একদল পুড়ছে, মারছে, অন্যদল জীবন বাজি রেখে প্রাণ বাঁচাচ্ছে। ঘৃণা হেরে যাচ্ছে ভালোবাসার সামনে, হিংসা পরাজিত হচ্ছে মানবতার কাছে...

আজ চারদিন ধরে দিল্লী থেকে একের পর এক হৃদয়বিদারক যেসব দাঙ্গার খবর আসছিল, বিপরীত দিক হতে তেমনি শোনা যাচ্ছিল মুসলমান প্রতিবেশীর জীবন বাঁচাতে হিন্দু প্রতিবেশীর জীবন বাজি রাখার গল্পগুলো।

দিল্লীর পুর্ব দক্ষিণ শহরে প্রেমকান্ত নামক এক দিল্লীওয়ালা নিজ শরীরে সত্তুর ভাগ আগুনে পুড়েও বাঁচিয়েছে প্রতিবেশী ছয়জন মুসলমানের জীবন। আগুনে পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে প্রেমকান্তকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল সারারাত কারন অ্যাম্বুলেন্স আসার মতো পরিস্থিতি তখন দিল্লীতে ছিল না।

দাঙ্গা শুরুর সাথে সাথে শিখ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান 'গুরুদুয়ার' তার ঘরের দরজা খুলে দিয়েছিল সকল মুসলমানদের জন্য।

হঠাৎ শুরু হয়ে যাওয়া দাঙ্গার হতে স্কুল ফেরত ছাত্র ছাত্রীদের বাঁচাতে যমুনা বিহারের এলাকাবাসী হাতে হাত রেখে মানবচেইন তৈরি করে দাড়িয়ে ছিল। নিরাপদে অনত্র এলাকায় শিক্ষার্থীরা সরে না যাওয়া পর্যন্ত তারা মানব ব্যূহ তৈরি করে দাঁড়িয়েছিল।

নিজে পুড়ে গিয়ে ছয়জন মুসলমানের প্রাণ বাঁচিয়েছেন প্রেমকান্ত

শিলামপুর এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের নিচুজাত বলে পরিচিত দলিত সম্প্রদায় লোকজন দাঙ্গাবাজদের হাত থেকে মুসলমান প্রতিবেশীদের বাঁচাতে রাস্তা আটকে দাঁড়িয়েছিল।

দিল্লীর রমেশ পার্ক এরিয়ায়, হিন্দু ও শিখ যুবকরা সারারাত মুসলমানদের ঘর পাহারা দিয়েছে, ললিতা পার্কেও দেখা গেছে হিন্দু পরিবার সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে মুসলিম পরিবারকে নিজেদের ঘরে দুইদিন লুকিয়ে রেখেছে।

দিল্লী দাঙ্গায় এখন অব্দি মৃতের সংখ্যা চৌত্রিশ, গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি পঞ্চাশের অধিক। সমগ্র দাঙ্গায় দিল্লী পুলিশের অবস্থান ছিল প্রশ্নবিদ্ধ, কিছু ভিডিওতে পুলিশকে সিসিটিভি ফুটেজ নষ্ট করতে দেখা গেছে।

ষ্টেট স্পন্সরড দিল্লী দাঙ্গার ভয়াবহ চিত্রের চেয়েও শক্তিশালী ছিল এই ভালোবাসার গল্পগুলো


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা