লেখক হিসেবে তিনি গনগনে সূর্যের মতোই দ্বীপ্তমান, তাই পরিচালক হিসেবেও তিনি যে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ছিলেন- সেটা নিয়ে আলোচনা হয় না বললেই চলে। একটা আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন কিংবা শ্যামল ছায়ার মতো সিনেমা কি হুমায়ূন ছাড়া আর কেউ বানাতে পারতেন এদেশে?

তিনি ছিলেন শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে যোগ দিয়েছিলেন স্বাধীনতার কয়েক বছর পরে। কিন্ত লেখালেখির পোকাটা মাথায় ছিল অনেক আগে থেকেই, সেই লেখালেখি দিয়েই তিনি অর্জন করেছেন আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা, পেয়েছেন লাখো কোটি মানুষের নিঃশর্ত ভালোবাসা। কয়েকটা প্রজন্মকে তিনি আকাশ চিনিয়েছেন, বৃষ্টি দেখিয়েছেন, জোছনায় ভিজতে শিখিয়েছেন শুধু লেখনীর মাধ্যমেই। তার বই কেনার জন্য, একটা অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য, তাকে এক পলক সামনাসামনি দেখার জন্য হাজার মানুষের লাইন জমেছে বইমেলায়। 

সেই কিংবদন্তী লেখক হুমায়ূন আহমেদ যখন শুধু ‘টাকার প্রয়োজনে’ ক্যামেরার পেছনে দাঁড়ালেন নাটক নির্মাণে, তাকে নিয়ে খুব বেশী আশা কেউ করেছিল বলে জানা নেই। তিনি নিজেও যে খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, এমনটা নয় মোটেও। কিন্ত পরের গল্পগুলো ঠাঁই করে নিয়েছিল রূপকথার পাতায়। যেখানে হাত দিয়েছেন, সোনা ফলেছে সেখানেই। বাসায় একটা টিভি কেনা দরকার, বিটিভিতে একটা নাটক বানিয়ে দিতে পারলে সেই টাকাটা জোগাড় হয়ে যাবে- এমন চিন্তা থেকেই মানুষটা কলম ছেড়ে ক্যামেরার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, নিজের উপন্যাসের চরিত্রগুলোকে তুলে এনেছিলেন টিভির পর্দায়। এতদিন যাদের কল্পনায় দেখেছে পাঠকেরা, তারাই এখন জীবন্ত হয়ে বিচরণ করছে চোখের সামনে! তার দুর্দান্ত রসবোধের পরিচয় মিলেছে এখানেও, প্রথম থেকে কখনোই তাকে মনে হয়নি তিনি নবীশ, উল্টো ধারণা হতো, ক্যামেরার পেছনে থাকার জন্যেই বুঝি তার জন্ম হয়েছিল! কলম হাতে তিনি যতোটা সাবলীল, ঠিক ততটাই যেন পরিচালকের চেয়ারে বসেও! 
 
তার লেখা শঙ্খনীল কারাগার উপন্যাসটিকে চলচ্চিত্রে রূপ দিয়েছিলেন পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমান। সাল তখন ১৯৯২। কেউ কেউ অভিযোগ করেছিলেন, সেটা দেখতে অনেকটা নাটকের মতোই মনে হয়েছে। যদিও শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। কিন্ত মনের মধ্যে কোথাও হয়তো খানিকটা অতৃপ্তি রয়ে গিয়েছিল তার। নিজের সৃষ্ট চরিত্রগুলোকে তিনি যতোখানি বোঝেন, সেটুকু বোঝা তো অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয়। তাই ঠিক করলেন, এবার তিনি নিজেই সিনেমা বানাবেন। বিষয় নিয়ে ভাবতে হলো না, মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে বড় বিষয় আর কি হতে পারে সিনেমা বানানোর জন্যে? 
 
নিজের লেখা ‘১৯৭১’ উপন্যাসটিকে সেলুলয়েডের ফিতায় বন্দী করার কথা ভাবলেন। কিন্ত এটা নির্মাণে খরচ অনেক, বিশাল দজ্ঞযজ্ঞের দরকার। এতকিছু কোথায় পাবেন তিনি? ভেবেচিন্তে ঠিক করলেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়েই বানাবেন সিনেমা, কিন্ত অন্য একটা গল্প নিয়ে। বেছে নিলেন ‘আগুণের পরশমণি’ উপন্যাসটাকে। সরকারী অনুদান পেলেন পঁচিশ লাখ টাকা, কিন্ত সেটা দিয়েও শেষ করা গেল না শুটিং। নিজের জমানো সঞ্চয় ভেঙে আর অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের কাছ থেকে ধার করা টাকা যোগ করে শেষ করলেন শুটিং। 

আগুনের পরশমণি সিনেমায় আসাদুজ্জামান নূর ও বিপাশা হায়াৎ

কেমন ছিল হুমায়ূনের প্রথম সিনেমা? উপন্যাসটা প্রকাশিত হয়েছিল সিনেমার আট বছর আগে। মুক্তিযুদ্ধের সময়টায় ঢাকা শহরে বাস করা একটা পরিবারকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে যে গল্পটা। ভয়ের হিমশীতল এক চোরাস্রোতের ঘুর্ণিপাকে বসবাসের সময়টা দারুণভাবে ক্যামেরায় তুলে এনেছেন হুমায়ূন আহমেদ। সেখানে শঙ্কা আর আতঙ্কের পাশাপাশি আছে সেগুলোকে জয় করে মাথা তুলে দাড়ানোর বাসনা। আছে পাকিস্তানীদের অত্যাচার আর সেসবের বিপরীতে তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের ঘৃণা প্রকাশের দৃশ্যও। 

বীর বাঙালীর প্রতিরোধ চলেছে পুরো দেশজুড়েই, এরমধ্যে ঢাকায় সশস্ত্র প্রতিরোধ করেছিল আরবান গেরিলারা, ‘ক্র্যাকপ্লাটুন’ নামে যাদের আমরা চিনি। তাদের দুঃসাহসী কার্যক্রম প্রথমবারের মতো সেলুলয়েডে জায়গা পেয়েছিল হুমায়ূনের হাত ধরেই। একটা নতুন সূর্য, একটা নতুন দেশের জন্মের অপেক্ষায় দর্শককে রেখে শেষ করেছেন সিনেমার গল্পটা, বাকীটুকু দর্শকের কল্পনা, তারা কি মানসপটে বদি’কে বাঁচিয়ে রাখবে, নাকি মেরে ফেলবে? একটা ভোর, মৃদু সূর্যরশ্মি, গুলিবিদ্ধ একজন আহত মুক্তিযোদ্ধা আর উৎকণ্ঠায় থাকা একটা পরিবার, কিংবা একটা জাতি-এরচেয়ে সুন্দর সমাপ্তি বোধহয় হতে পারতো না এই সিনেমাটার। 
 
এরপর পাঁচ বছরের বিরতি দিয়ে এসেছে শ্রাবণ মেঘের দিন। আবহমান গ্রামবাংলার গল্প, আমাদের গল্প এটা। গায়েন মতি, কুসুম কিংবা কুসুমের প্রেমে পড়া যুবক সুরুজের গল্পে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে এসেছে গ্রামের অহঙ্কারী জমিদার আর তার মিশুক স্বভাবের নাতনী শাহানা। দুটো গল্প অনেকটা সময় এগিয়েছে সমান্তরালে, তারপর কোথায় যেন মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। সেখানে প্রেম আছে, ঘোর লাগা জোছনার অবগাহন আছে, মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে, অহঙ্কারীর দম্ভ যেমন দেখানো হয়েছে, একইসঙ্গে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী চরিত্রের মাধ্যমে সমাজের উঁচু-নিচু ভেদাভেদকে দূর করার গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও দিয়েছেন হুমায়ূন। শেষ দৃশ্যে জীবনপ্রদীপ নিভে যাওয়া কুসুমের পায়ের আলতার রঙ নদীর জলে মিশে যাওয়ার দৃশ্যটা দর্শককে কাঁদিয়েছে; এই চোখে জল নিয়ে আসার কাজটা হুমায়ূন খুব ভালো পারতেন, কি বইয়ে, কি সিনেমায়। 
 
নতুন শতাব্দীর শুরুতে তিনি নিয়ে এলেন দুই দুয়ারী। হুমায়ূন যেসব সিনেমা বানাতেন, সেগুলোকে কমার্শিয়ালের কাতারে ফেলা যায় না ঠিক। আগের দুটো সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা প্রায় সবাই ছিলেন ছোটপর্দার, এদেকে নিয়ে হুমায়ূন আহমেদ নাটক বানিয়েছেন, তার পরিচালিত সিনেমাতেও ওরাই ছিলেন। কিন্ত এবার তিনি একটু দুঃসাহস দেখালেন। মেইনস্ট্রিম সিনেমার নায়ক রিয়াজকে নিয়ে বানালেন ‘দুই দুয়ারী’। রহস্যমানবের চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি রিয়াজের কাছ থেকে। উপন্যাসের মতো করে সিনেমাটা শেষ করেননি হুমায়ূন, খানিকটা ব্যতিক্রম রেখেছিলেন তিনি। দুই দুয়ারী সিনেমার ‘মাথায় পরেছি সাদা ক্যাপ, হাতে আছে অচেনা এক শহরের ম্যাপ’ গানটা তখন দারুণ জনপ্রিয় হয়েছিল। 

দারুচিনি দ্বীপ ও কৃষ্ণপক্ষ ছাড়া বাকি সিনেমাগুলোর পরিচালক ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ

জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এখনও তেমন ঠাঁটবাট ধরে রাখা এক জমিদারের গল্প নিয়ে তার উপন্যাস ‘চন্দ্রকথা’। সেই চন্দ্রকথা অবলম্বনেই হুমায়ূনের পরের সিনেমা, রিয়াজের পর এবার আরেক তারকা ফেরদৌসকে নিলেন তিনি প্রধান চরিত্রে। একদিকে জহির-চন্দ্রের ভালোবাসা, আর অন্যদিকে জমিদারের খামখেয়ালী অত্যাচারী আচরণ- দুটো দিকই হুমায়ূন সামলেছেন দারুণ দক্ষতায়, ওই সিনেমায় আহমেদ রুবেলের দুর্দান্ত অভিনয় এখনও চোখে লেগে আছে। সিনেমায় ব্যবহৃত পাঁচটি গানের চারটিই লিখেছিলেন হুমায়ূন, সুর করেছিলেন মকসুদ জামিল মিন্টু। ‘চাঁদনী পসরে কে আমায় স্মরণ করে’, ‘আমার ভাঙ্গা ঘরের ভাঙ্গা চালা’, ‘ও আমার উড়ালপঙ্খীরে’ গানগুলো হুমায়ূনের বহুমূখী প্রতিভার স্মাক্ষর হয়ে বেঁচে আছে এখনও। 
 
আবারও মুক্তিযুদ্ধ, তবে এবার অন্য আঙ্গিকে। পাকিস্তানী সেনাদের ভয়ে একদল মানুষ পালাচ্ছেন, নানা শ্রেণীর, পেশার, বর্নের, ধর্মের। সবাই ছুটে যাচ্ছেন নিজের প্রাণ বাঁচাতে, ভয় থেকে পালিয়ে বাঁচতে; সেই ভয়ের নাম হানাদার বাহিনী। বাড়িঘর, প্রিয়জনের লাশ পেছনে ফেলে জায়গা করে নিয়েছেন একটা নৌকায়- এমনই একটা গল্প ‘শ্যামল ছায়া’র। দেশজুড়ে যুদ্ধ, গণহত্যা চালাচ্ছে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী, তাদের সাহায্য করছে এদেশীয় কিছু দোসর- আর তাদের বর্বরতা থেকে বাঁচতে নৌকায় করে আজ এখানে, কাল ওখানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন একদল মানুষ। মনে অজানা শঙ্কা, দুচোখে শ্যামল ছায়ার স্বপ্ন। সেখানে মানুষের মানুষে ভেদাভেদ আছে, ধর্ম-বর্নের দূরত্ব আছে, কিন্ত দিনশেষে তারা সবাই বাংলাদেশী, সবার লক্ষ্য উদ্দেশ্য একটাই- প্রাণ নিয়ে মুক্তাঞ্চলে পৌঁছানো। নদীতে ভেসে যাওয়া লাশের সারিতে হুমায়ূন দেখিয়েছেন পাকিস্তানীদের বর্বরতার নমুনা, সম্মুখযুদ্ধের দৃশ্যে দেখিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব। অস্কার প্রতিযোগীতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিল শ্যামল ছায়া সিনেমাটা। 
 
‘নয় নম্বর বিপদ সঙ্কেত’কে হুমায়ূন আহমেদ নিজেই বলেছেন অনর্থক সিনেমা। সত্যিই, হাস্যরসের যোগান দেয়া ছাড়া এই সিনেমার আর কোন অর্থই নেই। একটা পরিবারকে নিয়ে গল্প, পরিবারের কর্তা নিজের একাকীত্ব দূর করতে মিথ্যে মৃত্যুসংবাদ দিয়ে ডেকে আনেন তার ছেলেমেয়েদের। এরপর ঘটতে থাকে নানা রকমের মজার ঘটনা- এইটুকুই যথেষ্ট সিনেমাকে বর্ণনা করার জন্যে। পুরো সিনেমার শুটিং হয়েছে নুহাশপল্লীতে, দর্শকেরা হুমায়ূনের সৃষ্ট এই নন্দন কাননের সৌন্দর্য্য উপভোগ করেছেন টিভি পর্দায়।

‘আমার আছে জল’ও বিশেষ কোন কাজ নয়, অন্তত হুমায়ূন আহমেদের নামের বিবেচনায় তো নয়ই। বিদ্যা সিনহা সাহা মিমের অভিষেক হয়েছিল এই সিনেমা দিয়ে, বলার মতো কিছু করতে পারেননি তিনি। রোমান্টিক ট্র্যাজেডি ঘরানার উপন্যাসটার আবহ পাওয়া যায়নি সিনেমায়, জাহিদ হাসান, ফেরদৌস কিংবা শাওনের মতো সিনিয়র অভিনয়শিল্পীরাও মনে ছাপ ফেলার মতো কিছু করে দেখাতে পারেননি। 
 
এরপর ঘেঁটু পুত্র কমলা। হাওড় অঞ্চলের ইতিহাসের এক কদর্য অতীত হুমায়ূন আহমেদ তুলে এনেছিলেন সেলুলয়েডে। প্রায় দেড়শো বছর আগে, হাওড় অঞ্চলে গানের আসরে সুন্দর চেহারার কিছু কিশোরকে নারীদের পোষাক পরিয়ে উপস্থাপন করা হতো, এদেরকে বলা হতো ঘেটু পুত্র। সেকালের জমিদারেরা আমদ-ফুর্তির জন্যে যৌন সংসর্গে লিপ্ত হবার বাসনায় এসব ঘেটু পুত্রদের নিয়ে আসতেন বিভিন্ন বৈষ্ণব আখড়া থেকে। জমিদারের স্ত্রীরা আবার এদেরকে দেখতেন সতীন হিসেবে।

হুমায়ূন আহমেদ

এমনই এক ঘেটু পুত্র কমলাকে নিয়েই সিনেমার গল্প, হুমায়ূন আহমেদের মতে, তার পরিচালিত সবচেয়ে ম্যাচিওর সিনেমা ‘ঘেটুপুত্র কমলা’। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে আমেরিকা ছাড়ার আগে এই সিনেমার প্রিমিয়ারে হাজির হয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। এই সিনেমার জন্যে সেরা পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি। এটাই শেষ, এরপর আর ক্যামেরার পেছনে দাড়ানোর সুযোগ হয়নি তার, পরম করুণাময় তাকে সেই সুযোগ বা সময় কোনটাই দেননি, মানুষটাকে নিয়ে গেছেন নিজের সান্নিধ্যে। 
 
হুমায়ূনের সিনেমায় মুক্তিযুদ্ধ এসেছে বারবার, বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই অধ্যায়টা তাকে ভাবিয়েছে নিরন্তর, তার পাশাপাশি এসেছে মানুষ আর মানবতার গল্প; সেটা ‘আগুণের পরশমনি’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, কিংবা ‘শ্যামল ছায়া’র যেকোন চরিত্রের মাধ্যমেই হোক না কেন। তিনি তুলে এনেছেন বাংলার ঐতিহ্য, বাংলার গান। লোকগীতিকে অন্তরে ঠাঁই দিয়েছিলেন তিনি, সেই লোকগীতি স্থান করে নিয়েছে তার সিনেমার চরিত্রগুলোর মুখেও, প্রখ্যাত সব শিল্পীদের কণ্ঠে। পাশাপাশি এসেছেন নজরুল, রবীন্দ্রনাথও। হাস্যরস কিংবা ভালোবাসার একটা গল্পের মাঝখানেও হুমায়ূন আমাদের অতীত শেকড়টাকে জানান দিতে ভোলেননি কখনও। 
 
অর্থের দাবী মেটাতে যিনি লেখক থেকে পরিচালক বনে গিয়েছিলেন, সেই তিনিই নিজের লেখা উপন্যাসগুলোকে চিত্রায়িত করেছেন রূপালী পর্দায়, আমাদের ভালোবাসার চরিত্রগুলোকে কল্পনার রাজ্য থেকে তুলে এনেছেন বাস্তবে, চোখের একদম সামনে। লেখক হুমায়ূনের মতো অতটা প্রভাবশালী হয়তো চিত্রপরিচালক হুমায়ূন আহমেদ নন, কিন্ত আপন প্রতিভার উজ্জ্বল আলোকচ্ছ্বটায় এই জগতটাকেও রাঙিয়ে দিতে কার্পণ্য করেননি তিনি একটুও। মাঝেমধ্যে তো মনে হয়, কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ নামক সূর্যের কারনে পরিচালক হুমায়ূন আহমেদ অমিত প্রতিভাশালী হয়েও আড়ালেই থেকে গেলেন, ক্যামেরার পেছনে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই নির্মাতার দুর্দান্ত ভূমিকা নিয়ে সেভাবে গবেষণা হলো না, যতটা হওয়া উচিত ছিল...

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা