এমন একটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমরা যে হাজারে হাজারে মরছি না, এখনও বেঁচে আছি এটার জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত...

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের ব্রিফিংয়ে রংপুরের এক ছেলে মারা যাওয়ার খবর প্রচার করা হয়েছে। বাংলা ট্রিবিউন এ খবরের পর রংপুর মেডিকেল কলেজে যোগাযোগ করে। সেখান থেকে জানানো হয় এমন কোনো ইনফো তাদের কাছে নেই।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় শাখার সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানায়, ২৫ এপ্রিল সিম্পটম নিয়ে একটা ছেলে মারা যায় রংপুরে। তারপর তার টেস্ট করা হয়। দুদিন পর রিপোর্ট আসার কথা। অথচ গতকাল ৮ দিন পর তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। 

যুগান্তর এক রিপোর্টে জানিয়েছে, সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষা ও ফলাফল প্রদানে অসঙ্গতিগুলো দূর হচ্ছে না। যে রোগীর নমুনাই নেয়া হয়নি তাকে বলা হচ্ছে পজিটিভ। আবার ১৪ দিন হাসপাতালে থাকার পর প্রথম পরীক্ষায় বলা হচ্ছে নেগেটিভ এবং পরের পরীক্ষায় পজিটিভ। সংগ্রহকারীদের অনেকেই নিজে না করে রোগীদের হাতে কাঠি দিয়ে নমুনা আনতে বলেন। আবার অনেকের সঠিক প্রশিক্ষণ না থাকায় লালার পরিবর্তে রোগীদের থুতু নিয়ে আসেন।

সে রিপোর্টে আরও বলা হলো, দেশের প্রায় সর্বস্তরে করোনার সামাজিক সংক্রমণ শুরু হলেও অধিকাংশ রোগীর কন্ট্রাক ট্রেসিং করা হচ্ছে না। প্রতিদিন স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে নতুন রোগীর যে হিসাব দেয়া হয়, সেখানে ফলোআপ রোগীরা যুক্ত কিনা তা স্পষ্ট করা হয় না। প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাবে সন্দেহজনক রোগীরা ফোন করে ১০ দিন অপেক্ষা করেও নমুনা দিতে পারছে না। ১৪ দিনের জায়গায় ১৭ দিন হাসপাতালে থেকেও দ্বিতীয় পর্যায়ের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করাতে পারেননি। এ অবস্থায় গোপনে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন এক রোগী।

যুগান্তরের আরেকটা রিপোর্টেই আছে, কুষ্টিয়াতে টেস্ট করে ৬৭ জন পজেটিভ। পরে সেই ফলাফল বাতিল করা হয়। আইডিসিআরে আবার পাঠানো হয়। সেখানে টেস্ট করে ৬৫ জন নেগেটিভ। 

কোনোকিছুরই কোনো ঠিকঠিকানা নাই। ট্রান্সপারেন্ট কিছু না। কোনো স্বচ্ছতা নাই। নিজেদের মধ্যে সিনক্রোনাইজেশন নাই। ইভেন ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসও তারা ঠিকমত বলে না। এমন একটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় আমরা যে হাজারে হাজারে মরছি না। এখনও বেঁচে আছি এটার জন্য সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। 

আর এই সিস্টেম নিয়ে, এইসব নিয়ে বলার আর করার কিছু নাই। এজন্যই মানুষজন আর কথা বলে না। তারা হুদাই ট্রমা নিয়া থাকে না। মরলে মরবে বাঁচলে বাঁচবে। সবাই চ্যালেঞ্জ নিয়া থাকে। জিলাপি নিয়া থাকে। ওমর সানীরে নিয়ে থাকে। ফুল পাখি লতাপাতা নিয়ে থাকে। চোখের কাজল নিয়া বিজি থাকে। সাংবাদিক কাজল হওয়ার চেয়ে চোখের কাজল হওয়া সেফ। 

এইসবের ভুল ধরতে না পারলেও আমরা বিটিভির অনলাইন ক্লাসের অংক মাস্টারের ভুল ঠিকই ধরতে পারছিলাম। আমাদের চোখ যে কত কঠিন সেইটা দেখিয়ে দিয়েছি। আমাদের চোখকে ফাঁকি দেয়া এত সোজা না। ওই ম্যাডাম যদি ওইদিন ঠিকমত যোগ বিয়োগ করতে পারতো তাহলে আজকে করোনার রিপোর্টে এত ভুল আসতো না....


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা