পাশাপাশি দুটি বেড, একটা মায়ের বুকে দুধ নেই, বাচ্চা দুটো কাঁদছে। আর আরেক মায়ের বুকের দুধে ড্রেস-বিছানা ভিজে যাচ্ছে!

তাহেরা তমা: ছবিতে যে মধ্যবয়সী দম্পতিকে দেখা যাচ্ছে, তাদের ছেলের স্ত্রী আর আমি একই কেবিনে ভর্তি ছিলাম। ভদ্রমহিলার কোলে আমাদের বাচ্চা। একই দিনে আমার মেয়ে আর তাদের যমজ দুই নাতি দুনিয়াতে আসে! তাদের ছেলের স্ত্রী একটু বেশি অসুস্থ থাকায় যমজ বাচ্চা দুইটা বুকের দুধ পাচ্ছিলো না। এদিকে আমি সুস্থ থাকলেও আমার বাচ্চা আইসিইউতে! পাশাপাশি দুটি বেড, একটা মায়ের বুকে দুধ নেই, বাচ্চা দুটো কাঁদছে। আর আরেক মায়ের বুকের দুধে ড্রেস-বিছানা ভিজে যাচ্ছে!

হসপিটাল অথরিটি একটা পেপার নিয়ে এসে বলে সাইন করতে। পড়ে দেখি মাদার মিল্ক ব্যাংকে দুধ দান করতে রাজি কিনা সেই মর্মে একটা পেপার! আমি বললাম, 'আমি তো অলরেডি পাশের বেডের বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছি!' ডক্টরের চোখ কপালে! রাজ্যের হাসি দিয়ে তিনি বললেন, 'ইউ আর সো কাইন্ড...'

আমি এক ফোঁটা দুধও নষ্ট করিনি, পাম্প করে সরাসরি উনাদের যমজ বাচ্চাদের খাইয়েছি। আর কিছু পাম্প করে হসপিটালের মাদার মিল্ক ব্যাংকে জমা দিয়েছি! আমি রিলিজ পেয়ে বাসায় চলে এসেছি, কিন্তু আমার বাচ্চা তখনো আইসিইউতে ছিল। সেও প্রায় দুই-তিনদিন অন্য এক চাইনিজ মায়ের দুধ খেয়েছে! অথচ মাদারমিল্কের মতো একটা মানবিক সুন্দর উদ্যোগকে পণ্ড করে দিয়েছে বাংলাদেশের গু ভর্তি মগজের ধর্মীয় ভাঁড় মোল্লারা! এদেশের ঘুণেধরা সরকার আর প্রশাসনের এই বল নেই এসব ভাঁড়দের প্রতিহত করার? ধর্মের নামে এরকম অমানবিক ভাঁড়গুলো নিপাত যাক!

পৃথিবীটা একদিন মানুষের হোক!


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা