প্রশান্ত কিশোর: পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট, নাকি কিং মেকার?
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
প্রশান্ত কিশোর: ভারতীয় রাজনীতির রহস্যময় এক চরিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন অনেকটা আচমকাই! নামে তিনি পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট, আর কাজ? কাজ হচ্ছে ক্ষমতায় কে যাবে সেটা ঠিক করে দেয়া, যেখানেই প্রশান্ত কিশোর- সেখানেই যেন সাফল্য!
২০১৪ সালে ভারতের ষোলতম জাতীয় তথা লোকসভা নির্বাচনে "মোদী হাওয়া'র কথা মনে আছে তো? পুরো উপমহাদেশই সেই নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক জোটের উত্থান এবং দুর্নীতিগ্রস্থ কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের ভরাডুবির সাক্ষী হয়ে আছে। ফলাফল ও পারিপার্শ্বিক বিবেচনায় যে কেউ স্বীকার করতে বাধ্য হবে, মোদি চমকেই এমন ঐতিহাসিক বিজয় এসেছিলো ভারতীয় জনতা পার্টি তথা বিজেপির।
কিন্তু এই প্রশ্ন উঠা কি স্বাভাবিক নয় যে কিভাবে গুজরাট প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী রাতারাতি বিজেপির প্রধানমন্ত্রীত্ব পদপ্রার্থী হিসেবে জনপ্রিয় জাতীয় নেতা হয়ে উঠলেন অথবা কিভাবেই বা ভয়ংকর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কালিমালিপ্ত এক প্রশাসক, সমগ্র ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী পদে শক্তিশালী ও নির্ভতার বিপল্প হয়ে দাঁড়ালেন! তবে কেউ কি ছিলেন পর্দার আড়ালে, যিনি ভারতীয়দের মনে মোদীর নতুন এক রাজনৈতিক চরিত্রের ছবি আঁকার দায়িত্ব নিয়েছিলেন? হ্যাঁ, ছিলেন, একজন, নাম তার প্রশান্ত কিশোর।
১৯৭৭ সালে বিহার রাজ্যের একটি ছোট গ্রাম রোহতায় জন্ম নেয়া ডাক্তার পরিবারের ছেলে প্রশান্ত কিশোর। পড়ালেখাকে খুব একটা গুরুত্ব দিতেন না, অনেক চড়াই-উতরাই এর পর দিল্লীর হিন্দু কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে বিহারে জাতিসংঘের 'পোলিও টিকা'র প্রজেক্টে ভলেন্টিয়ারের চাকুরি পেলেন। সেই প্রজেক্টে তার কাজে কর্মকর্তারা বেশ সন্তুষ্ট হলে, ইউএন ইন্ডিয়া অফিস থেকে চাকুরির প্রস্তাব পান। সেখানে দুই বছর ছিলেন, এরপর আমেরিকায় চলে যান। ধীরে ধীরে জাতিসংঘে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে থাকেন, জানা যায় বেশ ভালো পদেই ছিলেন। ফের সেই দেশ থেকে আফ্রিকার দেশ চাদে আসেন কিছু প্রজেক্টে কাজ করার জন্য।
চাদে থাকাকালীন একবার তিনি ভারতের গুজরাট প্রদেশের 'শিশুদের পুষ্টিহীনতা' নিয়ে চমৎকার আর্টিকেল লিখেন যা তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নজরে পড়ে যায়। তিনি খোঁজ নিয়েই কিশোরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করেন। প্রথম মুলাকাতে মোদী এতটাই মুগ্ধ হোন, রীতিমতো প্রস্তাব দেন গুজরাটে কাজ করার। কেন জানি কিশোর-ও প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে গুজরাটে চলে আসেন। এ যেন প্রথম নজরেই প্রেমে পড়ার মতো বিষয়!
অবশ্য রত্ন চিনতে মোদির রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ভুল করেনি, তা বলা যায়। রাজনীতির ময়দানে প্রথমবারের মতো প্রশান্ত কাজ করেন ২০১২ সালের গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে। নির্বাচন ক্যাম্পেইনের রণকৌশলগুলো সাজানো, বিভিন্ন বিষয়ে সার্বিক পরামর্শ প্রদান এসবই মূলত প্রশান্তের দায়িত্ব ছিল। সেই নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী চতুর্থবারের মতো গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়, প্রশান্ত-ও প্রাথমিকভাবে সফল হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে প্রশান্ত বিষয়টিকে অতিগুরুত্ব দিয়ে বছর খানেক পরেই, ১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে 'Citizens for Accountable Governance (CAG)' নামে একটি মিডিয়া ও প্রচার মূলক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। যেটির কাজ হবে নির্বাচনকেন্দ্রিক নির্দিষ্ট পার্টির সাথে প্রচারের রণকৌশল সাজানোর লক্ষ্যে চুক্তিভিত্তিকভাবে কাজ করা। আর স্বাভাবিকভাবেই নরেন্দ্র মোদীর তৎপরতায় বিজেপির সাথে প্রথমবারের মতো প্রশান্ত কিশোরের প্রতিষ্ঠানটি চুক্তিবদ্ধ হয়।
নরেন্দ্র মোদী বিজেপির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর এবার যাবতীয় কৌশল তৈরির পালা। বিজেপি কট্টর জাতীয়তাবাদ ও হিন্দু রক্ষণশীল দল হিসেবেই সমধিক পরিচিত, আর বিষয়টি একইসাথে তাদের দুর্বলতা এবং শক্তির উৎস। এর পাশাপাশি গুজরাট দাঙ্গায় মোদীর প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকায় সমগ্র ভারতবর্ষে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা তিনি পাবেন সেটাও ভাবনার বিষয় ছিল। আর কংগ্রেস, বামপন্থী সংগঠনসহ আঞ্চলিক দলগুলোর জন্য বরাবরই অনুমেয় ছিলো যে খুব সহজেই তারা ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে মোদীকে ঘেরাও করে ফেলবেন।
এমন এক পরিবেশেই মূলত রাজনৈতিক খেলায় প্রবেশ করেন অনভিজ্ঞ প্রশান্ত কিশোর। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের সার্ভে শেষে সবাইকে হতভম্ব করে তিনি বিজেপির জন্য এমন কিছু চমৎকার আইডিয়া নিয়ে আসলেন তা শুধু নির্বাচনের ফলাফলেই বাজিমাত করেনি বরং তার বানানো একের পর এক ফর্মুলায় বিরোধী দলগুলো রীতিমতো নিজেদের পায়ের নিচে মাটি হারিয়ে ফেলেছিলেন!
দেখা গেল, নরেন্দ্র মোদী জনসভায় আর রাম বা হনুমানের কথা বলছেন না কিংবা হিন্দুত্ববাদের কথা বলছেন না। প্রশান্ত কিশোর বরং নরেন্দ্র মোদীকে দিয়ে নানান পরিকল্পনার ফিরিস্তি গাওয়ালেন যেমন- 'বেটি বাচাও, বেটি পড়াও', 'ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশন', 'স্বচ্ছ ভারত', 'মেক ইন ইন্ডিয়া', 'আদর্শ গ্রাম', 'স্মার্ট শহর', 'স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া', 'স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া', কি নেই সেখানে! দুই কোটি বেকারের কর্মসংস্থান থেকে দুর্নীতিবাজদের ঘায়েল করার প্রত্যয় কিংবা পনেরো লাখ টাকা প্রতি ভারতীয়র ব্যাংকে চলে যাওয়ার মতো ‘আকাশ কুসুম প্রতিশ্রুতি’ দেয়া সবটাই নরেন্দ্র মোদি অনর্গল বলে গেছেন, করে গেছেন।
তবে প্রশান্ত কিশোর এতটুকুতে ক্ষান্ত হননি। তিনি মানুষের সাথে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপনের জন্য কিছু পরিকল্পনা হাতে নিলেন। ভারতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে '3D র্যালি'র আয়োজন করলেন, দেখা গেল গ্রামের লোকরা মোদীর অবয়ব চোখের সামনেই দেখতে পারছেন, 'মোদি হাত নাড়িয়ে তাদের সম্বোধন করছেন, বসে কথা বলছেন'। খুব সহজ প্রক্রিয়া, কিন্তু ব্যাপক হইচই ফেলে দিলো। এরপর মোদী 'চা-ওয়ালার সন্তান' এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসে শুরু হলো 'চায়ে-পে চর্চা' নামক কর্মসূচি। নরেন্দ্র মোদি কোনো চায়ের দোকানের সামনে টুলের ওপর বসে ভারত নিয়ে স্বপ্নের কথা শোনাচ্ছেন। আভিজাত্যময় গান্ধীদের বিরুদ্ধে এক চা-ওয়ালার সন্তান দাঁড়িয়ে গেছেন, নিন্ম ও মধ্যবিত্তরা যেন আবেগে একাকার হলো।
'চা ওয়ালার সন্তান' থেকে 'চৌকিদার' এর বিশেষণ, নির্বাচনের ছবিতে মোদী হয়ে উঠলেন অদম্য! পাশাপাশি বিজেপির কট্টর জাতীয়তাবাদের আদর্শকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে 'Run For Unity' কর্মসূচি হাতে নেন। আর তাতেই সাবেক কংগ্রেস নেতা ও ভারতের লৌহ মানবখ্যাত সরদার পাটেলের 'অখন্ড ভারত' এর স্লোগান, বিজেপি রীতিমতো ছিনতাই করে ফেলে। পর্যদুস্ত কংগ্রেস যেন কূল হারিয়ে ভেবে পায় না কিভাবে কি করবে! মোদীর আরো এক ধরনের প্রচার যা ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলো তা হলো 'মান্থান' কর্মসূচি। ভারতের সত্তর বছরের ইতিহাসে প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী সুবিশাল হলরুমে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে নির্বাচনের আগে প্রায় সাত ঘন্টা ধরে এড্রেস করছেন, প্রশ্ন শুনছেন এবং জবাব দিচ্ছেন এমন দৃশ্যের অবতারণা করেন প্রশান্ত কিশোর। নিজের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান দিয়েই তিনি এই 'মান্থান' আয়োজন করেন।
সুতরাং প্রশান্তের একের পর মাস্টারস্ট্রোকে মোদী হাওয়া তুঙ্গে, টিভি স্ক্রিন বা স্ক্রলে শোভা পাচ্ছিলো 'আপকি বার মোদী সরকার'! প্রশান্তের পরামর্শে বিজেপি যেভাবে সেই নির্বাচনে সোশ্যাল মিডিয়া, টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়েছে, অতীতে আর কোনো লোকসভা নির্বাচনে এমনটি হয়নি। আজকাল এসকল কর্মসূচি ভারত ও উপমহাদেশের রাজনীতিতে রীতিমতো ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে৷
মোদির অনবদ্য বাগ্মিতা এবং ব্যক্তিত্বের অনন্য সম্মোহনী শক্তি নিয়ে ঘোর প্রতিপক্ষরাও দ্বিমত পোষণ করেন না। মোদীর এসব গুণকেই কাজে লাগিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর। তিনি এমনভাবে রণকৌশল সাজিয়েছিলেন যাতে ভারতের উচ্চবিত্ত থেকে নিন্মবিত্ত কিংবা হিন্দু-মুসলিম, ছাত্র-কৃষক-শ্রমিক সবাই নিজেদের সাথে মোদিকে যুক্ত করতে পারেন। এমনকি এটিও প্রচলিত আছে পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতা বিবেচনায় তিনি মোদীকে পাঠ দিয়েছিলেন কিভাবে সাংবাদিকদের কঠিন সব প্রশ্ন মোকাবেলা করবেন।
সব মিলিয়ে নতুন এক টার্ম 'পলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজিস্ট' এর আগমন ঘটে ভারতের রাজনীতিতে। অবশ্য প্রশান্ত কিশোর বিজেপির সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নেননি, প্রতিষ্ঠানের নাম বদলে ২০১৫ সালে 'Indian Political Action Committee (I-PAC)' রাখেন। সেই একই বছর নিজ রাজ্য বিহারে জনতা দলের ইউনাইটেড এর সাথে কাজ করেন, এবং দলের নেতা নিতিশ কুমার তৃতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হন। ধারাবাহিকভাবে বেশ কিছু প্রাদেশিক নির্বাচন তথা ১৭ সালে পাঞ্জাব বিধান সভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী-কংগ্রেস জোট, ১৯ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে জগমোহন রেড্ডি, ২০ সালে দিল্লীতে কেজরিওয়াল-এর সাথে কাজ করেন৷ এর মধ্যে শুধু উত্তরপ্রদেশেই চরম ব্যর্থ হয়েছেন, বাকিগুলোতে জিতিয়েছেন। প্রত্যেক নির্বাচনেই দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের ক্যাম্পেইনিং-এ নতুন কিছু ট্রেন্ড তৈরি করেছেন। এমনকি কৃষকদের 'ঋণ' মাফ করে দেয়ার মতো প্রতিশ্রুতিও তার বানানো, যা এখন গণহারে সব পার্টিই ব্যবহার করছে। বলা বাহুল্য, এই প্রতিশ্রুতি দিয়েই ভারতের হিন্দি হার্টলাইন খ্যাত মধ্যপ্রদেশ, ছত্রিশগড়, রাজস্থানের মতো রাজ্য বছর দেড়েক আগে জিতে এসেছিলো কংগ্রেস।
২০১৮ সালের শেষের দিকে তার প্রত্যক্ষভাবে রাজনৈতিক অভিষেক ঘটে। সরাসরি সহসভাপতি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে বিহারের ক্ষমতাসীন নিতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড এ যোগ দেন। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ভারতের 'নাগরিকত্ব আইন' নিয়ে বিজেপির পক্ষে নিজ দলের অবস্থান নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করলে তিনি বহিষ্কৃত হন৷ তাছাড়া একটি দলের সাথে সরাসরি যুক্ত থেকেও, টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন দলের সাথে নির্বাচন কেন্দ্রিক কাজ করার বিষয়ে বেশ টিপ্পনীর শিকার হন। কিন্তু রাজনীতি এবং পেশা ভিন্ন ভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে তিনি তা এড়িয়ে যান।
এই মুহুর্তে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠান নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন৷ তরুণ ও মেধাবীদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যেও বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করে চলেছেন৷ ফলে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটিও বিস্তৃতি লাভ করছে। ২০১৯ সালের হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজিত এক কনফারেন্সে তরুণদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার প্রয়াস নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন এবং আগামী কয়েক বছর আরো বেশি মাঠ পর্যায়ে সময় দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। পাশাপাশি এত দ্রুত সংসদীয় রাজনীতি বা ক্ষমতার মসনদে যাওয়ার অভিপ্রায়ও তিনি দেখেন না বলে জানিয়েছেন।
এদিকে বিভিন্ন ধারায় প্রশংসার সাথে ব্যাপক সমালোচনাও রয়েছে তার। অনেকেই দাবী করেন, প্রশান্ত কিশোর সবসময় প্রত্যাশিত বিজয়ীর পক্ষই অবলম্বন করেন তাই তার রেকর্ড ভালো। আবার এর বিপরীতে অনেকেই তাকে অতীত সম্পর্কের সূত্রধরে 'মোদির এজেন্ট' দাবী করেন। অবশ্য এসব প্রশান্ত খুব একটা আমলে নেন না, আর বিজেপির সাথে দূরত্ব বাড়লেও বাকি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তিনি এখন 'হটকেক'ই। ফলে অতীত সফলতার ধারাবাহিকতায় তামিলনাড়ুতে ডিএমকে পার্টির চিফ স্টালিন এবং পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস এর মমতা তাকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রণকৌশলের ভার তুলে দিয়েছেন। তৃণমূলের দায়িত্ব নিয়েই 'দিদিকে বলো' কর্মসূচি গ্রহণ করে তৃণমূলকে বাংলার ঘরে ঘরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
অবশ্য গেল দশকে জন্ম নেয়া ভারতীয় রাজনীতির নতুন চাণক্যের জন্য আগামীর সফর খুব কঠিনই হতে যাচ্ছে। বিহার-বাংলা-তামিলনাড়ু, আত্মসম্মানের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে পিকে খ্যাত প্রশান্ত কিশোরের জন্য৷ আপাতত জাতীয় রাজনীতি নিয়ে চুপ থাকলেও, ২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেসের সাথে আবদ্ধ হচ্ছেন এমনই জোর গুঞ্জন চলছে। এখনো কোনো রাজনৈতিক দল তৈরি সিদ্ধান্ত না নিলেও কেউ কেউ তাকে বিহারের আসন্ন ভাবী মুখ্যমন্ত্রী কিংবা কিং মেকার ভেবে বসে আছেন, তো আবার কেউ কেউ আগামীর প্রধানমন্ত্রীও বলতে পিছপা হচ্ছেন না। তবে যাই হোক, সব মিলিয়ে প্রশান্ত কিশোর ভারতের রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হয়ে উঠেছেন তা মেনে নিতেই হবে। সত্তর বছরের ভারতের রাজনীতির বৈচিত্র্যতায় এমন ব্যক্তিত্ব খুঁজে পাওয়া সত্যিই দুরূহ। তাই চল্লিশোর্ধ প্রশান্ত কিশোর নিজেই এখন 'রাজনৈতিক ব্র্যান্ড' হয়ে উঠেছেন।
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন