#NoShaveNovember বা #Noshember মুভমেন্টের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে পুরুষেরা নভেম্বরের পুরো মাস কোনোরুপ ফেসিয়াল চুল ফেলতে পারবে না। কিন্তু কেন, কী উদ্দেশ্যে পুরুষেরা এই নিয়ম মানবে?

আনিছ মাহমুদ অনিকNo Shave November, এই ওয়ার্ড তিনটিকে খুব পরিচিত লাগছে কি? লাগারই কথা। কারণ প্রতিবছর নভেম্বর মাস আসলেই ফেইসবুকের নিউজফিডে বন্ধুদের শেয়ারে ভরে উঠে 'নো শেইভ নভেম্বরের' ছবি দিয়ে এবং নভেম্বরের পুরো মাস শেইভ না করার প্রত্যয়ে। বেশিরভাগ ছেলেদের মধ্যে ব্যাপারটা সাদরে গ্রহণযোগ্য হলেও অনেক ক্ষেত্রেই অন্যদের টিপ্পনীর শিকার হতে হয়। তবে এই নো শেইভ নভেম্বরের পিছনে যে একটা মহান উদ্যোগ আছে, সেটা জানলে হয়তোবা এটা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমাদৃত হতো। 

No Shave November/Noshember মুভমেন্টের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে পুরুষেরা নভেম্বরের পুরো মাস কোনোরুপ ফেসিয়াল চুল ফেলতে পারবে না। কিন্তু কেন, কী উদ্দেশ্যে পুরুষেরা এই নিয়ম মানবে?

কারণ, Noshember মুভমেন্টের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ফেসিয়াল হেয়ারকে ইচ্ছেমতন বাড়তে দিয়ে জনে জনে ক্যান্সার সম্বন্ধে সচেতন করা, কেননা ক্যান্সার রোগীরা ক্যান্সারের কারণে চুল হারায়। এছাড়াও পুরো মাসে ট্রিমিং কিংবা শেইভিং বাবদ যে খরচ বেঁচে যায়, তা ক্যান্সার রিসার্চ করে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান অথবা চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনে দান করে দেয়ার জন্য পার্টিসিপেন্টদের উৎসাহ দেয়া হয়। নো শেইভ নভেম্বরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের চুলকে এমব্রেইস করে নেয়া, যা অসংখ্য ক্যান্সার রোগী হারায়।

Noshember মুভমেন্টটি মূলত শুরু হয় সম-ঘরানার আরেকটি মুভমেন্ট Movember-কে অনুসরণ করে। Movember শুরু হয় ২০০৪ সালে অষ্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ণে, যখন ৩০ জন পুরুষ একসাথে হয়ে ক্লিপিং, ট্রিমিং এবং স্কেলিং এর মাধ্যমে গোঁফ রেখে পুরুষের মাঝে হতাশা এবং প্রোষ্টেট ক্যান্সার এর সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দ্যেশ্য একটি ইভেন্ট খুলে। পরবর্তীতে এই যুবকদের চেষ্টা পুরো দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং তারা Movember Charity Foundation নামে পরিচিতি লাভ করে।

Movember-কে অনুসরণ করে শুরু হয় Noshember

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই চ্যারিটি অর্গানাইজেশনটি অষ্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে তহবিল সংগ্রহ করেছিল পুরুষদের মধ্যে হতাশা আর প্রোষ্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে। ২০০৭ সালে এই ইভেন্টটি আয়ারল্যান্ড, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, স্পেন, ইউকে, সাউথ আফ্রিকা এবং আমেরিকাসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত কানাডিয়ান নাগরিকরা Movember চ্যারিটি অর্গানাইজেশনের সবচেয়ে বড় দাতা ছিল। ২০১২ তে The Global Journal, Movember Charity Foundation-কে বিশ্বের শীর্ষ ১০০ টি NGO এর একটি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

এই মুভমেন্টের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পার্টিসিপেন্টরা পুরো নভেম্বর মাস তাদের গোঁফ কাটবেন না এবং এই থেকে বেঁচে যাওয়া শেইভিং এবং ট্রিমিং খরচ দান করবেন এই চ্যারিটিতে, যা দিয়ে প্রোষ্টেট ক্যান্সার, টেষ্টিকুলার ক্যান্সারের রিসার্চসহ বিভিন্ন রিসার্চের ফান্ডিং করা হবে। 

তো, শেষ পর্যন্ত ফেসিয়াল হেয়ার রাখুন বা কাটুন, গোঁফ-দাড়িকে বাড়তে দিয়ে বেঁচে যাওয়া অর্থ কোনো চ্যারিটিকে দিতে পারেন বা না পারেন, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং সচেতনতা বৃদ্ধির এই আন্দোলনে অবশ্যই শামিল হোন। নিজেও অংশ নিন এবং বন্ধু-ভাই-বাবা-চাচা-মামা নির্বিশেষে সবাইকে উৎসাহিত করুন এবং তাদের কাছে ক্যান্সারের সচেতনতার এই অভাবনীয় উপায়কে পৌঁছে দিন!

*

প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা