আর কত দিন "সাবধানে চলো, পিপার স্প্রে সাথে রাখো, রাতে বের হইও না, একা রিকশায় আইসো না" বলে বলে নিজেদের ভয়ংকর বিচারহীনতাকে স্বাভাবিক ধরে নিয়ে অসহায়ের মত চলবো?

সোজাসাপ্টাই বলি, একটা কঠোর আইন করতে সমস্যাটা কোথায়? কষ্টটা কোথায়? ক্ষতিটা কোথায়?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মায়ের মতন, জাতির পিতার কন্যা, এতটা শিক্ষিত আর অভিজ্ঞ একজন নেত্রীর কাছে ঠিক কিভাবে আবেদন করলে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ড এবং তার প্রয়োগের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন? আর কয়টা নিউজ দরকার? কয়টা ইনসিডেন্ট দরকার? কয়টা টক শো আর কলাম লেখা দরকার? আমাদের মত মানুষদের সামান্য লেখা তো অত দূর যাবে না, আপনারা যারা সাংবাদিক আছেন, প্রধানমন্ত্রী কিংবা আইনমন্ত্রীদের সাথে প্রেস কনফারেন্সে কত প্রশ্ন করেন। এই ধর্ষণের আইনের ব্যাপারে শক্ত করে প্রশ্ন করেন না কেন? আপনারা যারা বিভিন্ন ছাত্রনেতা আছেন, প্রায়ই ফুলের মালা দিতে যান, সালাম দিতে যান; কানে কানে কখনোই এই অনুরোধটা কেন করেন না যে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে শক্ত আইন আর তার প্রয়োগের ব্যবস্থা করেন প্লিজ?

এত ফ্লাইওভার, সেতু, মেট্রোরেলের উন্নয়ন দিয়ে কি করবো যদি রাস্তায় নিরাপদে হাঁটতেই না পারি? নৈতিক মূল্যবোধ তো নাই-ই! এখনো শত সহস্র মানুষ ধর্ষণের পক্ষে সাফাই গেয়ে নির্লজ্জের মত পোস্ট দেয়, কথা বলে। এটা একদিনে ঠিক হবে না। এরা অসুস্থ এবং অসুস্থদের সুস্থ করার একটাই ওষুধ হলো উপযুক্ত শাস্তি!

একটা সিম্পল কথা বলি। কয়েক বছর আগেও মোটরসাইকেলে চড়ার সময় অনেক মানুষ হেলমেট ইউজ করতো না, এখন কেন করে? হুট করে সেইফটি কনসার্ন বেড়ে গেছে সবার? নাহ, আইন হয়েছে, ধুন্ধুমার কেইস খেয়ে জরিমানার ভয়ে সোজা হয়ে গেছে সবাই! ওভারব্রিজে না উঠে রাস্তা পার হলে জরিমানার সিস্টেম ছিল যখন, ঠিকই লাইন ধরে মানুষ ওভারব্রিজে উঠেছে। এদেশের ক্রিমিনালদের সোজা করার জন্য কী লাগে, এটা তো ভেঙে বলার কিছু নাই সরকারকে!

অনেক হয়েছে। আর কত দিন "সাবধানে চলো, পিপার স্প্রে সাথে রাখো, রাতে বের হইও না, একা রিকশায় আইসো না" বলে বলে নিজেদের ভয়ংকর বিচারহীনতাকে স্বাভাবিক ধরে নিয়ে অসহায়ের মত চলবো?

এই লেখা কোথাও পৌঁছাবে না। আপনারা যারা সরকারি দলের সাথে কানেকটেড, দয়া করে কথাগুলো উপরমহলে পৌঁছে দিয়েন। ধর্ষণের খবরগুলা নেয়া যাচ্ছে না আর, দম আটকে আসে প্রতিনিয়ত! আর আপনার আশেপাশে যেসব শুয়োর ইনিয়ে বিনিয়ে বা সরাসরি ধর্ষণ এবং ধর্ষকের পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়া বা রিয়েল লাইফে কথা বলে কিংবা লিখে, এদেরকে প্রথমে বুঝান আর এরপরেও না বুঝলে সামাজিকভাবে বর্জন করেন! বন্ধু হোক কিংবা পরিবারের কেউ হোক, কারো অসুস্থ মানসিকতা পরিবর্তন করার জন্য যদি স্টেপ না-ই নিতে পারেন, তাহলে দায় আপনারও! দয়া করে নিজের আশপাশের অসুস্থ মানসিকতার নোংরা অমানুষগুলাকে সোজা করেন, সেটা বুঝায়ে হোক কিংবা চড়ায়ে হোক, এটার জন্য আইনের দরকার হবে না, আপনার নৈতিকতাই যথেষ্ট।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা