ভ্যাম্পায়ার দম্পতি, সত্যিই যারা একে অপরের রক্ত পান করে!
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
- পড়তে সময় লাগবে মিনিট
সপ্তাহে চারবার তারা একে অপরের রক্ত পান করে থাকেন। আশ্চর্যের ব্যাপার, তারা এটাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যে, এখন নাকি রক্ত না খেলে শরীর দূর্বল লাগে তাদের!
আরজে ত্যাজের একটা ভিডিও অনেক ভাইরাল হয়েছিল, যেখানে দেখা যায় একটা গানের সাথে তিনি নাচানাচি করছেন আর লিপ্সিং করছেন। গানটা কিছুটা অশ্লীল, লাইনগুলো এমন-
ফুল দিও কলি দিও, কাঁটা দিওনা, আস্তে আস্তে চুম্মা দিও, কামড় দিও না..
সেই ভিডিওর সাথে আসলে মূল লেখার সম্পর্ক নেই। কিন্তু, কামড়ের ব্যাপার আছে। 'লাভ এট ফার্স্ট সাইট' বলে একটা কথা আছে, কিন্তু 'লাভ এট ফার্স্ট বাইট (কামড়)' সম্পর্কে কি আপনি শুনেছেন? হ্যাঁ, পৃথিবীতে মানুষের মতোই দেখতে এমন কাপলও আছে যারা আসলে একে অপরকে আর কিছু না দিলেও কামড় দেয়। সেই কাপলের গল্পই বলব। যারা নিজেদের মানুষ না, ভ্যাম্পায়ার বলে দাবি করে।
শুধু দাবি করলেও চলত, তারা যে ভ্যাম্পায়ার এটা প্রমাণের জন্য তারা একে অপরের রক্ত খেয়েও দেখিয়েছে! অদ্ভুত হলেও সত্যি এই কাপল নিজেদের শরীরের রক্ত বিনিময় করে একে অপরের সাথে এবং একজন আরেকজনের রক্ত খায়। তাদের বেশভূষাও বেশ অদ্ভুত। চোখের উপর বলতে গেলে ভ্রু নেই, চোখের মধ্যে চারদিকে কালো কালির শেপ, গায়ে ট্যাটু, হাতের নখগুলো কালো করা, মহিলাটির চোখের পাশ, নাক, ঠোঁট ফুঁড়ে গহনা বসানো। সব মিলিয়ে এই কাপলকে দেখলেই খানিকটা অস্বাভাবিক লাগে।
মহিলাটির নাম লিয়া বেনিংহোফ, পুরুষটির নাম আরো দ্রাবেন। এই যুগলের বসবাস যুক্তরাজ্যের হ্যাভারহিলে। তারা দুইজনই নিজেদের ভ্যাম্পায়ার মনে করেন। তাদের দাবি সপ্তাহে অন্তত চারবার একে অপরের রক্ত পান করেন তারা৷
বেশ কয়েকবছর আগে তাদের পরিচয় ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় ডেটিং সাইট থেকে। প্রথমবারের চুমুতেই লিয়া বুঝতে পারে- এই মানুষটিকেই সে খুঁজছিল এতদিন মনে মনে। লিয়া বলেন, 'যখন সে আমাকে বলে সে ভ্যাম্পায়ার, আমি অবাক হয়েছি। আমি কখনো ধারণা করিনি ভ্যাম্পায়ার আসলেই আছে, কিন্তু আশা করতাম ভ্যাম্পায়ার থাকবে'। তিন সপ্তাহ লিয়া ধুন্ধুমার ডেটিং করেন তার ভ্যাম্পায়ার প্রেমিকের সাথে। তারপর প্রেমিক দ্রাবেন তাকে প্রস্তাব দেন ভ্যাম্পায়ার হয়ে যেতে। লিয়া রাজি হন। লিয়াকে বেশ আয়োজন করেই ভ্যাম্পায়ার বানিয়ে দেন দ্রাবেন। এই নারীকে ভ্যাম্পায়ার বানাতে ভয়ংকর রক্তের উৎসব করে, অনুষ্ঠান করে রক্ত অদলবদল করা হয়। দ্রাবেন লিয়াকে বোঝান, রক্ত অদলবদল করলে, একজন আরেকজনের রক্ত খেলে তারা আরো কাছাকাছি হতে পারবেন, তখন লিয়া রাজি হয়ে যান।
দ্রাবেন তার বাহুর একটা অংশ ক্ষুর দিয়ে কেটে লিয়াকে বলেন, তার রক্ত পান করতে। লিয়া রক্ত খেয়ে তারপর নিজের হাতও কাটেন এবং তাজা রক্ত পান করতে দেন দ্রাবেনকে। এই অদ্ভুত রীতি এখনো তারা পালন করে আসছেন। লিয়ার দাবি, রক্তপানের পর তিনি নিজের মধ্যে অন্যরকম একটা শক্তি, এনার্জি অনুভব করেন। তার নিজের মধ্যে একটা জাদুকরি অনুভূতি হয়। লিয়া এমনও দাবি করেন, যৌনক্রিয়ার চেয়েও রক্তপান তাকে বেশি আকর্ষণ করে, এবং দুইজন এর মাধ্যমে আরো ঘনিষ্ঠতা অনুভব করেন!
সপ্তাহে চারবার তারা রক্ত পান করে থাকেন। আশ্চর্যের ব্যাপার, তারা এটাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যে, এখন নাকি রক্ত না খেলে শরীর দূর্বল দূর্বল লাগে তাদের। রক্তের অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে তারা কখনো কখনো শূকরের রক্তও খান। অনেকে তাদের দেখে নাকি ভয় পায়। কেউ কেউ তাদের এড়িয়ে চলে এই ভেবে যে, যদি তারা কামড় দিয়ে রক্ত খেতে আসে!
তবে লিয়া বলেন, এরকম কোনো অভ্যাস নেই তাদের। রাস্তায় বুড়ো লোক পেলে ধরে গিয়ে কামড়ে রক্ত চুষে নেবেন এই মতলব তাদের মাথায় থাকে না কখনোই। তারা কেবল একে অপরের রক্তই পান করেন, এই টেস্ট তাদের ভাল লাগে। তাই কারো ভয় পাওয়ার কারণ নেই বলে আশ্বাসও দিয়েছেন এই ভ্যাম্পায়ার পত্নী।
কী একটা অবস্থা! রক্তের সম্পর্ক কি তাহলে এমন? গল্প উপন্যাসে ভ্যাম্পায়ারের গল্প টল্প পড়েছি ছোটবেলায়। তাদের বীভৎস রক্তপানের গল্প শুনে গা হিম হয়ে যেত, ভয় টয় করত। ঘৃণাও করত, গা রি রি করে উঠত। সিনেমাতেও এসব দৃশ্য দেখলে চোখ ফিরিয়ে নিতে হতো। আর এখন শুনি, বাস্তবেও কেউ নিজেকে ভ্যাম্পায়ার দাবি করে রক্ত পান করে বেড়াচ্ছে! আসলেই কি তারা ভ্যাম্পায়ার, নাকি স্রেফ বিকৃতমস্তিষ্কের এক প্রেমিক যুগল?
*
প্রিয় পাঠক, চাইলে এগিয়ে চলোতে লিখতে পারেন আপনিও! লেখা পাঠান এই লিংকে ক্লিক করে- আপনিও লিখুন