এতিমদের লেখাপড়ার খাতা বানানো হবে নির্বাচনী পোষ্টার দিয়ে!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
ভাবাটা কিন্তু খুব সহজ, তবে কাজটা করে দেখানো বেশ কঠিন। আর এই অসাধ্যকে সাধন করতে মাঠে নেমেছে তাদের স্বেচ্ছাসেবীরা। কোটি টাকার সেসব আবর্জনা সংগ্রহ করে চলছে তারা সারাদিন শহরজুড়ে ঘুরে ঘুরে, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করার মিশনে এই দেশটিকে পথ দেখাতে।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে কাগজ আর পলিথিন দিয়ে ছেয়ে গেছে ঢাকা। ঢাকার আকাশ এখনো বন্দী নির্বাচনী বর্জ্য দিয়ে। এই যদি হয় গ্রীন ঢাকার রুপকারদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন তবে বলতেই হয়, বাবা হলেন দুজনেই কিন্তু মা হলেন না কেউ।
এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এএসডো) বলছে, নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর প্রায় ১২ দিনের মধ্যেই দুই হাজার ৪৭২ টন লেমিনেটেড প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে। পুরো নির্বাচনে পোস্টার থেকে বর্জ্য জমবে প্রায় আড়াই হাজার টন, যা বছরজুড়ে ঢাকা শহরে উৎপন্ন বর্জ্যের চার ভাগের এক ভাগ।
উল্লেখ্য, শুধু এ নির্বাচনেই পদপ্রার্থীরা প্রচারণার উদ্দেশ্যে আনুমানিক ৩০৪ মিলিয়ন প্লাস্টিক লেমিনেটেড পোস্টার ছেপেছেন। ঢাকার শহরের সঙ্কট উত্তরনের গুরু দায়িত্ব যাদের দেয়া হয়েছে তারাই সৃষ্টি করে রেখেছেন এই সঙ্কট। নিয়তির কী নির্মম পরিহাস।
তাহলে উপায়? বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের কথা মনে আছে নিশ্চয়ই? ঐ যে আমি আপনি যাদের কথা ভুলে যাই সেই সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাহায্যে কাজ করে যারা। তাদেরই সফলতম প্রজেক্ট হচ্ছে এক টাকায় আহার - 1 Taka Meal. এবার তারাই এগিয়ে এলো অভিনব একটি উদ্যোগ নিয়ে। আর সেটি হচ্ছে, নির্বাচনী পোষ্টারের পেছনের সাদা অংশ দিয়ে বানানো হবে এতিমদের লেখাপড়ার খাতা। এবং পোষ্টারের লেমিনেশনে ব্যবহৃত পলিথিন দিয়ে প্যাকেট করা হবে বিতরনের জন্য শীতবস্ত্র। পোষ্টারের উচ্ছিষ্ট দড়ি ব্যবহার করা হবে চাল-ডালের প্যাকেট বাঁধতে। কী অসাধারণ ভাবনা তাই না?
ভাবাটা কিন্তু খুব সহজ, তবে কাজটা করে দেখানো বেশ কঠিন। আর এই অসাধ্যকে সাধন করতে মাঠে নেমেছে তাদের স্বেচ্ছাসেবীরা। কোটি টাকার সেসব আবর্জনা সংগ্রহ করে চলছে তারা সারাদিন শহরজুড়ে ঘুরে ঘুরে, বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করার মিশনে এই দেশটিকে পথ দেখাতে।
দেশকে বদলানোর কথা আমরা সবাই কমবেশি বলেই থাকি। দেশের জন্য কাজ করে দেখানোর সময় অধিকাংশই ঠনঠন, মাছি ভনভন। এই কাজটাই যারা করে যাচ্ছে তাদের জন্য ধন্যবাদ, সম্মান, শুভকামনা কিংবা ভালবাসা যথেষ্ট নয়। যে যেভাবে পারি, যার অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব এই মানুষগুলোকে আমাদের সাহায্য করতে হবে। দেশটা আমাদেরই, তাই খেয়ালটাও তো আমাদেরই রাখতে হবে।