স্টার জলসার প্রায় এক যুগের ইতিহাসকে এখন দুইটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। একটি হলো প্রথম পাঁচ-ছয় বছর, যখন বাংলা টেলিভিশনকে দারুণ কিছু অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছিল স্টার জলসা, এবং পরের ছয়-সাত বছর, যখন গুণগতমানের জলাঞ্জলী দিয়ে নিজেকেই হারিয়ে খুঁজছে চ্যানেলটি।

২০০৮ সাল সাম্প্রতিক ইতিহাসের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বছর। বিশ্বব্যাপী 'পরিবর্তন' শব্দটি দারুণ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল সে বছর। পুরনোকে বদলে নতুনের জয়গান গাইছিল বিশ্ব।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হতে চলা বারাক ওবামার নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম প্রধান স্লোগান যেমন ছিল "চেঞ্জ উই ক্যান বিলিভ ইন"। জাপানে শুরু হয়েছিল 'চেঞ্জ' নামের একটি সাড়া জাগানো টিভি সিরিজ, আবার একই বছর মুক্তি পেয়েছিল বিখ্যাত 'ডেথ নোট' ফিল্ম সিরিজের নতুন কিস্তি 'এল: চেঞ্জ দ্য ওয়ার্ল্ড'। আমাদের বাংলাদেশেও 'দিন বদল' শব্দযুগল দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নির্বাচনী ইশতেহারের বদৌলতে।

এদিকে ওই ২০০৮ সালেই যাত্রা শুরু করেছিল স্টার জলসা নামে কলকাতা ভিত্তিক একটি বাংলা টিভি চ্যানেল। স্টার টিভি ও ফক্স ইন্টারন্যাশনাল চ্যানেলস নেটওয়ার্ক কর্তৃক পরিচালিত এই চ্যানেলটি জন্ম নিয়েছিল ৮ সেপ্টেম্বর, এবং একদমই আশ্চর্যের বিষয় নয় যে, চলতি হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে এই চ্যানেলের ব্র্যান্ড স্লোগান ছিল "চলো পাল্টাই"। একই শিরোনামে অসাধারণ একটি থিম সং তৈরি করেছিল তারা, যেখানে সুরে সুরে বলা হয়েছিল,

"চলো পাল্টাই
আজ ডাকছে তোমায় নতুন বাঙালি
চলো বদলাই
হোক পথেই লেখা পথের পাঁচালী..."

স্টার জলসা: চলো পাল্টাই

কী পাল্টানোর কথা বলেছিল স্টার জলসা? নিঃসন্দেহে বাঙালির মানসিকতা। কিংবা অন্যভাবে বলতে গেলে, বাঙালির টিভি দেখার অভ্যাস।

কেননা এর আগে একটা দীর্ঘ সময় ধরে কলকাতার বাংলা বিনোদন-নির্ভর  চ্যানেল মানেই ছিল সেই একঘেয়ে বউ-শ্বাশুড়ি-ননদের দ্বন্দ্ব নিয়ে সিরিয়াল। কিছু ব্যতিক্রমী সিরিয়াল হয়তো ছিল, এবং ছিল সাপ্তাহিক টেলিফিল্ম, নাচ-গান-অভিনয়ের রিয়েলিটি শো ইত্যাদি, কিন্তু সেগুলোর পরিমাণ ছিল নিতান্তই নগণ্য।

ফলে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত ও রুচিবান বাঙালির কাছে নিজ ভাষার টিভি চ্যানেল মানে ছিল নিছকই নাক সিঁটকানোর বস্তু। সারাদিন চার দেয়ালে বন্দি, অনন্যোপায় গৃহবধূরা হয়তো বাধ্য হয়ে ওসব চ্যানেল দেখবে, এর বাইরে আর কেউ নয়; এমনটিই ছিল প্রচলিত অভিমত।

বাঙালির এই মানসিকতাই পাল্টে দিতে চেয়েছিল স্টার জলসা। তারা চেয়েছিল, ওই শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত ও রুচিবান বাঙালি, কিংবা আধুনিকমনা মিলেনিয়াল অডিয়েন্স যেন আগ্রহ ফিরে পায় বাংলা ভাষার বিনোদন-নির্ভর টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতি।

স্টার জলসার এই উদ্দেশ্য, কিংবা পাল্টে দেয়ার স্লোগান মোটেই ফাঁকা বুলি ছিল না। সত্যি সত্যিই বৈচিত্র্যময় সব অনুষ্ঠান দিয়ে তারা সাজিয়ে তুলেছিল তাদের চ্যানেলটিকে।

সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি টিভি দর্শক যেহেতু নারী বা গৃহবধূরা, তাই তাদের মনোরঞ্জনের জন্য বিভিন্ন রকম সিরিয়াল তারা রেখেছিল ঠিকই, যেমন 'বউ কথা কও', 'দুর্গা', 'এখানে আকাশ নীল' ইত্যাদি, কিন্তু সেগুলোর কাহিনী চিরাচরিত বাংলা সিরিয়ালের মতো ছিল না। বরং অনেক নতুনত্ব আনা হয়েছিল কাহিনীতে, যার সাথে দীর্ঘদিন বাঙালি দর্শকের যোগাযোগ ছিল না। ফলে নিখিল-মৌরী, উজান-হিয়া জুটিগুলো যেন বাঙালির ঘরের মানুষে পরিণত হয়েছিল।

'বউ কথা কও' সিরিয়ালের কেন্দ্রীয় চরিত্র মৌরী 

এদিকে একদম তরুণ দর্শকদের জন্য ছিল 'আই লাফ ইউ' এর মতো কমেডি রিয়েলিটি শো। এর বাইরে রুচিশীল, বুদ্ধিজীবী বাঙালির জন্য প্রধানতম আকর্ষণ ছিল গুণী নির্মাতা ঋতুপর্ণ ঘোষের উপস্থাপনায় টক-শো 'ঘোষ অ্যান্ড কোম্পানি'। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে হাজির হয়েছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, জয় গোস্বামী থেকে শুরু করে অপর্ণা সেন, ধৃতিমান চ্যাটার্জি, মাধবী মুখার্জী কিংবা সৌরভ গাঙ্গুলীর মতো নন্দিত তারকারা। আরো এসেছিলেন জিৎ, রাইমা সেন, কোয়েল মল্লিক, নচিকেতা, অভিজিৎ, শ্রেয়া ঘোষালরা।

তবে এ অনুষ্ঠানে এসে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়েছিলেন যিনি, তিনি হলেন মীর। উপস্থাপক ঋতুপর্ণ সে পর্বে মীরের সাথে যে আলাপচারিতা চালিয়েছিলেন, তা বিতর্ক উসকে দিয়েছিল গোটা পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। এমনকি আজও অনেকেই স্মরণ করে প্রয়াত ঋতুপর্ণের সাথে মীরের সেই বিতর্কিত অধ্যায়টিকে। কিন্তু এসব বিতর্কের বাইরেও, ৪২-৪৪ মিনিটের একেকটি পর্বে ঋতুপর্ণ নেহাতই আড্ডার ছলে অতিথিদের সাথে যেসব কথোপকথন নির্মাণ করেছিলেন, তা বাংলা টেলিভিশন ইতিহাসের জন্য এক অমূল্য সম্পদ।

ঋতুপর্ণ ঘোষের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানটির প্রতিটি পর্ব একেকটি অমূল্য সম্পদ   

স্টার জলসা বাংলা টেলিভিশন দর্শকের জন্য বিভিন্ন তারকাবহুল ইভেন্টেরও আয়োজন করতে শুরু করেছিল। যেমন: টেলি সম্মান, স্টার জলসা অ্যাওয়ার্ড, মেগা জলসা, মন মানে না কনসার্ট ইত্যাদি।

এসব অনুষ্ঠানের সুবাদে অল্প দিনের মধ্যেই স্টার জলসা বনে গিয়েছিল বাঙালির প্রিয় টেলিভিশন চ্যানেল। শুধু ভারতই নয়, বাংলাদেশেও গড়ে উঠেছিল এর বিশাল ভক্তশ্রেণী। তাছাড়া মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে স্টার জলসা দেখা যেতে শুরু হওয়ার পর এর জনপ্রিয়তা এতটাই তুঙ্গস্পর্শী হয়ে উঠেছিল যে, স্টার টিভি কর্তৃপক্ষ এটিকে "বিশ্বের এক নম্বর বাংলা বিনোদন চ্যানেল" হিসেবেও অভিহিত করতে শুরু করেছিল।

শুরুর ওই উড়ন্ত সূচনার পরও কয়েক বছর অব্যাহত ছিল স্টার জলসার জয়যাত্রা। তারা শুরু করেছিল 'ওগো বধূ সুন্দরী', 'ভালোবাসা ডট কম', 'বোঝে না সে বোঝে না', 'মা' এর মতো সাড়া জাগানো সব সিরিয়াল। এর মধ্যে 'মা' সিরিয়ালটির সুবাদেই স্টার জলসা সবচেয়ে বেশি আলোচিত হতে শুরু করে।

তবে মানের দিক থেকে স্টার জলসায় প্রচারিত শ্রেষ্ঠ সিরিয়ালটি অবশ্যই 'গানের ওপারে'। ২০১০ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শুরু হয়েছিল এই সিরিয়ালটি, যার মূল ভাবনা ছিল ঋতুপর্ণ ঘোষের। কবিগুরুর প্রতি মিউজিক্যাল ট্রিবিউটের পাশাপাশি গোরা-পুপের মিষ্টি প্রেম কিংবা প্রদীপ্তের সাথে বন্ধুত্বের গল্প হৃদয় ছুঁয়ে গিয়েছিল বাঙালি দর্শকের।

মানের দিক থেকে 'গানের ওপারে' সিরিয়ালটি সবার ওপরে থাকবে

রিয়েলিটি শোর দিক থেকেও স্টার জলসা একটা নবজাগরণের চেষ্টা শুরু করেছিল। একে একে তারা এনেছিল '১০০০ ঘণ্টা', 'কোটি টাকার বাজি', 'কথা ও কাহিনী'-র মতো নতুন ধরনের অনুষ্ঠান। বিশেষত জিতের প্রযোজনা ও কোয়েল মল্লিকের উপস্থাপনায় 'কথা ও কাহিনী'-র মাধ্যমে বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবারের মতো সাধারণ মানুষের সম্পর্কের টানাপোড়েন, উত্থান-পতন ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি উঠে এসেছিল।

সব মিলিয়ে একটা সময় এমন এসেছিল যে স্টার জলসাই হয়ে উঠেছিল বাংলা টেলিভিশন দর্শকের নিত্যসঙ্গী। জি বাংলা, ইটিভি বাংলা, আকাশ বাংলার মতো বাংলা ভাষার চ্যানেলগুলো তো বটেই, এমনকি স্টার প্লাস, জি টিভি, সনি টিভিত মতো হিন্দি ভাষার চ্যানেলগুলোও দর্শক হারাতে শুরু করেছিল স্টার জলসার কাছে। এভাবেই "চলো পাল্টাই" স্লোগানকে বাস্তবতায় রূপ দিতে সক্ষম হয়েছিল স্টার জলসা।

কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, স্টার জলসার শুরুটা যেমন সম্ভাবনাময় ছিল, যেভাবে তারা একটি রুচিশীল দর্শকশ্রেণী গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছিল, বছর কয়েক পরই সে অবস্থান থেকে পতন শুরু হয় তাদের। এর পেছনে দায়ী অবশ্য সম্পূর্ণ রূপে তারা নিজেরাই।

কেননা নতুনত্ব ও পরিবর্তনের জয়গান গাওয়া চ্যানেলটিই যে একসময় শুরু করে একঘেয়েমির প্রচারণা। অনুষ্ঠানের গুণগতমান অপেক্ষা তারা সস্তা লোকপ্রিয়তাকে বেশি গুরুত্ব দিতে থাকে। ফলে নন-ফিকশন বা রিয়েলিটি শোর বদলে তাদের মনোযোগ সবটা অর্পিত হতে থাকে সিরিয়ালেই। এবং সিরিয়ালের ক্ষেত্রেও, দর্শক ধরে রাখার লক্ষ্যে জনপ্রিয় সিরিয়ালগুলোকে অহেতুক টেনে লম্বা করতে থাকে তারা। তাই তো 'মা', 'বোঝে না সে বোঝে না' কিংবা 'ইষ্টি কুটুম' এর মতো সম্ভাবনাময় সিরিয়ালগুলোও শেষ পর্যন্ত তাদের যৌক্তিকতা হারায়।

'বোঝে না সে বোঝে না' সিরিয়ালটি প্রথমে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করলেও পরে এর আবেদন আগের চেয়ে কমে যায়

জনপ্রিয় এই সিরিয়ালগুলোর মূল কাহিনী ফুরিয়ে এলেও জোরপূর্বক অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা থেকেই মূলত স্টার জলসার পতনের শুরু। কেননা এগুলোর মাধ্যমেই ধীরে ধীরে তারা সেই পারিবারিক কলহ, বউ-শ্বাশুড়ির ঝগড়ার মতো অর্বাচীন বিষয়ে ফিরে যায়। তাই কয়েক বছর আগে যে রুচিশীল দর্শক স্টার জলসায় মুগ্ধ হয়েছিল, তারাই মুখ ঘুরিয়ে নিতে শুরু করে। একদিকে চ্যানেলটি টিআরপি হারাতে শুরু করে, অন্যদিকে চালু হয় বারবার একই ধরনের সিরিয়াল নির্মাণের প্রবণতা।

সেই যে ২০১৩-১৪ থেকে মান হারাতে শুরু করে স্টার জলসা, এরপর আর তারা পারেনি শুরুর অবস্থানে ফিরে যেতে। ফলে স্টার জলসার প্রায় এক যুগের ইতিহাসকে এখন দুইটি ভাগে বিভক্ত করা যায়। একটি হলো প্রথম পাঁচ-ছয় বছর, যখন বাংলা টেলিভিশনকে দারুণ কিছু অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছিল স্টার জলসা, এবং পরের ছয়-সাত বছর, যখন গুণগতমানের জলাঞ্জলী দিয়ে নিজেকেই হারিয়ে খুঁজছে চ্যানেলটি।

এই মুহূর্তে স্টার জলসার নাম শুনলে বেশিরভাগ মানুষ বাঁকা হাসিই হাসে। কেননা চ্যানেলটি এখন নিতান্ত কৌতুকেই পরিণত হয়েছে। বিকল্প বিনোদনের মাধ্যম যাদের আয়ত্তে রয়েছে, তারা সাধারণত স্টার জলসা দেখে না। আর যারা এ চ্যানেলটি দেখে, অন্যরা তাদের রুচি নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

কেন একটা সময় স্টার জলসা দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে যেসব বিষয় উঠে আসবে তা হলো: বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য ও নতুনত্ব, অভিনয়শিল্পী হিসেবে একঝাঁক নতুন মুখের আগমন, অভূতপূর্ব সব নন-ফিকশন, রিয়েলিটি শো ইত্যাদি। এসব কারণেই মধ্যবয়স্ক নারীদের বাইরেও তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশ বাংলা ভাষার বিনোদন মাধ্যম স্টার জলসার অনুরাগী হয়ে উঠেছিল।

কিন্তু এক পর্যায়ে অনুরাগটা হুজুগে পরিণত হয়, যখন অনুষ্ঠানগুলোর যৌক্তিকতা ও প্রাসঙ্গিকতা হারানোর সমান্তরালে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বাজার ছেয়ে যেতে শুরু করে ঝিলিক, পাখি, বাহা, কিরণমালাদের নামধারী জামাকাপড়, কসমেটিক্স প্রভৃতিতে। যখন কোনো জিনিসের প্রতি অনুরাগের বদলে হাজির হয় এ জাতীয় হুজুগ, তখন সেটি মানের দিক থেকে যে কতটা অধঃপতিত হয়, তা নিশ্চয়ই আর বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখে না!

আমাদের বাংলাদেশে বছরখানেক আগ পর্যন্তও স্টার জলসা ছিল এক চরম বিরক্তির নাম। এমনকি এদেশে চ্যানেলটির প্রচার বন্ধের জন্য হাইকোর্টে রিট আবেদনও করা হয়েছিল। পরে অবশ্য হাইকোর্ট তা খারিজ করে দেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের পরিচালিত জরিপে দেখা গিয়েছিল, দেশের নারীদের ৬০ শতাংশই ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল স্টার জলসার দর্শক। কিন্তু পুরুষরা আবার এই চ্যানেলটির ঘোর বিরোধী। তাই স্টার জলসা কিংবা জি বাংলার মতো চ্যানেল দেখা নিয়ে ঘরে ঘরে অশান্তি সৃষ্টি হওয়া, কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ প্রসঙ্গে নির্মিত ট্রল-মিমে ছেয়ে যাওয়া ছিল খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। এদিকে পাখি ড্রেস না পেয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় এ চ্যানেলের প্রতি দেশের একশ্রেণীর মানুষের মনে তীব্র বিতৃষ্ণা ও বিরক্তিও জন্মে।

বর্তমান সময়ের কথা যদি জানতে চাওয়া হয়, এখনো বাংলাদেশে, এবং পশ্চিমবঙ্গেও, স্টার জলসার বিশাল মাপের দর্শকশ্রেণী রয়েছে। এমনকি 'শ্রীময়ী'-র মতো দুই-একটি নাটক থেকে নারীরা আত্মপরিচয় ফিরে পাওয়ার অনুপ্রেরণাও পায়। কিন্তু ২০১৪-১৫ সালের দিকে এই চ্যানেলের যে পরিমাণ দর্শক ছিল, বর্তমানে তার চেয়ে অবশ্যই অনেক কম। কেননা হুজুগে দর্শকদের মধ্যেও অনেকে যে এতদিনে উপলব্ধি করে ফেলেছে, স্টার জলসা এখন আর দিন বদলের হাতিয়ার নয়, এটি এখন কেবলই এক দীর্ঘশ্বাসের নাম!


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা