দুইটা গান গেয়ে তুমি নিজেকে যে সমুদ্রের টাইটানিক ভাবছো, সেটা আসলে ছোট্ট একটা কুয়া। আর তুমি সেই কুয়ার ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, একটা পুচকা ব্যাঙ। টাইটানিকও ডুবেছিলো। তোমারো ভরাডুবি আসন্ন।

‘‘তোমাদের লেজেন্ড গত দশ বছর ধরে কয়টা ফ্লপ অথবা হিট রিলিজ করেছে কমেন্টস্ সেকশানে জানাও। থুক্কু বাংলাদেশে তো গত ১০ বছরে ভালো করে কেউ মিউজিকই করেনি। দাঁড়াও তোমার লেজেন্ডদের না হয় আমিই শিখাবো, কিভাবে ২০২০ সালে মিউজিক করতে হয়।’’

দিন পাঁচেক আগে, এভাবেই নিজের অহমিকা দেখানো শুরু করেছিলেন ফের। সমালোচনা হওয়ায় বলেছিলেন, এটা তার নতুন গানের মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি। নাম তার নোবেল। অন্যের গান কভার করে যে দম্ভ তিনি দেখিয়েছেন তাতে তাকে শিল্পী বলার কোনো ইচ্ছেই থাকে না আসলে।

সেখানেই থেমে যাননি, যে ভারতে গিয়ে জনপ্রিয় হয়েছে সেখানকার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন নিজের খেয়ালে। যে স্ট্যাটাস দিয়েও মুছে ফেলেছেন তিনি, সেখানে লেখা ছিলো-  

‘‘স্ক্যান্ডেল আমার হবে না তো হবে কার? চায়ের দোকানদার নরেন্দ্র মোদির? কে দেখবে চা-ওয়ালার স্ক্যান্ডেল? অন্যদিকে আমাকে নগ্ন দেখার মধ্যে তো বিরাট স্যাটিসফেকশন তাই না? নাহলে স্ক্যান্ডেল এতো ভাইরাল হয়?’’

মিঃ হাইজিন: জীবাণুমুক্ত হাতের প্রতিশ্রুতি

যেকোনো দেশের প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা থাকতেই পারে। তবে চা-ওয়ালা ছিলেন বলে সেটা নিয়ে গালি দেয়াটা স্রেফ রেসিজম ছাড়া আর কিছুই না। একজন চা-ওয়ালা কি মানুষ নন? চাইলেই খেটে খাওয়া যেকোনো পেশা নিয়ে যা খুশি তাই বলা যায়?

এ তো গেলো গত কয়েকদিনের কথাবার্তা। এর আগে থেকেই তিনি অহমিকার পসরা সাজিয়েছেন। বাংলাদেশের কারো সঙ্গে কখনও ডুয়েট গান করবেন না, শ্রেয়া ঘোষাল আর লেডি গাগা ছাড়া আর কারো সঙ্গে ডুয়েটে গাইতে চান না।

বাংলাদেশের লেজেন্ডদের অপমান করে দেয়া স্ট্যাটাস 

তার গানের সঙ্গীতায়োজন করার মতো প্রতিভা বাংলাদেশে নেই- নোবেলের এসব কথাবার্তাগুলো অযথা বিতর্ক উস্কে দেয়া ছাড়া আর কোন কাজেই আসেনি। নোবেল নিজেও তা জানেন জেনেশুনেই তিনি এসব বলেছেন, যাতে বিতর্ক হয়, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি থাকতে পারেন।

এর আগে নোবেল প্রিন্স মাহমুদের লেখা জেমসের 'বাংলাদেশ' গানটাকে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারতো বলে সমালোচনার মুখে পড়েছেন। জাতীয় সঙ্গীতের মতো স্পর্শকাতর ব্যাপারে যে যা খুশি তা বলা সাজে না- সেটা ভুলে গিয়েছিলেন তিনি।

জেমসের অসংখ্য গান তিনি সারেগামাপা'র মঞ্চে গেয়েছেন, কভার বানিয়ে ইউটিউবে লাখ লাখ ভিউ পেয়েছেন। সেই জেমস নাকি সারেগামাপা-তে তার কণ্ঠে গাওয়া 'পাগলা হাওয়ার তোড়ে' গানের প্রচারে বাধা দিয়েছেন! কোন প্রমাণ ছাড়াই এই অভিযোগ করেছেন নোবেল, পরেও এই সম্পর্কিত কোন প্রমাণ হাজির করেননি তিনি, অভিযোগও তুলে নেননি। 

নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে দেয়া স্ট্যাটাস

নোবেল সেখানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সিনিয়র শিল্পীদের দিকে মিথ্যে অভিযোগের আঙুল তুলে অহমিকার সাগরে ভাসছেন। গত দুই বছরে যার অর্জন কেবল দুটো মৌলিক গান, তিনি যখন যুগ যুগ ধরে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা শিল্পী-সুরকারদের অবদান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তখন অবাক হতে হয়।

আরও অবাক হওয়া লাগে, যখন নোবেল নিজেই স্বীকার করেন যে, নিজের গানের মার্কেটিং করার জন্যেই এই নোংরা খেলায় মেতেছেন তিনি! এই জঘন্য মার্কেটিং স্ট্র‍্যাটেজিটা নোবেলকে কে শিখিয়েছে সেটা জানা দরকার। তারও আগে তার মানসিক চিকিৎসা দরকার। 


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা