সীতাকুন্ডে এখন ট্র্যাকিং করতে যান অনেকেই। আপনারা কি জানেন, আমাদের জাতীয় কবিও দলবল নিয়ে একবার চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠেছিলেন! জোঁকের অত্যাচারে তাকে কাঁধে চড়িয়ে পাহাড় থেকে নামাতে হয়েছিল!
আজকাল তো সবাই সীতাকুন্ডে যান ট্রেকিং করতে, আজ থেকে ৯০ বছর আগে কাজী নজরুলও গিয়েছিলেন। ১৯২৯ সালের জানুয়ারিতে কাজী নজরুল সীতাকুন্ডে বেড়াতে আসেন। দলবল নিয়ে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে উঠেন, ঝর্ণায় গা ভেজান। ঝর্ণার পাশে বসে পোজ দিয়ে ছবিও তুলেন। ট্রেন থেকে নেমে সীতাকুন্ড রেলস্টেশনের পুব দিকের চন্দ্রনাথ রেঞ্জের দিকে তাকিয়ে মুখে মুখে গেয়ে উঠেছিলেন তাঁর সেই বিখ্যাত গান, "আকাশে হেলান দিয়ে, পাহাড় ঘুমায় ঐ!"
মজার ব্যাপার হচ্ছে এত বড় বিদ্রোহী কবি ছিলেন জোকের ভয়ে কাতর। কয়েকবার জোঁকের আক্রমণের শিকার হবার পর তিনি এতোটাই ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন যে শেষে ফেরার পথে তাঁকে কয়েকজন ভ্রমণসঙ্গী মিলে কাঁধে চড়িয়ে পাহাড় থেকে নামান।
চন্দ্রনাথ ভ্রমণ শেষে কবি সাম্পানে চড়ে সন্দ্বীপ বেড়াতে যান। 'বাতায়ন পাশে গুবাক তরুর সারি', ‘গোপন প্রিয়া’, ‘শারাবান তহুরা’, 'দূর দ্বীপবাসিনী' প্রভৃতি মাষ্টারপিস সে সময়েই লেখা।
চট্টগ্রামে কর্ণফুলী, পতেঙ্গা, রাউজান, কাট্টলী, হাটহাজারীসহ বহু জায়গায় বেড়ান নজরুল। থাকতেন তামাকুমন্ডিলেনস্থ বন্ধুর বাসায়। সিন্ধু হিন্দোল রচনার শুরু পতেঙ্গা সৈকতে।
৯০ বছর আগে সীতাকুন্ডের পাহাড়ে গায়ে আলখেল্লা জড়ানো নজরুলের বেশভূষা ও ব্যাকগ্রাউন্ডের ঝর্ণাটি খেয়াল করুন। দেখুন নজরুল যে পাথরটিতে বসে আছে সেটি। লক্ষ্য করতে ভুলবেন না আশেপাশের প্রকৃতি, পাথরে জন্মানো উদ্ভিদরাজি। স্থানটি কি কেউ শনাক্ত করতে পারছেন?
অবিনাশী প্রকৃতির মত নজরুলও স্বমহিমায় নিজেকে চিরস্মরণীয় করে রেখে গেছেন! নজরুলের আজ ১২১ তম জন্মদিন! নজরুল ফরেভার!