শাহরুখ খান: নেপোটিজম যাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট

নেপোটিজম নিয়ে খুব চর্চা হচ্ছেই যখন, আমিও তবে কিছু বলি। এই নেপোটিজমের সবচেয়ে বড় ভিক্টিম কে জানেন? আজকে যাকে বলিউড বাদশাহ হিসেবে জানেন, সেই শাহরুখ খান।
নেপোটিজম নিয়ে খুব চর্চা হচ্ছেই যখন, আমিও তবে কিছু বলি। এই নেপোটিজমের সবচেয়ে বড় ভিক্টিম কে জানেন? আজকে যাকে বলিউড বাদশাহ হিসেবে জানেন, সেই শাহরুখ খান। হয়তো এখন খুব হাস্যকর শোনাচ্ছে, কিন্তু ৯০ এর দশকে বলিউড কী পরিমাণ বায়াসড ছিল, তা একটু স্টাডি করলেই বুঝতে পারবেন। আর সেই বলিউডে কোনও ফ্যামিলি ব্যাক-আপ ছাড়া সিরিয়াল থেকে উঠে আসা শাহরুখের জন্য জায়গা করে নেওয়া কত বড় চ্যালেঞ্জিং ছিল, বুঝতেই পারছেন।
কিন্তু কথায় আছে— রাখে আল্লাহ, মারে কে! আর তাই, সমস্ত প্রতিকূল অবস্থাকে পেছনে ফেলে, অন্যের ঝুটা খেয়ে, আজকের বলিউড বাদশাহ এই মানুষটি৷
অন্যের ঝুটা কেন বললাম? প্রথম জীবনে শাহরুখের যতগুলো বড় কাজ আছে, তার মধ্যে মোটামুটি সবই অন্য কোনও না কোনও স্টারের ফিরিয়ে দেওয়া রোল। তার অভিষেকই হয়েছিলো আরমান কোহলির ফিরিয়ে দেওয়া দিওয়ানা মুভির রাজা রোল দিয়ে।
এরপর একে একে ঐ সময়ের স্টার সালমান-আমিরদের ফিরিয়ে দেওয়া বাজিগার, দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে থেকে শুরু করে গত দশকের স্বদেশ, ডার, চাক দে ইন্ডিয়া সবই উনি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন আর প্রত্যেকটা ব্যাটল বাদশাহ'র মতো জিতেছেন।

যখন কোনো বিগস্টার ভয়ে নেগেটিভ রোলে কাজ করতে চাইতো না, রেপুটেশন নষ্ট হবে ভেবে, তখন শাহরুখ একে একে সালমানের ফিরিয়ে দেওয়া বাজিগার, আমিরের ফিরিয়ে দেওয়া ডার, আর অনিল কাপুরের ফিরিয়ে দেওয়া আনজামে অভিনয় করে সবাইকে দেখিয়েছেন- শুধুমাত্র নায়ক সেজে কাজ করতে আমি আসিনি, খলনায়কও আমি, আর তাই আমিই বাদশাহ।
যার সাথে একদিন জুহি চাওলা কাজ করতে চায়নি নাক সিঁটকিয়ে, আজ জুহি তার বেস্ট ফ্রেন্ডদের একজন। যাকে নিয়ে পার্টিতে সালমান খান আর মাধুরি হাসাহাসি করেছিলো, আজ তারাই এই লোকের সবচেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী। এগুলো তো তাও অনেক আগের কথা। এই তো গত দশকেও অ্যাওয়ার্ড গালায় তার স্বদেশ আর বীরজারার পারফরম্যান্স হেরে গিয়েছিলো সাইফ আলীর হাম তুমের কাছে, জুরি বোর্ডে থাকা শর্মিলা ঠাকুরের ইশারায়।
ইনার ওয়ার্ল্ড অব শাহরুখে শাহরুখের একটা কথা খুব কানে বাজে— "একটা সময় ডিপ্রেশন আমার জীবনে গৌরির চেয়েও বেশি জায়গা দখল করে ছিল। রাত জেগে কাঁদতাম আর ভাবতাম, সব ছেড়ে দিবো, দূরে কোথাও চলে যাবো। কিন্তু মুম্বাইয়ের প্রতি টানটা এত গভীর ছিলো যে মুম্বাই ছেড়ে যেতে পারিনি। পরে ভাবলাম, এসেছি যখন, এখানেই বাঁচবো। জীবন তো একটাই।"
আপনি শাহরুখকে অপছন্দ করতে পারেন, ওভার-রেটেড বলতে পারেন, কিন্তু 'জিরো থেকে হিরো হওয়া'র এক্সাম্পল হিসেবে শাহরুখের চেয়ে বেটার কোনো এক্সাম্পল পাবেন না।
শাহরুখ কিন্তু নিজেকে শেষ করে দেয়নি, ব্যাটলগ্রাউন্ড ছেড়েও পালায়নি। আর আজ সে গ্লোবালি বলিউডের সবচেয়ে বড় রিপ্রেজেন্টেটিভ।
ইয়েস, দিস ইজ লাইফ- সরে গেলেন, তো হেরে গেলেন!