কিশোর কুমার: প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই যিনি হয়ে উঠেছিলেন আস্ত একটি প্রতিষ্ঠান!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
দর্শকপ্রিয়তায় ছাপিয়ে গিয়েছিলেন সমসাময়িক সব শিল্পীকে, অভিনয়েও রাজ কাপুর, দেব আনন্দ এবং দিলীপ কুমারদের ভিড়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন ভালোভাবেই। যেদিকে হাত দিয়েছেন, সোনা ফলেছে ঠিক সেখানেই। কিন্তু সেই মানুষটিই ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন বিপর্যস্ত...
গানের রেকর্ডিং চলছে। এরমধ্যেই হালকা কথাবার্তা, হাসিঠাট্টা, খুনসুটি। যার গানের রেকর্ডিং, তিনি আবার খাতায় কী সব আঁকিবুঁকি করছেন। পেছন থেকে একজন দেখে বললেন- দাদা, গানের খাতায় এ কী আঁকিবুঁকি করছেন! হাসিমুখে বললেন, একটা কোকিল আঁকলাম শুধু। গানের এই অংশটা একটু মিষ্টি করে গাইতে হবে তো। তাই কোকিলের ছবি এঁকে দিলাম।
এরকমই খামখেয়ালি ছিলেন তিনি। খামখেয়ালির আরো গল্প আছে তাঁর। সেগুলো নাহয় পরে বলা যাবে। মানুষটির নাম- আভাস কুমার গঙ্গোপাধ্যায়। আভাস কুমার গঙ্গোপাধ্যায়'কে চিনতে পারেননি? না চেনারই কথা। আচ্ছা, আরেকটু বলি, তাঁর আরেক নাম- কিশোর কুমার। এবার চেনা চেনা লাগছে? এবার না চিনে যাবেনই বা কোথায়! জীবদ্দশায় সর্বমোট ২,৭০৩টি গান গেয়েছেন। ১১৮৮টি হিন্দি চলচ্চিত্রে, ১৫৬টি বাংলা এবং ৮টি তেলেগু ভাষায় এবং ৮ বার শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য গায়কের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছেন। তাকে কী এত সহজে ভুলে যাওয়া যায়! গানের সংখ্যা ও এ্যাওয়ার্ডের কথা নাহয় বাদই দিলাম, কোনো রকম গানের রেওয়াজ ছাড়া উঠে এসে যিনি ভারতের সঙ্গীতজগতে রাজত্ব করে গিয়েছেন বছরের পর বছর ধরে, গানের ক্ষমতায় মুগ্ধ করেছেন কাছে দূরের সবাইকে, মৃত্যুর এত বছর পরে এসে যিনি আজও প্রাসঙ্গিক- তাকে ভুলতে চাইলেও তো ভোলা যাবেনা মোটেও।
কিশোর কুমারের জন্ম ভারতের খান্ডোওয়া তে, গাঙ্গুলী পরিবারে। একটা মজার তথ্য জানানো যাক। কিশোর কুমার'রা ভাইবোন মিলিয়ে ছিলেন চারজন। পরিবারের চার সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। জন্মও ১৯২৯ সালের চার আগস্টে, বিকেল ৪টায়! ভাবুন কাণ্ড! চার নিয়ে বাড়াবাড়ি এখানেই শেষ নয়। তিনি জীবনে বিয়েও করেছেন চারটি! এবং জীবনে মাত্র চারটি বাংলা সিনেমাতেই অভিনয় করেছেন!
যাই হোক, শৈশব থেকেই বেশ ডানপিটে ছিলেন মানুষটি। পরিবারের ছোট ছেলে হলে যা হয়, বাঁদরামো'টাও করতেন সেভাবে। এভাবেই চলছিলো। এরইমধ্যে বড়দা অশোক কুমার সিনেমায় সুযোগ পেয়ে বোম্বে চলে যান। ছোট্ট কিশোর কুমারেরও তখন সিনেমায় অভিনয় করার ভূত চেপে বসে। পরিবারের বড়দের দেখাদেখি ছোটরা অনেককিছুই অনুকরণ করতে চায়। এও অনেকটা সেরকম। তাছাড়া অশোক কুমার সে সময়ে বোম্বে সিনেমায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। অশোক কুমারের দেখাদেখি কিশোর কুমারের আরেক দাদা অনুপ কুমারও পা রেখেছেন বোম্বের সিনেমা জগতে৷ কিশোর কে আর পায় কে! সেও একরকম জোরজবরদস্তি করেই সিনেমাতে অভিনয় করতে আসে।
দাদা অশোক কুমারের মাধ্যমেই মূলত বোম্বের সিনেমাজগতে ঢোকা কিশোর কুমারের। কিন্তু অভিনয়টা খুব একটা জুতসই হলো না। তবুও হাল ছাড়লেন না। বেশ কিছু সিনেমায় অভিনয়ও করেন। কিন্তু দর্শক তাকে সেভাবে ঠিক গ্রহণ করতে চায়না। তবে অভিনয়ে না হলেও তিনি জনপ্রিয় হন আরেক দিক থেকে। তাঁর অভিনয় করা সিনেমাগুলোয় তিনি নিজেই গান গাইতেন। তাঁর গানগুলো হুট করে জনপ্রিয় হয়ে যায়। প্রথম দিকে তিনি বিখ্যাত শিল্পী কুন্দন লাল সায়গলকে নকল করে গাইতেন। কিন্তু শচীন দেব বর্মন একবার ডেকে বকুনি দেন তাকে। বলেন, নিজের স্টাইলে গান করো। অন্যের স্টাইল নকল করছো কেন? সেই বকুনির পরেই নিজের গান করার কায়দা পাল্টান তিনি। এবং সেটা এতটাই ভিন্ন হয় যে, একটা ঘটনা বললে বোঝা যাবে পুরোটা।
তখন হিন্দি গানের ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর ছিলেন মহম্মদ রফি, মান্না দে, তালাত মাহমুদ। এই তিনজন বলতে গেলে ত্রিস্তম্ভের মতন আগলে রেখেছিলো ভারতীয় হিন্দি গানকে, এক সময়ে। সবাই তাদের গায়কী অনুসরণ করতো। তাদের মতই হতে চাইতো সবাই। মান্না দে বাংলা গান করতেন৷ তাই হিন্দি সব গানে তিনি সমান মনোযোগ দিতে পারতেন না। ওদিকে অধিকাংশ হিন্দি সিনেমার গানগুলোই মহম্মদ রফি করতেন। এরইমধ্যে শচীন দেবের পরামর্শে কিশোর কুমার যখন নিজের স্বকীয় একটি স্টাইল নিয়ে এসেছেন, মানুষজন তখন হুমড়ি খেয়ে পড়লো তাঁর গান শোনার জন্যে। মহম্মদ রফির কাছে গানের অফার কম আসা শুরু হলো। মহম্মদ রফি মনের কষ্ট খুলে বললেন মান্না দে'কে। জানালেন- গানের মধ্যে সুর, তাল, শিক্ষা কিছু নেই। শুধু তারস্বরে চেঁচাচ্ছে। এগুলো কোনো গান হচ্ছে, মান্নাদা? মান্না দে তখন মুচকি হেসে বলতেন, 'সবাই যদি ওর(কিশোরের) এই গানের স্টাইল পছন্দ করে নেয়, তাহলে তোমার আর আমার কী বলার থাকতে পারে? এটা স্ট্রেইট সিঙ্গিং। এটা অডিয়েন্সের ভালো লাগলে, সেটাই ক্রেডিট কিশোরের। এ নিয়ে মন খারাপের কিছু নেই।' কিশোর কুমারের প্রভাব ছিলো ঠিক এরকমই।
শচীন দেব এর কথামতন নিজের গায়কী পরিবর্তন করে তো সাফল্য পেলেন, সঙ্গীতজগতে নিজের আলাদা একটা জায়গাও তৈরী হলো। তবে তখনও সিনেমার ভূত তার মাথা থেকে নামেনি। বিভিন্ন সিনেমায় কমেডিয়ান চরিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন। এবং আশ্চর্যের বিষয়, তিনি বেশ সফলও হন। অভিনয় জগতের তিন স্তম্ভ তখন- রাজ কাপুর, দেব আনন্দ এবং দিলীপ কুমার। এদের পাশে তখন কোনো তারকাই ঠিক দাঁড়াতে পারছিল না। তবুও কীভাবে কীভাবে যেন কিশোর কুমার অভিনেতা হিসেবে আলাদা একটা শক্তস্থান তৈরী করে ফেললেন।
পঞ্চাশের দশকে তিনি গান ও অভিনয় নিয়ে তুমুল ব্যস্ত সময় পার করেন। সিনেমাতে অভিনয় করছেন, স্ক্রিপ্ট লিখছেন, প্লেব্যাক করছেন, মিউজিক ডিরেক্টর হচ্ছেন, সিনেমা প্রযোজনাও করছেন; প্রচুর কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন তিনি। ষাটের দশকে এসে তাঁর প্রযোজিত বেশ কিছু সিনেমা ফ্লপ হয়ে যায়। তিনি বুঝে যান, অন্য জায়গায় আর মনোযোগ দিয়ে লাভ নেই। গানকেই আঁকড়ে ধরতে হবে। অখণ্ড মনোযোগ দেয়া শুরু করেন গানের দিকেই। মুনিমজি (১৯৬২), গাইড (১৯৬৫) এবং জুয়েল থিফ (১৯৬৭) চলচ্চিত্র তিনটিতে তার গাওয়া গান তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় এসময়ে এসে।
নিয়মিত গান গাইছেন, গানগুলো জনপ্রিয় হচ্ছে সেগুলোতে সমস্যা নেই। কিন্তু প্রত্যেক শিল্পীরই মনের ভেতরে কোথায় যেন একটা স্বপ্ন থাকে, তাঁর গাওয়া গান সারাদেশের সব মানুষ একসাথে গাইবে। এই স্বপ্নটাই যেন পূরণ হচ্ছিল না কিশোর কুমারের। কৃপাদেবী হয়তো অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে বিষয়টি বুঝতে পেরেছিলেন। ষাটের দশকের শেষের দিকে মুক্তি পায়- আরাধনা। শক্তি সামন্ত'র সিনেমা ছিলো এটি। এই সিনেমায় কিশোর তিনটি গান গেয়েছিলেন - কোরা কাগজ থা ইয়ে মন মেরা, রূপ তেরা মস্তানা, মেরে সপনো কি রানী। তিনটি গানই সারাদেশ জুড়ে তুমুল জনপ্রিয় হয়। অনেকদিন ধরে সবাই যেন একসাথেই গানগুলোকে গেয়ে যাচ্ছিলো। এরকম হিট গানের সংখ্যা বলিউডে তখন খুবই কম। কিশোর কুমারের জনপ্রিয়তা নিয়ে যদি ছিঁটেফোঁটাও সন্দেহ বাকি থাকে, এই সিনেমার তিনটি গানের পরেই সব যেন ধুয়েমুছে যায়। রূপ তেরা মস্তানা গানের জন্য কিশোর প্রথম বারের মত 'শ্রেষ্ঠ পুরুষ নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী' বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান।
এই সাফল্যের পরেই বানের জলের মতন ভেসে আসতে থাকে কাজ। অনেকের সাথে জুটি বেঁধে কাজ করেন নিয়মিত। তবে তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছিলেন শচীন দেব বর্মণ এবং রাহুল দেব বর্মণের সাথে। তাদের সুরে অজস্র কালজয়ী গান গেয়েছেন কিশোর। রাজেশ খান্না, অমিতাভ বচ্চন সহ অনেক মেগাস্টারেরই নেপথ্য গায়ক ছিলেন তিনি। এরপর লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলাল, কল্যাণজী-আনন্দজী'র সাথে জুটি বেঁধে অনেক গান গাইলেও কিশোরের সবচেয়ে হিট জুটি ছিলো রাহুল দেব বর্মনের সাথে। শোলে, ওয়ারেন্ট, হীরা পান্না, শরীফ বদমাশ, আঁধি, রকি, কসমে বাদে, রামপুর কা লক্ষ্মণ, কালিয়া, গোলমাল সহ অজস্র হিট সিনেমার জনপ্রিয় সব গানে জুটি বেঁধেছিলেন এই দু'জন।
হিন্দি গানের জগতে তিনি ইতোমধ্যে মহীরূহ হয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তাই বলে বাংলা গানকে তিনি ভুলে গিয়েছেন বিষয়টি এরকম নয়। সত্যজিৎ রায়ের চারুলতা এবং ঘরে বাইরে'তে তিনি রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়েছেন। মহানায়ক উত্তমকুমারের বিখ্যাত সিনেমা রাজকুমারী, অমানুষ, আনন্দ আশ্রম, ওগো বধূ সুন্দরী'তে কন্ঠ দিয়েছেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, একটা বাংলা সিনেমায় তিনি নায়কের চরিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন! সিনেমার নাম লুকোচুরি। প্রসেনজিৎ এর 'অমর সঙ্গী' সিনেমার নাম মনে আছে? তাপস পালের 'গুরুদক্ষিণা'র কথা? এই দুইটা হিট সিনেমাতেও প্ল্যেব্যাক করেছিলেন তিনি। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবামও রেকর্ড করেন তিনি। যেই অ্যালবাম বেশ জনপ্রিয় হয়। এখনো মানুষ সেই অ্যালবামের প্রশংসা করেন।
যেদিকে হাত দিয়েছেন, সোনা ফলেছে ঠিক সেখানেই। কিন্তু সেই মানুষটিই ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন বিপর্যস্ত। এ প্রসঙ্গে প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জীর আত্মজীবনী 'বুম্বা, শট রেডি'র একটা প্রসঙ্গ মনে পড়ছে। প্রসেনজিৎ তিনটি বিয়ে করেছেন এ পর্যন্ত। ক্যারিয়ারে অনেক সাফল্য পেলেও ব্যক্তিগত জীবনে বেশ যন্ত্রণামুখর সময়ই কাটিয়েছেন। তিনি আক্ষেপ করে বলেছিলেন- ভগবান কাউকে একতরফা সুখ দেন না। কোথাও একটু সুখ দিলে, আরেক জায়গায় একটু দুঃখ দিয়ে ঠিকই ব্যালেন্স করে দেন। আমার জীবনটাই দেখুন না। এত সাকসেসফুল ক্যারিয়ার, অথচ আমার ব্যক্তিগত জীবনটা ট্রাজেডিতে ভরা।'
ঠিক এই বিষয়টিই যেন দেখি কিশোর কুমারের জীবনে। প্রথমে বিয়ে হলো রুমা গুহ ঠাকুরতা'র সাথে। আট বছর বিবাহিত জীবনের পরে ইতি ঘটলো। এরপর স্ত্রী হিসেবে এলেন মধুবালা। তাও বেশিদিন না। এরপরে যোগীতা বালী। যোগীতা বালীর সাথে বিয়ের দুই বছরের মধ্যেই খবর চাউর হলো, সুপারস্টার মিঠুন চক্রবর্তীর সাথে প্রেম করছেন যোগীতা বালী। পরে যোগীতা তাকে ছেড়ে বিয়ে করলেন মিঠুন চক্রবর্তীকেই। এরপর কিশোর কুমার সর্বশেষ বিয়ে করলেন লীনা চন্দাভারকর কে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি লীনার সাথেই ছিলেন। জানা যায়, শেষ বয়সে এসে খুবই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন। নিঃসঙ্গতা কাটাতে কথা বলতেন গাছের সাথে। এতটাই একা হয়ে গিয়েছিলেন।
এই লেখা এখানে শেষ করা যেতো। কিন্তু করা যাবেনা। দুঃখের ঘটনা দিয়ে শেষ করলে এ লেখা মেলানকোলিক হয়ে যাবে। সারাজীবন ধরে যিনি ছিলেন খামখেয়ালিপনার চূড়ান্ত নজির, তাকে নিয়ে নৈবেদ্যের শেষটাও কিছু অদ্ভুতুড়ে গল্প দিয়েই শেষ হোক বরং। তিনি নিজের বাসার গেটে বোর্ডে লিখে রাখতেন 'কিশোর কুমার হইতে সাবধান।' বাসায় অতিথি এলে তাদের সাথেও অদ্ভুতুড়ে আচরণ করতেন। তাছাড়া মেয়েদের কন্ঠেও গান গেয়েছেন তিনি। সলিল চৌধুরীর সঙ্গীত পরিচালনায় ‘হাফ টিকিট’ ছবিতে নারী ও পুরুষ, দ্বৈত ভূমিকার কণ্ঠে তাঁর গান তো রীতিমতো মানুষকে মুগ্ধ করেছিলো!
গান গাওয়া নিয়ে বিরক্তি ছিলোনা কোনোদিনই। যেকোনো কনসার্টেই ২৭-২৮ টা গান আগ্রহভরে গাইতেন। দর্শকেরা যেরকম আবদার করতো, সেভাবেই গাইতেন তিনি। গলার স্বরও তাজা থাকতো সবসময়েই। একই সুরে গাইতে পারতেন। গলা ভাঙ্গেনি কখনো। মান্না দে' যাকে নিয়ে বলেছিলেন- এমন সুরেলা গায়ক আমি কখনও দেখিনি। আমরা নিজের অজান্তে একটু-আধটু বেসুরো গেয়ে ফেলেছি, কিশোর কখনও নয়।
সেই মানুষটির রসবোধের কথা তো বললামই।
মৃত্যুকালেও যার রসবোধ কমেনি একটুও। ১৯৮৭ সালের ১৩ অক্টোবর, খুব সকালেই কিশোর কুমার অসুস্থ বোধ করছিলেন। উদ্বিগ্ন স্ত্রী লীনা ডাক্তার ডাকতে চাইলেন। কিশোর কুমার সে সময়েও ঠাট্টার মেজাজে বলেছিলেন 'তুমি যদি ডাক্তারকে খবর দাও, আমার কিন্তু হার্ট অ্যাটাক হবে!' কিংবদন্তি এই মানুষটি এই কথা ক'টি বলেই একেবারে চুপ হয়ে যান চিরতরে।
কোনোরকম প্রাতিষ্ঠানিক রেওয়াজ ছাড়াই যিনি নিজেই হয়ে উঠেছিলেন প্রতিষ্ঠান, যার রিহার্সাল ছাড়া গলার সুর ও স্টাইল'কে ভয় পেতো দুঁদে সঙ্গীতজ্ঞরাও, সেই মানুষটির জন্মদিন ছিলো গতকাল। জন্মদিনে বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো তার উদ্দেশ্যে।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন