আজকে কেউ একজন যদি ফেসবুকে পোস্ট করে, আমি নতুন একটা স্টার্টআপ করেছি। দুই ঘন্টার মধ্যে তার ইনবক্স ভরে উঠবে বিভিন্ন সার্ভিস আর পোটেনশিয়াল পার্টনারশিপের প্রোপোজালে। কিন্তু...

স্টার্টআপে এক্সপোজার বেশি। হাট্টিমা টিম-টিম করে মাঠে দুটো ডিম পাড়লেই, বিভিন্ন পত্রিকা টেলিভিশনে কাভারেজ পাওয়া যায়। এসবে দোষ নেই। নতুন উদ্যোক্তারা মোটিভেটেড হন। লড়াইটা চালিয়ে নেয়ার সাহস বাড়ে। কিন্তু এই ওভার এক্সপোজার নতুন ছেলেপেলের (ক্ষেত্র বিশেষে অনেক বড় মানুষেরও) মাথা খেয়ে দিচ্ছে। এই কমিউনিউটির বাইরের মানুষ মনে করছে এটা এক আলাদিনের চেরাগ। একটা কিছু করে ঘষা দিলেই কেল্লাফতে। নাম-ধাম-টাকা-পয়সা- সব।

আজকে কেউ একজন যদি ফেসবুকে পোস্ট করে, আমি নতুন একটা স্টার্টআপ করেছি। দুই ঘন্টার মধ্যে তার ইনবক্স ভরে উঠবে বিভিন্ন সার্ভিস আর পোটেনশিয়াল পার্টনারশিপের প্রোপোজালে। কেউ হয়তো তাকে অ্যাপ বানিয়ে দিবে কম পয়সায়, আবার কেউ বা তাকে ফান্ড রেইজিংয়ে হেল্প করবে। কেউ আবার কন্সাল্টেন্সি করে নিবে ইকুইটি। 

প্রথম প্রলোভনে পা দিয়ে হোক বা না দিয়ে, আপনি পরের ধাপে যখন যাবেন, মানে সামান্য কিছু সিড ফান্ড তোলার মতো অবস্থান আপনি করে ফেলেছেন, তখন শুরু হবে ভবিষ্যত একদম শেষ করে দেয়ার খেলা। ধুরন্ধর লোকজন যদি কোনোভাবে বুঝে ফেলে, আপনি আর যাই করেন হালটা ছাড়বেন না, তারা কোনো কিছু না দেখেই আপনার বিপদের সময় পয়সা দিয়ে ২৫+ % ইকুইটি নিয়ে নিবে। তারপর আপনাকে রীতিমত নির্যাতন করা হবে পরের কয়েকটা বছর ধরে।

ভাই, আপনি যদি আমার মতো না জেনে আসেন, ৯৯.৯% সম্ভাবনা হলো, আপনি ধরা খাবেন। সেটা হতে পারে প্রথম মাসেই, হতে পারে প্রথম বছরে কিংবা তারও পরে। 

আপনার অবশ্যই লেখাপড়া থাকতে হবে। প্রচুর পড়তে জানতে হবে। বাপের টাকা থাকতে হবে। বিপদে পড়লে ব্যাকআপ থাকতে হবে। একজন শিক্ষিত কো ফাউন্ডার থাকতে হবে, যে আপনার অভাবগুলো পুরণ করে দিবে। নয়তো আপনি এই জায়গায় আইসেন না ভাই। এটা স্বপ্নের মতো জায়গা না। 

পয়সা কামানোর (সাকসেস পাওয়ার) কোনো শর্টকাট নাই। ঘাম ঝড়বে, হেরে যাবেন, উঠে দাঁড়াবেন... তারপরও যদি খোঁড়াতে খোঁড়াতে দৌড়ানোর সাহস থাকে, তবেই চিন্তা করতে পারেন। 

হ্যালোটাস্ক
হ্যালোটাস্ক আজকে যে অবস্থানে এসেছে, তার পেছনে রয়েছে হার না মেনে নেওয়ার মানসিকতা

আমরা কীভাবে তিন বছর টিকে আছি, সেটা নিয়ে একটা রিসার্চ হতে পারে। তবে সম্ভবত, আমাদের দুইজনেরই হার না মেনে নেওয়ার মানসিকতা। মার খেতে খেতে 'ঘ্যাচড়া' হয়ে যাওয়া। শিক্ষিত কো ফাউন্ডার (আমি না, আমার ভাই), আমার পাগলামি, পারিবারিক এক্স ফ্যাক্টর, একজন ভাল মেন্টর আর সামান্য কিছু লাক... এখনো আমাদের ডিস্ট্র্যাকড করে নাই। 

মনে বিন্দুমাত্র কনফিউশন থাকলেও, এই জায়গায় আসবেন না। প্লিজ। একজন মানুষের স্টার্টআপ বাবলে পা দিয়ে, ধরা খাওয়ার গল্প শুনে রীতিমত নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। যতটা ফেন্সি লাইফ আর ফিউচার আমরা দেখানোর চেষ্টা করি সোশ্যাল মিডিয়াতে, এগুলো দেখে অনেক মানুষ ইনফ্লুয়েন্স হয় এবং বিচার বিবেচনা না করেই ভুল করে বসে।


শেয়ারঃ


এই বিভাগের আরও লেখা