যে শহরে বেসরকারি গণনা অনুযায়ী ২ কোটির উপর মানুষ বাস, সেখানে এত কিছু, এত জন থাকার পরেও একাকীত্ব কেন মানসিক সমস্যায় পরিণত হয়? বিষন্নতা কেন গ্রাস করে সবাইকে? অবসাদগ্রস্থতা কেনো কুঁড়ে কুঁড়ে খায়?
এই মগজের মহামারি সৃষ্টিকারী পোঁকা তো একদিনে এত মগজের দখল নেয়নি, তার তো অনেক দিন লেগেছে! এই যে প্রিয় শহরের মানুষগুলোর এতো কিছু আছে, এত কিছু ঘটে তাদেরকে ঘিরে, কোনো কিছুর উনিশ-বিশ যখন আমরা মানতে নারাজ। তাহলে এগুলো তো আমরা চোখে দেখছি, এত জীবনের ব্যস্ততা, এত বন্ধু, এত স্বজন, এত উপলক্ষ... কিন্তু দিন শেষে তাদেরকে ঘিরে যা ঘটছে তার বেশির ভাগই মিথ্যা লোক দেখানো অভিনয়! তারা যাকে উজাড় করে দিচ্ছে, দুদিন পর দেখছে সবই যেন জিন্নালীগের ফাঁকি।
কত মানুষ আছে বন্ধুত্বের নাম শুনলে ভয়ে কুঁকড়ে যায়, কত মানুষ বিয়ের নাম শুনলে বিভীষিকা দেখে প্রত্যেক প্রহরে প্রহরে, কত মানুষ প্রেমের সম্পর্কের কথা শুনলে বিষের নীলে বারবার মরে যেতে চায়, কত মানুষ বাবার কথা শুনলে অতঙ্কে স্থীর হয়ে পাথর হয়ে যায়, মায়ের কথা শুনলে কেঁদে বুক ভাসিয়ে যায়, ভাইয়ের কথা শুনলে ঘৃণার তিক্ততা প্রকাশ করে যায়, বোনের কথা শুনলে উদ্বেগের দৃষ্টি বিছিয়ে দেয়, স্কুলের কথা শুনলে কাঁদে, কলেজের কথা মনে পড়লে লজ্জা পায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা শুনলে অবাক দৃষ্টিতে দূর আকাশে চেয়ে হতাশা বিলায়, মসজিদ ভয় পায়, মন্দির ভয় পায়, গির্জা ভয় পায়, প্যাগোডা ভয় পায়, ইমাম ভয় পায়, পুরোহিত ভয় পায়, শিক্ষক ভয় পায়, পুলিশ ভয় পায়, রাজনীতি ভয় পায়, রাজনীতিবিদ ভয় পায়, এলাকার পাতি নেশাখোর মাস্তান ভয় পায়, নেশাখোর ভয় পায়, সমাজপতি ভয় পায়, মেলা ভয় পায়, বাস ভয় পায়, ভীড় ভয় পায়, লোকাল ট্রেন ভয় পায়, দূর পাল্লার বাসের হেল্পার ড্রাইভারদের ভয় পায়, নিজের রুমে ভয় পায়, খালু ভয় পায়, চাচা ভয় পায়, শ্বশুড় ভয় পায়, শাশুড়ী ভয় পায়... তারা অকারণে নয়, তারা প্রত্যেকেই কারণবশত এরকম আরো অনেক কিছুকেই ভয় পায়।
ঘুম ভেঙ্গে গিয়ে যখন দেখে বাবা মা'কে পেটায় তখনও ভয় পায়, বাড়ির আত্মীয়েরা যখন জমি ভাগের নামে মারমুখী হয় তখন ভয় পায়, খালার সঙ্গে নিজের বাবাকে বিছানায় দেখে ভয় পায়, দাদা যখন কাজের মেয়ের শরীরে হাত বোলায় সেটা দেখেও ভয় পায়, মা যখন চকলেট আইসক্রিম দেয়া আঙ্কেলকে নিয়ে নিজের বেড রুমের দরজা লক করে দেয় সেটা দেখে ভয় পায়, চাচা যখন নিজের ভাইকে খুন করে সেটা জেনে ভয় পায়, এলাকার নেতা যখন ঘরে পিস্তল নিয়ে হাজির হয় সেটা দেখে ভয় পায়, হুজুর যখন আরবি পড়ানোর নামে বাথরুমে নিয়ে যায় সেটাও ভয় পায়, গণিতের মাস্টার যখন শারীরিক শিক্ষার ব্যবহারিক ক্লাস নিতেই বেশি আগ্রহ দেখায় সেটা ভয় পায়, বড় আঙ্কেলদের আদরে যখন ছোট্ট ছেলেটার মলদ্বারে অস্ত্রোপচার লাগে সেটা ভয় পায়। আরো কত রকমের ভয় যে তারা পায় তার কোনো ইয়ত্তা নেই। এগুলোই কি মানসিক স্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলার উপযুক্ত কারণ নয়?
আমাদের শহরে প্রকৃত বন্ধুর খুবই অভাব। এখানে মানুষ নিজের ব্যক্তিস্বার্থের জন্য কখন যে কাকে ব্যবহার করে বিশাল মানসিক কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়ে যায়, সে ব্যবহৃত মানুষটার খবর কেউ রাখে না। এখানে মানুষ জীবিকার সস্তা যুদ্ধের জন্য একে অপরকে এতটা শত্রু ভাবাপন্ন করে দেখে যা দিন শেষে মানসিক বোঝা হয়েই চেপে যায় মস্তিষ্কে। লোক দেখানো এতটা প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, এখন লোকে টাকা ধার করেও লোক দেখানোর রেওয়াজ পালন করে বেড়ায়, কিন্তু দিন শেষে লোকেরা কেউ কারো না। এই শহরের মানুষগুলো বড় বোকা, তারা নিজেদের ভালোটা এমনভাবেই বোঝে যে দিন শেষে নিজের মানসিক অসুস্থতার কথাটা তারা স্বীকারই করতে চায় না। যার ফলে কোনো চিকিৎসাও হয় না এবং নিজের রোগের প্রভাবে অন্যের মধ্যে তা স্থানান্তর করে দেয়।
এই নগরীতে নাকি বিবাহ ব্যতিত সব কিছু অবৈধ, কিন্তু শহরের হাসপাতালগুলো এবরশন করে যা টাকা কামায় তা আশা করি আইসিইউ বিজনেসের পরেই স্থান পায়, এই শহরে মন খুলে কথা বলা মানে তুমি নিজের বিপদ নিজে ডেকে আনো, একটু সবার থেকে আলাদা হওয়াটা মানে এখানে তুমি ''প্রতিবন্ধী'', মেয়ে-ছেলে এখানে দুই গ্রহের দুই রাইভাল প্রাণী, কারো বাবা-মা থেকেও নাই, কারো পরিবার কয়েকটি ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে এতটাই রক্ষণশীল যার বিরুদ্ধে বলতে যাওয়া মানে ভিক্ষার থালা হাতে ধরিয়ে দেয়ার সমান!
এখানে সামাজিক ব্যবস্থা এতটাই পক্ষপাতদুষ্ট যে কিনা মেধাবী, যে নাকি যোগ্য, তাকেও অভুক্ত থাকতে হয় দিনের পর দিন। মানুষের মনের থেকে এই শহরে জামা-কাপড়ের গুরুত্ব সব থেকে বেশি, সাদা-কালো গায়ের রঙের যা চর্চা এখানে হয়, তা মানসিক আঘাতের জন্য সবচেয়ে বড় নিয়ামক, মেয়েদের স্বাধীনতা বলতে স্কুল-কলেজ আর চটপটি ফুচকার দোকান। বিয়ে না করলে একটা মেয়েকে দেখা হয় বেশ্যা বলে, নিজের মা-বোন বাদ দিয়ে সকলকে খেয়ে দিবো মনোভাব রাখে লাখ লাখ ছেলে।
এই যে এত সব কারণ এর থেকেও বেশি কারণ অন্তর্নিহিত আছে এই শহরের প্রত্যেক কোণে যা অনেকে মুখে বলে না, তাই আমরা জানিও না। এসব একদিন দুইদিনের চর্চা নয়, এগুলোর চর্চা আমরা নগরবাসী অনেকদিন ধরে চালিয়ে আসছি। নগরের সবাই এখন সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের খুব সুখী আর হাসিখুশি দেখালেও বাস্তব জীবনে তারা খুবই একাকী এবং অবসাদগ্রস্ত। একটা বন্ধুত্বের হাত এখানে কেউ বাড়ায় না বিনা মতলবে, একটা মায়ার হাত কেউ কখনো ছোঁয়ায় না অসুস্থ অভিসন্ধি ছাড়া। একটা বন্ধন যেখানে স্বচ্ছ হয় না, একটা ভালোবাসার সম্পর্ক এখানে কাঠিন্য এবং কোমলতা নিয়ে বৃদ্ধি পায় না, মুরুব্বিরা তাদের বয়সকালে দূরত্ব বজায় রাখতে রাখতে আজ ওল্ড এজ হোমে, পুলিশ যেখানে দিনে কিংবা রাতে যার-তার পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেয়।
এসব একদিনে আসেনি, এই রোগগুলো অনেকদিনের। একটা প্রজন্ম নয়, তিন চারটা প্রজন্ম আজ এই মৃত্যু থেকেও অধিক কষ্টকর রোগে আক্রান্ত। তবুও আমরা অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছি বাহির থেকে নিজেদের ভালো দেখানোর।
যারা যারা সুখী তারা অন্যের দুঃখের কারণ নিয়ে ভাবছেই না। আমার অনেক বন্ধু, তাই কার বন্ধু নেই তা নিয়ে ভাবছি না, বন্ধু হিসেবে নতুন কাউকে দলে ভিড়তে দিচ্ছি না, যার সেক্স ড্রাইভ বেশি তার জন্য নাকি ১০ টা মেয়ে বিছানায় ফেলানো অনৈতিক কিছু না, আমাদের শহুরে মানুষগুলোর কাছে পাশের বাসার ঝগড়া সবসময়ই উপভোগ্য, স্কুলে লুতুপুতু বাচ্চারা ছাড়া আর বাকি সবাই বুলিং এর স্বীকার হচ্ছে, কলেজে বাপের টাকার শোডাউন মর্মান্তিক, ভার্সিটিটা প্রায় জায়গাতেই যার টাকা পয়সা আছে তার বন্ধু বেশি রীতিতে চলে, সেক্স এডুকেশন এখানে ট্যাবু, মুক্তমনা মানেই এখানে চাপাতি দিয়ে খুন..
এসবের প্রত্যেকটা কারণই আমাদের মানসিক ভারসাম্যকে একটা চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পর্যায়ে এনে দাঁড় করিয়েছে। তিলে তিলে আমরা ইউজড হয়েছি এবং এখনো ইউজ করে যাচ্ছি। যার ফলে দিনশেষে মনের কথাগুলো ফিল্টার হয়ে মনেই পড়ে থাকছে। আমাদের শহরের মানুষগুলোর মানসিক স্বাস্থ্য ভাঙ্গার পেছনে আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের স্বার্থপরতাকে কাঠগড়ায় এনে দাঁড় করাতেই পারি। কারণ মানুষ যেখানে পদে পদে বিপর্যস্ত, সেখানে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ দিয়ে একটা সময় বিষাদের অবসাদ প্রবেশ করবে এটাই স্বাভাবিক। গরীব এই দেশে 'মানসিক সমস্যা হওয়া মানে বিলাসিতা' এই চিন্তা আমাদের শুধু বাদ নয়, সমূলে উপড়ে ফেলতে হবে। কারণ গরীব দেশেই বৈষম্য বেশি হয়, আর বৈষম্য মানেই মানসিক আঘাত।
মনুষত্বের শিক্ষাই পারে এই মজ্জাগত সমস্যা দূর করতে, চাইলে যারা পারেন প্রাথমিক পর্যায়ে একজন সাইকোলজিস্ট দেখাতে পারেন, আর অবস্থা বেশি বেগতিক দেখলে একজন সাইকিয়াট্রিস্ট এর শরণাপন্ন হতে পারেন। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত রোগ হলেও তার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরো অনেকেই। এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যেহেতু পুরোপুরি কারো ব্যক্তিগত না, তার মানে এর জন্য রোগী একান্ত দায়ী নন। তাই সবারই দ্বায়িত্বশীল-সংবেদনশীল হওয়াটা এখন অত্যন্ত জরুরী।
-
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন
* সমাজের নানান অসঙ্গতি নিয়ে আওয়াজ তুলুন। অংশ নিন আমাদের মিছিলে। যোগ দিন 'এগিয়ে চলো বাংলাদেশ' ফেসবুক গ্রুপে