
ডোনা গিয়ে সত্যি সত্যি ক্যাফের দরজাটা বন্ধ করে দিল। সামনে দৈত্য, হাতে বিশাল ছুরি, আমার দিকে তাকিয়ে ফোঁস ফোঁস করছে! আমি একপা-দুপা করে পেছনে সরতে লাগলাম, আর মনে মনে দোয়া-দরুদ পড়ছি। কিন্তু সরবো কোথায়, দরজাটা যে বন্ধ!
“তো তুমিই সেই লোক যে চিকেন পিৎজ্জ্বা চাইছো?” বয়স ৬৫ এর কম না । ভাঁজ করা চামড়ায় দেখতে বুড়োই, কিন্তু দৈত্যের মতো ইয়া দশাসই শরীর। লম্বায় আমার চাইতে অন্তত একহাত উঁচু। লালচে মুখে একরাশ গোঁফ-দাঁড়ি। গায়ে শেফ এপ্রোন পরা। হাতে মাংশ কাটার বিশাল একখানা চপার নাইফ, অনেকটা আমাদের মাংশ কাটার ‘কোবা’র মতো। আমি কিছুটা দো-মনো করেই উত্তর দলাম “হুম, আমিই চেয়েছি। আছে তোমাদের?”
এইবার দৈত্যটা রীতিমত চোখ বড় বড় করে ফোঁসফোস নিঃশ্বাস ফেলা শুরু করল। ছোট্ট ক্যাফের ভেতর তার নি:শ্বাসের শব্দে ছোটখাট ঝড় ওঠার মতো অবস্থা! হাতে থাকা চপার ছুড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বলল “ডোনা, ভাল করে দরজার খিল এটে দাও। আমি এই ব্যাটাকে আজ জনমের মতো চিকেন পিৎজ্জ্বা খাওয়াচ্ছি।”
এইবার সত্যি সত্যি ভীষণ ভয় পেলাম! ইতালির মাফিয়াদের কথা কে না জানে। কী অবলীলায় ওরা মানুষ মেরে নদীতে ফেলে দিয়ে বীয়ার খেতে খেতে বাড়ি গিয়ে নাক ডেকে ঘুম দেয়, সেই গল্পও কম পড়িনি। নিজের অজান্তে তাঁদেরই কারো সামনে পরে গেলাম কি না ভাবতেই আমার গলা শুকিয়ে এল।
মাত্র ঘন্টা দুয়েক আগে মিলানে নেমেছি। ইতালিতে প্রথমবার আসা। হোটেলে চেক-ইন করে ব্যাগপ্যাকটা রেখেই ক্যামেরা হাতে নেমে পরেছি। উদ্দেশ্য মিলানের বিখ্যাত গির্জা ডুমো দেখা। তবে তারও আগে সেই ছোট্ট বেলায় কার্টুনে দেখা অনেক আশার ‘পিৎজ্জ্বা’ খাওয়া। মিলানের অলিগলি পেরিয়ে ডুমো'র দিকে হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ল ছোট্ট একটা ক্যাফে- সামনে দুটো টেবিল আর খান কতক চেয়ার পাতা, উপরে এলানো ছাউনি আর উজ্জ্বল রঙয়ের কাঠের দরজায় ঘন্টা লাগানো- ঠিক আঁকা ছবির মতো; ভাবলাম ইতালির মাটিতে বসে ইতালিয়ান পিৎজ্জ্বার প্রথম স্বাদটা এই ক্লাসিক ইতালিয়ান ক্যাফেতেই নেয়া যাক। সেই আশাতেই ছোট্ট এই ক্যাফেতে ঢোকা।
ঢুকে দেখি ভেতরটা টাটকা কফির ঘ্রাণে মৌ মৌ করছে কিন্তু কাউন্টারে দাঁড়ানো মেয়েটি ছাড়া ভেতরে আর কেউ নেই । তার কাছেই চাইলাম আমার অনেক স্বপ্নের 'পিৎজ্জ্বা'। ভ্রু কুঁচকে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে সে পাল্টা জিজ্ঞাসা করল সত্যিই কি আমি পিৎজ্জ্বা চাইছি কি না? একটু অবাক হলেও ভাবলাম বোধকরি আমার ইংরেজী পুরোপুরি বুঝতে পারেনি। সাধারণ ইতালীয়ানদের মধ্যে ইংরেজী বোঝা এবং বলার লোক খুবই কম। তাই থেমে থেমে পরিষ্কার করে আবারও বললাম 'হ্যাঁ, পিৎজ্জ্বাই চাইছি এবং চিকেন পিৎজ্জ্বা, হ্যাম কিংবা ভেজিটেবল নয়। আছে তোমাদের?"
মেয়েটি কয়েক সেকেন্ড চোখ বড় করে তাকিয়ে রইল আমার দিকে। তারপর ঝট করে কাউন্টারের পেছনের দরজা দিয়ে ভেতরে চলে গেল। কয়েক মুহূর্তপরেই আবার উদয় হল। সাথে এই দৈত্যখানা! তারপরেই সেই দৈত্যের সাথে আমার উপরের কথোপকথন।
ডোনা গিয়ে সত্যি সত্যি ক্যাফের দরজাটা বন্ধ করে দিল। সামনে দৈত্য, হাতে বিশাল ছুরি, আমার দিকে তাকিয়ে ফোঁস ফোঁস করছে! আমি একপা-দুপা করে পেছনে সরতে লাগলাম, আর মনে মনে দোয়া-দরুদ পড়ছি। কিন্তু সরবো কোথায়, দরজাটা যে বন্ধ!
সে আবার বলল "তোমার সাহস তো কম না। তুমি মিলানে এসে পিৎজ্জ্বা খেতে চাইছ। তার উপর আবার বলছ চিকেন পিৎজ্জ্বা!"
আমি মনে মনে আতিপাতি করে খুঁজেও বুঝে উঠতে পারলাম না মিলানে এসে ‘চিকেন পিৎজ্জ্বা’ চাওয়াতে অপরাধটা কী করেছি ! তবে সেটি না বুঝলেও এই ‘সাংঘাতিক অপরাধে' একমাত্র পৈতৃক প্রাণটা যে বেশ একটা সংকটে পরে গিয়েছে, তা ঠিকই ততক্ষণে হাড়ে হাড়ে বুঝে গেছি।
মরিয়া হয়ে বললাম "দেখো, আমি আজই এই প্রথমবারের মতো ইতালীতে এসেছি। মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে নেমেছি। তোমাদের নিয়ম কানুন এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারিনি। যদি অনিচ্ছাকৃত কোন অপরাধ করে থাকি, তবে এবারের মতো মাফ করে দাও দয়া করে।"
"পিৎজ্জ্বা খেতে চাও না ? তোমার চিকেন পিৎজ্জ্বা ?"
"না না ।" জোরে জোরে মাথে নেড়ে বললাম । "প্রশ্নই আসে না । আমাকে যদি এবারে মতো দয়া করে ছেড়ে দাও তবে খালি মিলানে কেন, বললে পৃথিবীর কোথাও, এমনকি নিজের দেশে ফেরৎ গিয়েও জীবনে আর পিৎজ্জ্বা থেতে চাইব না । এই কথা দিচ্ছি ।"
পাথরের দেয়ালে ছোট্ট একটা ফাটলের মতো গোঁফের ফাঁকে ছোট্ট একটা হাসির আভাস দেখলাম মনে হলো। কয়েক সেকেন্ড আমার কাঁচুমাচু চেহারার দিকে তাকিয়ে হা হা করে ঘর কাঁপিয়ে উঠলো দৈত্যটা! দেখলাম ডোনাও হেসে কুটিকুটি। বোকা বোকা চেহারা নিয়ে আমি চেয়ে রইলাম দুজনের দিকে। হাসব না কি করব তখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।
কাছে এসে ঘাড়ে এক বিশাল থাবা মেরে বুড়ো বলল "তোমার হাতে ক্যামেরা দেখেই বুঝতে পেরেছি তুমি ট্যুরিস্ট। তাই একটু দুষ্টুমী করলাম আর কি। তুমি এত ভয় পেয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।"
ইতালিয়ানরা রসিক তা জানতাম, কিন্তু সেদেশে পা দিয়েই নিজে যে এরকম প্র্যাকটিক্যাল একখানা জোকের কবলে পরে যাব তা কে জানত?
এবার বুড়ো বলল "শোনো, আমরা মিলানিজরা পিৎজ্জ্বা জিনিষটাকে একদমই পছন্দ করি না। ওটা নেপলসের ছোটলোকদের খাবার। তাছাড়া, একতাল ময়দার উপর মাংস-সব্জী রেখে পোড়ানো। এতে মজারই বা কি আছে আমি বুঝিনা! খাবেই যখন ভাল কিছু খাও। সত্যিকারের ভদ্রলোকদের খাবার। এই যেমন রিসোত্তো, ভিয়েল, কলেত্তা.....। তা না, তোমরা ট্যুরিস্টরা মিলানের মতো ভদ্রলোকের শহরে এসে খুঁজবে ছোটলোকের পিৎজ্জ্বা। গা জ্বলে যায়!"
এতক্ষণে রাগের কারণটা বুঝলাম। পিৎজ্জ্বা আসলে দক্ষিন ইতালির খাবার, বিশেষত: নেপলসের। ওখানেই গরীর মানুষের খাবার হিসেবে পিৎজ্জ্বার সূত্রপাত। তারপর ঘটনাচক্রে রানী মার্গারিটার হাত ধরে প্রথমে অভিজাতদের ঘরে ঢোকা, পরিবর্তিতে আমেরিকান ব্যবসায়িদের হাত ধরে পুরো পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে পরা। কিন্তু খোদ ইতালিতেই, বিশেষত উত্তর দিকে এখনও পিৎজ্জ্বাকে ঠিক অভিজাত খাবার হিসেবে ধরা হয় না। তাই মিলানিজদের কাছে পিৎজ্জ্বা, যাকে বলে চক্ষুশূল।
যা হোক এরপর বুড়ো বলল "পিৎজ্জ্বা আমাদের কাছে নেই। তবে তার চাইতে ভাল জিনিষ আছে। বসো, দিচ্ছি। খেয়ে দেখ।” বাইরে রাখা ট্যারেসে গিয়ে বসলাম। একটু পর ডোনা নামের মেয়েটি প্লেটে করে কিছু একটা দিয়ে গেল। দেখতে অনেকটা প্যাটিসের মতো। ভেতরে টার্কির মাংশ দেয়া। সাথে কী যেন একটা পাতা আর সাদা ক্রীম। পাঠকদের জন্যে ছবিটি দিলাম, চিনতে পারলে আমাকে জানাবেন।

একটু পর বুড়ো নিজেই এল হাতে কফির কাপ নিয়ে। বলল "কফির পয়সা দিতে হবে না। ঠাট্টা করে তোমাকে ভয় পাইয়েছি বলে এটি তোমার জন্য আমার পক্ষ থেকে complimentary। এখন বল তো যে খাবারটি দিলাম সেটি কেমন লাগল?"
সত্যি কথা বলতে বস্তুখানা খেতে অসাধারণ কিছু না। বরং স্মোক টার্কির কেমন যেন একটা প্রায় কাঁচা কাঁচা গন্ধও আসছে। কিন্তু একটু আগেকার অভিজ্ঞতার পর আমার ঘাড়ে ক'টা মাথা আছে যে সেটি এই লোককে বলার ঝুঁকি নেব! খারাপ কিছু বললে নির্ঘাত আবার ক্ষেপে উঠবে। তাই মাথা ঝাঁকিয়ে মুখে একগাল হাসি এনে বললাম "অসাধারণ! এত মজার কোন ইতালিয়ান খাবার আগে কখনও খাইনি। আসলেই পিৎজ্জ্বার চাইতে হাজারগুণে ভাল। মিলানিজদের রুচি আছে বলতে হয়!”
আমার প্রশংসায় খুশী হয়েই কি না দাঁড়ি-গোঁফের ফাঁকে বিরাট এক হাসি এনে বুড়ো বলল, "শোনো, তোমাকে একখানা টিপস্ দেই। যতদিন ইতালিতে আছো কোথাও মুরগীকে চিকেন বলবে না। বলবে 'পোলো (Pollo)'। চিকেন ইংরেজী শব্দ। আমরা ইংরেজী পছন্দ করি না। তেমন বুঝিও না। চিকেন বললে বরং লোকে তোমাকে বিদেশী বলে ঠকিয়ে যাবে।"
কফি খেয়ে, মুখ মুছে, বুড়োর সাথে হাত ঝাঁকিয়ে বের হয়ে আসলাম। মনে মনে ভাবলাম কি ভীষণ শিক্ষা হলো!
এই ব্যাপারটা পরের কদিনে আরও টের পেয়েছি। ইতালীয়ানদের ভেতর আঞ্চলিক ভেদাভেদ প্রবল। উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম কিংবা মধ্য ইতালি জুড়ে পোশাক-আশাক, খাবার-দাবার এমনকি বিয়ে কিংবা প্রার্থনার রীতিতেও ভিন্নতা আছে। সবচেয়ে বেশী যেটি আছে সেটি হচ্ছে মানসিক ভিন্নতা। প্রতিটা এলাকার লোকেরাই মনে করে তারাই অন্যদের চাইতে সেরা, উন্নত, সংষ্কৃতিমনা, বুদ্ধিমান।
যেমন খাবারের কথাই ধরা যাক! উত্তর-পশ্চিমের শহর মিলানের লোকেরা রিসোত্তো, ভিয়েল বলতে পাগল। ওদিকে নেপলসের দিকে আবার পিৎজ্জ্বার জয় জয়কার! অন্যদিকে রোমে গেলে মনে হয় যেন পাস্তার রাজ্য। এলাকা ভেদে স্বাদের ভিন্নতা অনেক দেশেই আছে। কিন্তু ইতালিতে ব্যপারটা একটু বাড়াবাড়ি রকমের। নিজেদের এলাকার খাবার তো এরা পছন্দ করেই কিন্তু সমস্যা হলো অন্য এলাকার খাবার এরা রীতিমত ঘৃণা করে। চাইলে এমনকি রেগেও যায়। মিলানের পর রোমে গিয়ে 'লাজানিয়া' চেয়ে আবারও এক ঝাড়ি খেয়েছিলাম। মহা বিপদ! যন্ত্রণা এড়াতে শেষে রেস্টুরেন্টে গিয়ে ওয়েটারকেই জিজ্ঞাস করতাম "তোমার রেকমেন্ডেশন কী?"
এই আঞ্চলিক ভিন্নতার কারণটাও আসলে ওদের ইতিহাসের ভেতর গাঁথা। ইতালি কিন্তু কারও সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়নি। ইতালির কোন স্বাধীনতা দিবস নেই। বরং ইতালিতে যেটি রয়েছে সেটি হচ্ছে 'একত্রিকরণ দিবস' বা ‘Unification Day। কারণ, ইতালি রাষ্ট্রটি আসলে তৈরী হয়েছিল কতগুলো ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য জোড়া লাগার মাধ্যমে।
সেই তিন হাজার বছর আগে থেকেই মেডিটেরিয়ান অঞ্চলে নগরভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার চল শুরু হয়। রোম সাম্রাজ্যের শুরুও ঠিক এরকমই একখানা ছোট্ট নগররাষ্ট্র থেকেই। এক সময় রোমের অধীনে পুরো ইতালী সহ চেনাজানা পৃথিবীর একটা বড় অংশ এক সাম্রাজ্য হয়ে থাকলেও রোম সাম্রাজ্যের পতনের পর আবার শুরু হয় ভাঙ্গন। তৈরী হয় অনেকগুলো ছোট ছোট নগররাষ্ট্রের- তুরিন, ফ্লোরেন্স, রোম, মিলান, নেপলস্, সিসিলি, পোপের অধীনে থাকা পবিত্র রাজ্য। ইতালিকে একক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা শুরু হয় ১৮১৫ সালে। নানা ঘটনা আর দেশে-বিদেশে নানান জনের দীর্ঘ ৫৫ বছরের চেষ্টার পর অবশেষে ১৮৭০ সালে 'ক্যামিও ক্যাভোর' আর 'জিউসেপ গরিবল্ডি'র নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় পূর্ণাঙ্গ এক নতুন রাষ্ট্র- ইতালি ।
কিন্তু ইতালিয়ানদের মনের গভীরে এখনও নিজ নিজ আঞ্চলিক নগররাষ্ট্রের আভিজাত্য আর শ্রেষ্ঠত্ব রয়ে গিয়েছে ভালভাবেই। তাই শুধু যে ওরা নিজ নিজ এলাকার খাবারকে সবচেয়ে সেরা মনে করে তাই নয়, সাথে সাথে অন্য এলাকার খাবারকে ভীষণরকম অবজ্ঞাও করে। সুতরাং, এক এলাকায় গিয়ে আরেক এলাকার খাবার চাইলে বিপদ!
ইতালিয়ানদের মনের গভীরে থাকা এই পার্থক্যের কথা আমার ট্রিপের শেষদিকে রোমের এক ক্যাফেতে বসে মাত্রই পরিচয় হওয়া এক বুড়ো চমৎকার করে বলেছিল "শুধু তোমরা, মানে বিদেশিরাই আমাদেরকে ইতালিয়ান বল। আসলে তো আমরা মোটেও ইতালিয়ান নই।”
“তাহলে কী তোমরা?”– অবাক আমার প্রশ্ন ছিল।
“আমরা আসলে হয় ফ্লোরেন্তাইন, নয়তো রোমান, না হয় মিলানিজ-তুরিনো-নেপলিজ। আমরা শুধু ইতালিয়ান হই প্রতি চার বছরে একবার।"– বুড়ো জবাব দিল।
"কখন?" সাথে সাথেই জিজ্ঞাসা করেছিলাম।
মগে থাকা কাপুচিনোর শেষটুকু গলায় ঢেলে চেয়ার ছেড়ে উঠতে উঠতে বুড়োর উত্তর ছিল- “বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার সময়।"
আরও পড়ুন- গরীবের খাবার পিৎজ্জার জাতে ওঠার গল্প!