কৃষক নিখিলকে পেটানোর পর তাঁর মেরুদণ্ডে হাঁটু দিয়ে আঘাত করেন এএসআই শামীম উদ্দিন। এতে নিখিলের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। এরপর দুদিনের মাথায় হাসপাতালে তিনি মারা যান।

সপ্তাহ দেড়েক আগে পুলিশি নির্যাতনে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু দেখেছিলাম আমরা। সে দেশেও পুলিশের হাতে সাধারণ মানুষ খুন হলে বিচার হওয়ার নজির খুব বেশি নেই। তবুও জনতার প্রবল প্রতিরোধে ফ্লয়েডের হত্যাকারীদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। 

আমাদের দেশে এইসব বিচারের ইতিহাস কেবলই অবিচারের গল্পে মোড়ানো। গোপালগঞ্জের দরিদ্র কৃষক নিখিলকে 'পিটিয়ে হত্যার' বিচার হবে কিনা জানি না। তবে যেটা জানলাম, ৫ লাখ টাকা আর চাকরির বিনিময়ে নিখিলের পরিবারের সঙ্গে বিষয়টির মীমাংসা হয়ে গেছে আজকে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কেউ কোনো মামলা করে নি। আজকে মীমাংসা হয়ে যাওয়ায়, মামলা হওয়ার সম্ভাবনাও আপাতত নেই। অর্থাৎ নতুন করে নাড়াচাড়া শুরু না হলে বিচার এখানেই শেষ!

এই ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হলে আমাদের সরকারগুলো সেটা লুকাতে চায়। তারা ভাবে, এতে সরকার বা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে। তারা কি কখনো ভাবে না, এগুলোর বিচার করলে বিচার ব্যবস্থা, সরকার ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা জন্মাবে? সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন নয়, বরং উজ্জ্বল হবে? 

মৃত কৃষক- নিখিল

একটা সমীকরণ কোনোভাবেই বুঝি না; করোনাকালীন দুঃসময়ে সামনে থেকে লড়াই করে মানুষের মনে নতুন করে জায়গা করে নেয়া পুলিশ বাহিনীতে এএসআই শামীমের মতো 'হত্যাকারী'দের আসলেই খুব প্রয়োজন?

লেখক- তারেক হাসান নির্ঝরসাবেক শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা