শাকিব খানের কর্মকান্ড দেখে আমরা হেসে উড়িয়ে দিই। এখানেই ভুলটা করি আমরা। তাকে এই ছাড় দেয়াটাই ঠিক হয়নি। এই বাদরকে লাই দিয়ে আমরা মাথায় তুলেছি। এখন আমাদের মাথার ওপর বসেই বিষ্ঠার বাহার সাজিয়ে বসেছেন।
আমাদের কিং খান আবারও বিয়ে করবেন বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। করতেই পারেন। রাজা বাদশাহদের স্বভাব তো এমনই হবে। একটা করবেন, আরেকটা ছাড়বেন। তাকে কিছু বলার মত কেউ কি আছে? বাঙলা সিনেমার একচ্ছত্র অধিপতি তিনি। একের পর এক নায়িকায়দের সঙ্গে সম্পর্কে জড়াচ্ছেন, আর পেট ফুলিয়ে বিদায় করে দিচ্ছেন। ভালো তো, ভালো না? ভাবতেই অবাক লাগে এই লোকটাই নাকি বাঙলা ইন্ডাস্ট্রি টিকিয়ে রেখেছে। ইনি ছাড়া নাকি কেউ আর নেই। এই যদি হয় আমাদের দলনেতার অবস্থা, বাকীরা তো তার থেকেই অনুপ্রাণিত হবে।
নতুন এক সাক্ষাতকারে নায়কা বুবলীর সাথে শাকিব খানের সম্পর্কের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না, বুবলী শিক্ষিত মেয়ে, তার পরিবারও শিক্ষিত এবং সম্ভ্রান্ত। সে অপুর মতো কোনো ভুল করতে পারে না।’ তার মানে কী? শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত মানুষেরা যারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন, সন্তান জন্ম দিচ্ছেন সবাই ভুল করছেন? নাকি শাকিবের মত বেলাল্লাপনা করে বেড়ালে ঠিক করতেন? নাকি শাকিবের সাথে সম্পর্ক করাটাই ভুল?
'অপু বিশ্বাসের সঙ্গে আমার সম্পর্ক একটি আবেগতাড়িত দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।' ঠিক এভাবেই বলেছেন শাকিব খান। এখন তাদের ছেলে আব্রাহাম কি নিজেকে আবেগতাড়িত দুর্ঘটনা ফসল ভেবেই বেঁচে থাকবে আজীবন? ব্যাপারটা তো এমন না যে, শাকিব খান প্রথম কলার খোসায় পা পিছলে অপু বিশ্বাসকে লুকিয়ে বিয়ে করেছেন। এবং দ্বিতীয় কলার খোসায় পা পিছলে সন্তান আব্রাহামকে জন্ম দিয়েছেন। আহারে বেচারার আবেগতাড়িত দুর্ঘটনা।
এবারের সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, মিডিয়ার কাউকে বিয়ে করবেন না। মিডিয়া যদি এতোই খারাপ হয় তাহলে তিনি নিজে মিডিয়াতে কী করছেন? তিনি আরও বলেছেন- ‘পরহেজগার, সংসারী এবং স্বামীভক্ত। সারা দিন কাজ শেষে যখন ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরব তখন আমার স্ত্রী আমার হান্ড্রেড পার্সেন্ট টেককেয়ার করবে, আমার সঙ্গে গল্প করে সব ক্লান্তি দূর করে দেবে।’ মানে উনি বউ চাচ্ছেন, নাকি বুয়া? নিজে রঙঢঙ করে বেড়াবেন, কিন্তু জীবন জীবনসঙ্গী বেছে নেয়ার বেলায় তার লাগবে দুধে ধোয়া তুলসী পাতা। গাছেরটাও খাবেন, তলারটাও কুড়াবেন, তাই না?
তিনি নিজেকে সুপারস্টার দাবী করে বলেন, ‘তার স্টারডম কেউ থামাতে পারবে না। তিনি সুপারস্টার শাকিব খান।’ এই হচ্ছে দেশের সেরা সুপারস্টারের কথার ধরণ। এতদিন যা খুশি তাই করে গেছেন শুধু এই একটা দাপট দেখিয়ে- বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি উনি একাই টিকিয়ে রেখেছেন। আর বাকীসব ঢেউটিন। উনি জনপ্রিয় নায়ক, তাই তাকে কিছু বলা যাবে না। বাহ! জনপ্রিয়তাই হচ্ছে এই জগতের ঠিক-বেঠিক নির্ণয়ের একমাত্র মাপকাঠি? বিখ্যাত হলেই সব দোষ মাফ। চমৎকার।
কত বড় অথর্ব হলে এভাবে নির্লজ্জের মত একের পর সেচ্ছাচারী বক্তব্য দিয়ে যেতে পারেন সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। এই মানুষের আবার লাখ লাখ ভক্ত। ইনিই স্বঘোষিত বাঙলার নবাব। তার কর্মকান্ড দেখে আগে আমরা হেসে উড়িয়ে দিতাম। এখানেই ভুলটা করেছি আমরা। তাকে এই ছাড় দেয়াটাই ঠিক হয়নি। এই বাদরকে লাই দিয়ে আমরা মাথায় তুলেছি। এখন আমাদের মাথার ওপর বসেই বিষ্ঠার বাহার সাজিয়ে বসেছেন।
তিনি তো কোনও শিশু নন। ২১ বছরের ফিল্ম ক্যারিয়ার যার, তার তো কোথায় কিভাবে কথা বলতে হবে সেটা বোঝার ক্ষমতা থাকা উচিত। প্রতিটা ইন্টারভিউতেই কান্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা বলেন শাকিব খান। সময় এসেছে তার মুখে লাগাম টানার। এভাবে চলতে থাকলে, নিজের সাথে বাঙলা সিনেমাকেও ডোবাবেন। এতে অবশ্য তার ভক্তকূলের কোনও সমস্যা নেই। ভক্তরা যেমন, তাদের সুপারস্টারও তো তেমন। এ আর নতুন কী!