ধর্ষণ করে লাইভে এসে উল্লাস করার সাহস আপনারাই দিয়েছেন!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
এখন ধর্ষণ করে এসে লাইভে উল্লাস করে, এরপর লাইভে এসেই উল্লাস করতে করতে ধর্ষণ করবে। আর আপনারা ব্রেনডেড জম্বির মতোন পর্দাই ঠিক করতে থাকবেন।
বাংলাদেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে ধর্ষণ। দেশে একের পর এক ধর্ষণ হতেই আছে। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ভার্সিটি থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রে, ঘরে-বাইরে এমন কী হাসপাতালেও নিরাপদ না নারীরা। এ দায় আমার আপনার, আমাদের সবার। যখন নারীরা ধর্ষিত হওয়া শুরু হলো, আপনারা সেই দোষ চাপালেন ধর্ষিতার উপর। ধর্ষিতা পর্দা করে নাই তাই ধর্ষণ করা ফরজ- এমন ফতোয়া দিতে লাগলেন আপনারা। যখন পর্দানশীল নারীরা ধর্ষিত হওয়া শুরু হলো তখনো আপনারা ইনিয়ে বিনিয়ে ত্যানা পেঁচিয়ে সেই একই ফতোয়া দিতে লাগলেন। যখন শিশুরা ধর্ষিত হওয়া শুরু হলো, আপনারা সেই একই মুখস্থ বিদ্যা আওরাতে লাগলেন। যখন বৃদ্ধারা ধর্ষিত হওয়া শুরু হলো, আপনারা তবুও অনড় রইলেন। যখন কালেভাদ্রে কোনো ধর্ষক ধরা পড়ে, তখনো ধর্ষক আপনাদের মনমতো হয় না। ডিএনএ টেস্টের প্রমাণ আপনারা হাহা দিয়ে উড়ায়ে দেন। আপনারা নিজেরাই একেকজন ইবনে সিনা। আর আপনারা চান হলিউডের নায়কদের মতো হ্যান্ডসাম ধর্ষক। আচ্ছা আসলে সমস্যাটা কী আপনাদের?
আপনাদের কাছে নারীরা হলো মিস্টি, আর ধর্ষকেরা হলো মাছি। নারীরা হলো মুরগি, ধর্ষকেরা হলো শেয়াল। বাহ! ধর্ষণ বৈধ করার কি সুন্দর উদাহরণ তৈরি করেছেন আপনারা। আর সবাই ব্রেনডেড জম্বির মতো ঐ সেই একই উদাহরণ ফলো করছেন। আপনারা যদি ধর্ষণের ব্যাপারে আপনারা এতোটাই অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন তবে ত্যানা না পেঁচিয়ে একটি প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিবেন। পবিত্র কোরআনের কোথায় বলা আছে, ‘পর্দা না করলে ধর্ষণ জায়েজ’? শুধুমাত্র একটি আয়াতের রেফারেন্স দিবেন যেখানে ধর্ষণকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। জানি পারবেন না, কারণ ধর্ষণ হচ্ছে যিনা। এবং ইসলামে যিনার কোনো ক্ষমা নেই। অথচ আপনারা স্বয়ং ইসিলামের চেয়েও বেশি বুঝেন এখন। পাপ পুণ্যের হিসেব নিজেরাই করেন। নিজেরাই জান্নত জাহান্নামের টিকেট বিক্রী করেন। শুধু নারীরা নয়, ইসলাম নিজেও আপনাদের কাছে জিম্মি। সেভাবে সুবিধা সেভাবেই ব্যবহার করছেন আপনারা। আর আপনাদের কারো কথা পছন্দ না হলে তাকেও নাস্তিক বানিয়ে দিচ্ছেন। অথচ কারো সম্পর্কে না জেনে কাফির ডাকাটাও ইসলামের দৃষ্টিতে কতো বড় অন্যায়। আপনারা যে কী জানেন না, সেটাও আপনারা জানেন না!
এবার একটি ঘটনা জানুন অন্তত। জেনে বুঝার চেষ্টা করুন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এনার্জি ড্রিংকের সঙ্গে নেশা দ্রব্য মিশিয়ে অচেতন করে এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করে চার বন্ধু। ধর্ষণের পর ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে তারা হাসতে হাসতে বলতে থাকে, ‘হ্যালো ফ্রেন্ডস আগামীকাল হয়তো জেলে থাকবো, কারো সঙ্গে আর দেখা হবে না।’ গত ১৫ জানুয়ারি রাতে এমন ঘটনা ঘটে গাজীপুরের শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকায়।
এতে নামেমাত্র একটি মামলা হয়েছে। এই ধর্ষকেরাও জানে এদের কিছুই হবে না। এর জন্যেই এরা এমন স্পর্ধা দেখানোর সাহস পায়। কারণ আপনারা এদের চুলটাও বাঁকা করতে পারবেন না। না এদের আছে কোনো নৈতিক শিক্ষা, না আপনাদের তাতে আছে কোনো বিকার। ইতিমধ্যেই ধর্ষকের পরিবার থেকে মামলা তুলে নেয়ারও হুমকি দেয়া হচ্ছে। এদের বড়জোর কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে পাঠানো হবে। বকাঝকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হবে। এরপর যেই লাউ সেই কদু। এমন অপরাধ হতেই থাকবে, আর আপনারা অপরাধীর বিচার না করে ভিক্টিমকে দোষারোপ করতে থাকবেন।
আপনারা পর্দা ঠিক করতে করতে এরা ধর্ষণের বিশ্বরেকর্ড করে ফেলতেছে। এবার বুঝুন অবস্থা। এখন ধর্ষণ করে এসে লাইভে উল্লাস করে, এরপর লাইভে এসেই উল্লাস করতে করতে ধর্ষণ করবে। আর আপনারা ব্রেনডেড জম্বির মতোন পর্দাই ঠিক করতে থাকবেন। এখন অন্যের মা বোনের উপর দিয়ে যাচ্ছে তো তাই গায়েই লাগছে না। নিজের ছেলেকে শেখানোর বদলে দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন অন্যের মেয়ের ঘাড়ে। আর এভাবেই নিজের মা বোনকেও ঠেলে দিচ্ছেন অনিশ্চয়তার দিকে। যতদিনে ধর্ষণের এই ভয়াবহতা বুঝতে শিখবেন, ততোদিনে নিজেকেই আবিস্কার করবেন ভুক্তভোগীর স্থানে। এমনটা যেন না হয়! পৃথিবী কখনোই সেই খারাপ মানুষগুলোর জন্য ধ্বংস হবে না। পৃথিবী ধ্বংস হবে সে ভালো মানুষগুলোর জন্য, যারা অন্যায় দেখেও প্রতিবাদ করেনি। বরং চুপ করে ছিলো।
আশরাফুল মাখলুকাত মানে সৃষ্টির সেরা জীবকে মাছি-মিস্টি বানিয়ে ফেলেছেন আপনারা। সত্যি সেলুকাস! কি বিচিত্র আপনাদের বুদ্ধি! মানসিক ভারসাম্য কতোটা বিকৃত হলে মাত্র কয়েক মাস বয়সী একটা বাচ্চার যৌনাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে বড় করে ধর্ষণ করা হয়, রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ানো পাগলীরাও কিভাবে গর্ভবতী হচ্ছে? ভেবে দেখেছেন কী? তা ভাববেন কোথা থেকে, আপনাদের ভাবনা তো মাছি মিষ্টিতেই আটকে গেছে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশে নারীরা কতটুকু নিরাপদ?
কিশোর গ্যাং- ভয়ংকর ভবিষ্যতের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা!