বাণিজ্য মেলা, ক্লোন হাজির বিরিয়ানি ও রাফসান দ্য ছোটভাই!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

প্রতি বছর প্রতি বছর বানিজ্য মেলায়, শুধুমাত্র খাবার দিয়ে এসব ধান্দাবাজেরা লুট করছে কোটি কোটি টাকা। ভোক্তা অধিকারের ‘ভ’ টাও মানেন না এরা। প্রতিবাদ করলেই বাজে ব্যবহার করেন, হুমকি ধামকিসহ দোকান থেকে বের করে দেন।
কেউ বলে, ৫০০ টাকার অচল মাল সাড়ে ৪০০ টাকায় কেনার জন্য আরো ৫০০ টাকা খরচ করে সারাদিন মাটি করাকে বাণিজ্য মেলা বলে। আবার কেউ বলে, অনেকের নাকি জন্মই হয়েছে বাণিজ্য মেলার ডিসকাউন্টে বিস্কুট কেনার জন্য। এর সবই গুজব, বাণিজ্য মেলা বলতে আসলে কিছুই নেই, সবই হাজির বিরিয়ানি বিক্রির ধান্দা। বিরিয়ানি দিয়ে ইরানি প্রোডাক্ট বানানো গেলে এরা সেগুলাও বানিয়ে বিক্রি করতো। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এসব হাজির বিরিয়ানিতে ফুচকা, মাছ ভাঁজা থেকে শুরু করে কফি পর্যন্ত সবই পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে ক্লোন হাজির বিরিয়ানির একজন বলেন ‘প্রতি বছর ১০ লাখ লোক হজ করে, সবার নামের মধ্যেই হাজি আছে। কোনটা নকল, কোনটা আসল বুঝবেন কী করে?’
হজ করলেই কি হাজির বিরিয়ানির কপিরাইট কিনে ফেলা যায়? ব্যাপারটা কি এতোটাই ঠুনকো? খেলাধুলা কিংবা রাজনীতিতে মিশিয়েও এদের মন ভরেনি? শেষমেশ বিরিয়ানিতেও ধর্ম মিশানো লাগলো? সত্যি সেলুকাস! কী বিচিত্র এ দেশ। তারচেয়েও বিচিত্র এদেশের ধর্মব্যাবসায়ীদের ভাবনা। বাণিজ্যমেলার ব্যবসায়ীরা একেকজন জ্বলন্ত অলিল। তাদের কাছে ‘আনপসিবল’ কিছুই না। সারা বছরের অচল মাল তারা মেলা বসিয়ে চড়াদামে বিক্রী করে। সাথে একটা কিনলে দশটা ফ্রি টাইপ প্রতারণা তো রয়েছেই। আর আমরাও ভিড় জমিয়ে লাইন ধরে ধরে এসব কিনে আনি। আলাদিনের জাদুর প্রদীপ ডিসকাউন্টে বিক্রি হলেও মানুষ এভাবে লাইন ধরবে না, যেভাবে বাণিজ্য মেলায় গিয়ে ধরে।

প্রতি বছর বাণিজ্য মেলায়, শুধুমাত্র খাবার দিয়ে এসব ধান্দাবাজেরা লুট করছে কোটি কোটি টাকা। ভোক্তা অধিকারের ‘ভ’ টাও মানেন না এরা। প্রতিবাদ করলেই বাজে ব্যবহার করেন, হুমকি ধামকিসহ দোকান থেকে বের করে দেন। এদের খাবার আসে বলিউড থেকে আর খাবারের দাম আসে হলিউড থেকে। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না এদের দৌড়াত্ব। প্রতিটা বছর এক মাসের জন্য এরা ডাকাতি করার বৈধতা পেয়ে যান আয়েশ করেই। এ ব্যাপারে বাণিজ্য মেলা কর্তৃপক্ষকে কিছু জিজ্ঞেস করলেই তারা ছোটবেলার আদর্শলিপির মুখস্থবিদ্যার চর্চা শুরু করে দেন। পুরান ঢাকার নাজিরাবাজারের আদি ও আসল হাজির বিরিয়ানির সাথে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, তাদের বাণিজ্য মেলায় কোনো শাখা নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী হাজি বিরিয়ানির নাম ভাঙ্গিয়ে হরিলুট করে চলেছে প্রতি বছর।
থ্যাংক্স টু ‘রাফসান দ্যা ছোটভাই’ ফর ব্রিঙ্গিং জাস্টিজ! সম্পূর্ণ ব্যাপারটি খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন এই ফুড ব্লগার। এর আগে টেইকআউট ২.০ এর ধোঁকাবাজি ফাঁস করে দিয়েছিলেন তিনি। তার করা অনেস্ট ফুড রিভিউয়ের ভিডিও রিপোর্ট করে ডিলিট করাবার জন্যে ফ্রি খাবারের অফারও দিয়েছিলো টেইকআউট। সম্প্রতি, ‘বেস্ট এভার ফুড রিভিউ শো’ এর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ফুড ব্লগারের সাথেও কোলাবরেশন করেছেন রাফসান। খুব সহজে তার এই ব্যাপারগুলো তুলে ধরার দৃঢ়তা দেখে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ একজন আন্তর্জাতিক মানের কনটেন্ট ক্রিয়েটর পেয়েছে।