রোগী ডাকলেই জেট স্যুট পরে ডাক্তার পৌঁছে যাবেন রোগীর কাছে, উড়ে উড়ে! সিনেমার দৃশ্য নয়, পুরো ব্যাপারটাই বাস্তব। এই জেট স্যুট প্যারামেডিক স্বাস্থ্যখাতে নতুন একটা বিপ্লব ঘটাতে যাচ্ছে, লিখে রাখুন...

প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সাথে আমরা আমাদের চারপাশে আবিষ্কার করেছি নানারকম কনসেপ্ট। এখনও করছি। প্রতিনিয়তই করছি। চর্মচক্ষে খুঁজে পাওয়া সেসব আবিষ্কারের সবগুলোই যে বেশ দৃষ্টিগ্রাহ্য, এরকম কথা বুকে হাত দিয়ে কেউই হয়তো বলতে পারবো না। তবে এটাও ঠিক, প্রযুক্তির বদৌলতে মানুষের অবস্থান পৌঁছে গিয়েছে ঈর্ষাজনক বিভিন্ন দূরত্বে। সেই প্রযুক্তিগত উৎকর্ষেরই এক গল্প বলবো আজ।

তার আগে একটা প্রেক্ষাপট ভাবা যাক। প্রেমিক-প্রেমিকার গদগদ প্রেমের ভাষায় আমরা অনেকবারই এরকম কথাবার্তা শুনেছি-

আমাকে মনে পড়লে বারান্দায় গিয়ে শুধু একবার আমার নাম ধরে ডেকো। আমি উড়ে উড়ে পৌঁছে যাবো তোমার কাছে...

বাস্তবে কোনো প্রেমিক এভাবে উড়ে উড়ে প্রেমিকার কাছে পৌঁছাতে পেরেছিলো কী না, সে তথ্য জানা নেই আমাদের। তবে যুক্তরাজ্যে ডাক্তাররা এখন থেকে ঠিকই উড়ে উড়ে রোগীর কাছে পৌঁছে যাবেন বলে বদ্ধপরিকর।  না, আরব্যোপন্যাসের সেই জাদুর গালিচার আষাঢ়ে গল্প নিয়ে আসিনি মোটেও। সত্যিই বলছি। পৃথিবীর সর্বপ্রথম 'জেট স্যুট  প্যারামেডিক' প্রকল্পের একটা সফল টেস্ট হয়েও গিয়েছে সম্প্রতি। যেখানে রোগী ডাকলেই ডাক্তার জেট স্যুট পড়ে উড়ে উড়ে পৌঁছে যাবে রোগীর কাছে, সেবা দেয়ার জন্যে।

দ্য গ্রেট নর্থ এয়ার এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস (জিএনএএএস) নামের এক প্রতিষ্ঠান  তাদের এই অন্যরকম প্রকল্পের পরীক্ষামূলক এক মহড়া করেছে ব্রিটেনের লেক ডিস্ট্রিক্ট ন্যাশনাল পার্কে সম্প্রতি। এবং তারা সফলও হয়েছেন। ব্রিটেনের অনেক জায়গা এরকম আছে, যেখানে মানুষ অসুস্থ হলে খুব সহজে চিকিৎসাসেবা নিয়ে পৌঁছানো যায় না। তাদের কথা ভেবেই এই উদ্যোগের কথা প্রথম ভেবেছিলো জিএনএএএস। এবং পরীক্ষামূলক মহড়ায় সাফল্যও পেয়েছে তারা। পঁচিশ মিনিটের দূরত্ব অতিক্রম করা যাচ্ছে মাত্র নব্বই সেকেন্ডে!

ডাক্তাররা এভাবেই উড়ে উড়ে চলে যাবেন রোগীর কাছে!   

এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে, চিকিৎসাক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হওয়ার পরেও সঠিক সময়ে সঠিক সেবা না পাওয়ার কারণে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী মারা যান অনেক রোগী। এই 'জেট স্যুট প্যারামেডিক' হয়তো শুনতে আমাদের কাছে বেশ হাস্যকরই মনে হচ্ছে। হয়তো রাস্তায় এরকম দুয়েকজন ডাক্তারকে উড়তে দেখলে আমরা হাসবোও। তবে এটাও ঠিক, এই উদ্যোগের কারণে, সময়ের রকমফেরে হয়তো বেঁচে যাবে অনেক মানুষের জীবন।

স্বার্থকতা তো সেখানেই। এবং সে সাথে এটাও বলার- এই পরিকল্পনাকে যদি জনকল্যানের অন্যান্য ক্ষেত্রেও সরবরাহ ও ব্যবহার করা সম্ভব হয়, তাহলে অবস্থান ও সময়-সৃষ্ট  দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে। মানুষের জন্যে যেটি হবে অভূতপূর্ব এক উন্নয়ন।

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা