অথচ সেলিনা হোসেনের সাহিত্য থেকে আরও বেশি সিনেমা হতে পারতো!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

বাংলাদেশের সাহিত্যঙ্গনের মধ্যে নিঃসন্দেহে সেরা নারী কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অথচ দুঃখজনক হলেও তার সৃষ্টি থেকে মাত্র তিনটি সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি ১৯৪৭ সালের ১৪ জুন জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এরপর কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হন বাংলা একাডেমীতে। এরই ফাঁকে ফাঁকে তিনি সৃষ্টি করেন নানান ধরনের সাহিত্য। উপন্যাস, গল্প থেকে প্রবন্ধ সব মাধ্যমেই তিনি সুপরিচিতি পেয়েছেন। উনার লিখা আলোচিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে হাঙর নদী গ্রেনেড, নিরন্তর ঘন্টাধ্বনি, কাঁটাতারে প্রজাপতি, গায়ত্রী সন্ধ্যা (৩ খন্ড), মগ্ন চৈতন্যে শিষ, নীল ময়ুরের জীবন অন্যতম। তিনি ২০০৯ সালে একুশে পদক অর্জন করেন।
বাংলা চলচ্চিত্রে উনার বিশাল সাহিত্যসৃষ্টি থেকে মাত্র তিনটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে, যেটা হতাশাজনক। আশা করি ভবিষ্যতে চলচ্চিত্রকাররা উনার সাহিত্যসৃষ্টিতে সুনজর দিবেন।

সেলিনা হোসেনের সাহিত্যসৃষ্টির চলচ্চিত্রায়ন:
১. পোকামাকড়ের ঘর বসতি (১৯৯৬): স্বনামধন্য পরিচালক মোঃ আখতারুজ্জামান ১৯৮৬ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত উপন্যাস 'পোকামাকড়ের ঘর বসতি' অবমম্বনে একই শিরোনামে সরকারী অনুদানে সিনেমাটি নির্মাণ করেন। চিত্রনায়িকা ববিতা ছিলেন এই ছবির প্রযোজক।
এই ছবিতে অভিনয় করেন খালেদ খান, আলমগীর, রওশন জামিল, ববিতা সহ আরো অনেকে। ছবিটি সেরা চলচ্চিত্র সহ চারটি শাখায় জাতীয় পুরস্কার পায়, সেরা কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার অর্জন করেন সেলিনা হোসেন।
২. হাঙর নদী গ্রেনেড (১৯৯৭): উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাসকে চলচ্চিত্রে রুপ দিতে চেয়েছিলেন, এরপর আলমগীর কবির ও চেষ্টা করেছিলেন। দুইজনের অকালমৃত্যুর কারণে নির্মান করতে পারেন নি। অবশেষে চাষী নজরুল ইসলাম সরকারী অনুদানে একই শিরোনামে ছবিটি নির্মাণ করেন।
১৯৭৬ সালের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে যেমন অন্যতম সংযোজন, তেমনটি চলচ্চিত্রেও। এই ছবিতে অভিনয় করেন সুচরিতা, সোহেল রানা, অরুনা, রাজিব সহ আরো অনেকে। ছবিটি সেরা অভিনেত্রী সহ চারটি শাখায় জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। এই ছবির জন্যও সেরা কাহিনীকার হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পান সেলিনা হোসেন।
৩. চার সতীনের ঘর (২০০৫): সেলিনা হোসেনের ছোটগল্প 'প্রেম ও শ্রমের গল্প' অবলম্বনে নারগিস আক্তার নির্মাণ করেন চার সতীনের ঘর। সন্তান ধারণ নিয়ে আমাদের গ্রামীন সমাজে যে কুসংস্কার প্রচলিত আছে, সেইটাকে উপজীব্য করা এই ছবিতে অভিনয় করেন ববিতা, দিতি, শাবনূর, মাহফুজ, ময়ুরী, আলমগীর সহ আরো অনেকে।
এছাড়া ২০১৫ সালে উনার লিখা উপন্যাস 'কাকতাড়ুয়া' অবলম্বনে ছবি নির্মাণ করেন ফারুক হোসেন। যদিও ছবিটি এখনো মুক্তি পায়নি, এই নিয়ে সেলিনা হোসেন বেশ ক্ষোভ ছেড়েছিলেন।