"আমরা করোনার চিকিৎসা করতে চাই। সত্যিই চাই। কিন্তু আমাদের বকেয়া বেতন তো দিতে হবে! মাত্র ১২-১৫ হাজার টাকার বেতন, সেটাও আটকে রাখার পরও আমরা কেন লাইফের রিস্ক নিবো?"

খবরে দেখলাম ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালকে করোনার জন্য স্পেশাল হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার সাথে সাথে হাসপাতালে কাজ করা সবাই আন্দোলনে নেমে পড়েছে। তারা করোনার চিকিৎসা করতে পারবে না!

কি? এতটুকু পড়ে রাগ উঠছে না? গালি দিতে মন চাচ্ছে না? উনারা কেন রাস্তায় নামছে জানেন? চার মাস ধরে উনাদের কোন বেতন দেওয়া হচ্ছে না। জ্বি, চার মাস! এবং করোনার চিকিৎসা উপলক্ষে তাদের কোন সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়া হয়নি। এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এটা হাসপাতাল ম্যানেজমেন্টের ব্যাপার, তারাই জবাব দিতে পারবে। আর হাসপাতালের পরিচালক সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।

হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে অনেক স্মৃতি আছে। বেশ কয়েকবার যাওয়া হয়েছে। তারা তূলনামূলক কম খরচে ভালো সার্ভিস দেয় বাট টাকা নিয়ে কোন ধানাইপানাই করা যায় না। তো রোগীদের থেকে ঠিকই পই পই করে টাকা আদায় করে, কিন্তু ডাক্তার নার্সদের ৪মাস ধরে বেতন দিতে পারতেসে না। হোয়াট দ্যা ফাক ইজ দিস?

হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল

আন্দোলনরত এক নার্সের ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় কথা গুলো ভালো লাগসে- "আমরা করোনার চিকিৎসা করতে চাই। সত্যিই চাই। কিন্তু আমাদের বকেয়া বেতন তো দিতে হবে! মাত্র ১২-১৫ হাজার টাকার বেতন, তাও আটকে রাখার পরও আমরা কেন লাইফের রিস্ক নিবো?"

আজ হয়তো ফেসবুক পত্রিকা গুলো "করোনার চিকিৎসা দিতে অস্বীকার করে হলি ফ্যামিলির ডাক্তারদের আন্দোলন" টাইপের শিরোনাম করে ভরে ফেলবে। শুরু হবে আরেকদফা ডাক্তারদের গালাগালি। কেউ ভিতরে ঢুকে পড়বেও না। জানবেও না টানা ৪ মাস বেতন ছাড়া তারা খেটে যাচ্ছেন। কেউ কেয়ার করবে না ১২-১৫ হাজার টাকা বেতনের মানুষগুলোকে বাধ্য করা হচ্ছে দৈনিক ৪-৫ হাজার টাকার পিপিই নিজে কিনতে অথবা করোনায় আক্রান্ত হবার রিস্ক নিতে।

হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল আসলে আমাদের একটুকরো বাংলাদেশ...


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা